Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Manipur

কুকি-মেইতেই সংঘর্ষে ১১ হত

মণিপুরের ঘটনা নিয়ে জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে টুইট করেন, রাজ্যে এমন অরাজকতা চলছে যে দুষ্কৃতীরা পুলিশের অস্ত্রাগার থেরে ৪৫৭৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ লক্ষ গুলি লুঠ করেছে।

Manipur.

মণিপুরে কুকি এলাকায় মেইতেইদের হামলা ও পাল্টা হামলায় অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৩ ০৮:২৮
Share: Save:

মণিপুরে কুকি এলাকায় মেইতেইদের হামলা ও পাল্টা হামলায় অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম অন্তত ১০। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয় কাংপোকপি জেলার খামেনলকে। মেইতেইরা খামেনলক, চুল্লোউফাই ও আইগেজাং গ্রামে আক্রমণ চালায়। তিনটি গ্রামের প্রায় সব বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। চলে গুলি। পাল্টা গুলি চালায় কুকিরাও। সেনা সূত্রে দাবি করা হয়, মহিলারা চানু ও তারেতখুল এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে রাখায় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারেনি। আজ ভোরে মেইতেই আক্রমণকারীরা বিশ্রাম নেওয়ার সময় কুকিরা তাদের আক্রমণ করলে ঘটনাস্থলে অন্তত ৯ জন মারা যায়। হাসপাতালে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। এই নিয়ে রাজ্যে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা ১১৬ হল। বেসরকারি মতে অবশ্য সংখ্যাটি অনেক বেশি। বুধবার সন্ধ্যায় ইম্ফলের লাম্ফেলে কুকি মন্ত্রী নেমচা কিপগেনের সরকারি আবাস আক্রমণ করে পুড়িয়ে দেয় মেইতেইরা।

মণিপুরের ঘটনা নিয়ে জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে টুইট করেন, রাজ্যে এমন অরাজকতা চলছে যে দুষ্কৃতীরা পুলিশের অস্ত্রাগার থেরে ৪৫৭৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ লক্ষ গুলি লুঠ করেছে। আসাম রাইফেলসের সেনারা অসহায় হয়ে আটকে থাকছেন, সেনা কপ্টারে তাঁদের খাবার পৌঁছে দিতে হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা ২ নম্বর জাতীয় সড়ক এত দিন ধরে অবরোধ করে রেখে পণ্য ও খাদ্য আসতে দিচ্ছে না। এত দিন পরে কেন্দ্র শান্তির জন্য যা যা পদক্ষেপ করেছে, সবই ব্যর্থ হয়েছে। নরেন্দ্র মোদী এখনও মণিপুর নিয়ে নীরব। মণিপুর নিয়ে একটা বৈঠক করার সময় হল না তাঁর। কংগ্রেসের প্রশ্ন, বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার মণিপুরে কেন শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ? রাজনৈতিক স্বার্থে তাদের বিভাজন নীতির ফলেই কী এই ঘটনা?

এ দিকে ইম্ফলে ৮ জুন বিজেপি বিধায়ক কেবি দেবীর বাড়ি লক্ষ্য করে যে বোমা ছোঁড়া হয়, তা নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। মেইতেইরা দাবি করেছিল কুকিরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। কিন্তু মেইতেই জঙ্গি সংগঠন ইউএনএলএফ-এর একটি বিবৃতি প্রচারিত হয় ১১ জুন। তাতে লেখা ছিল ওই বিস্ফোরণ তাদের ঘটানো। ‘স্বাধীনতা’ যুদ্ধের জন্য জনতার থেকে তোলা ১৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা তারা কেবির স্বামী গোবিন্দর হেফাজতে রেখেছিল। কিন্তু গোবিন্দ এখন সেই টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। জঙ্গিদের হুমকি, ৩০ জুনের মধ্যে ওই টাকা ফেরত না দিলে ফল খারাপ হবে। ওই বিবৃতি তুলে ধরে কুকিরা সরব হওয়ার পরে অন্য একটি বিবৃতি প্রকাশ করে ইউএনএফএফ দাবি করে, তবে তারা বোমা বিস্ফোরণে যুক্ত নয়।

রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিংহ জানান, এখন পর্যন্ত লুঠ হওয়া ১০৪০টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৩৬০১টি গুলি এবং ২৩০টি বোমা উদ্ধার হয়েছে। মণিপুর ছাত্র সংগঠন দাবি করেছে, রাজ্যের এই পরিস্থিতিতে মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও পরীক্ষা নেওয়া চলবে না। চাপ বাড়ছে বীরেন সিংহের উপরেও। তাঁকে শান্তি কমিটিতে রাখায় কুকিরা এই কমিটি বয়কট করেছে। এ বার বিজেপি ও জোট সঙ্গীদের সাত বিধায়ক বুধবার দিল্লি গেলেন। দলীয় সূত্রে খবর, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে মুখ্যমন্ত্রী পদে অন্য কাউকে বসানোর পক্ষে সওয়াল করতে পারেন। ১০ কুকি বিধায়কও দিল্লিতে রয়েছেন। বুধবার শান্তি কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন নাট্যব্যক্তিত্ব রতন থিয়ামও।

সারা অসম মণিপুরি যুব সংগঠন সাংবাদিক সম্মেলন করে বলে, কুকি-মিজো জনজাতির পৃথক প্রশাসনের দাবিকে মিজোরামের শাসক দল এমএনএফ সমর্থন জানিয়ে ঠিক করেনি। তিন দিনের মধ্যে তারা এই সমর্থন প্রত্যাহার করুক। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে বিচ্ছিন্নতাবাদকে সমর্থন করা দুর্ভাগ্যজনক। লড়াই থামাতে তাঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

অন্য বিষয়গুলি:

Manipur Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy