( বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্র মোদী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —গ্রাফিক সনৎ সিংহ।
বাংলার বকেয়া সংক্রান্ত দাবিদাওয়া নিয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে থাকবেন তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। গত শনিবারেই এই খবর দিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। বাস্তবে তেমনই হতে চলেছে। সোমবার তৃণমূল সূত্রের খবর, মমতার সঙ্গে মোদীর কাছে যাবেন ১০ জন সাংসদ। তাঁদের মধ্যে অন্যতম অভিষেক।
অভিষেক ছাড়াও মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতে মমতা নিয়ে যাচ্ছেন সাংসদ শতাব্দী রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, প্রকাশ চিক বরাইকদেরও। বাংলার বকেয়ার দাবিতে আন্দোলনকে দিল্লির রাজপথে পৌঁছে দিয়েছিলেন অভিষেকই। অক্টোবরের গোড়ায় যখন সেই আন্দোলন চলছে, তখন পায়ের সমস্যার কারণে মমতা ছিলেন গৃহবন্দি। যদিও বাড়ি থেকেই প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। গান্ধীজয়ন্তীতে রাজঘাটে ধর্না, পরের দিন যন্তর মন্তরে বিক্ষোভের পর কৃষি ভবন অভিযান, পুলিশি ধরপাকড়— সব মিলিয়ে তৃণমূলের আন্দোলন দিল্লি-সহ জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে প্রত্যাশিত অভিঘাত তৈরি করতে পেরেছিল। দিল্লি থেকে ফিরে টানা পাঁচ দিন রাজভবনের উত্তর গেটের অদূরে ধর্নায় বসেছিলেন অভিষেক। রাজ্যপাল সময় দেওয়ার পর সেই আন্দোলন প্রত্যাহার করে তৃণমূলের সেনাপতি জানিয়েছিলেন, নভেম্বরের গোড়া থেকেই ফের আন্দোলন শুরু হবে।
তবে সেই আন্দোলন অভিষেকের ঘোষিত সময়ে শুরু হয়নি। একই সঙ্গে একাধিক বিষয়ে মমতা-অভিষেক ‘মতদ্বৈত’ প্রকাশ্যে চলে আসে। যা নিয়ে নভেম্বর মাস থেকে আলোড়িত হয়েছে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং সমীকরণ। সেই প্রেক্ষাপটে মমতার সঙ্গেই অভিষেকের দিল্লি পৌঁছনো এবং মোদীর কাছে যাওয়া তৃণমূলের সমীকরণের জন্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। অভিষেক মমতার সঙ্গেই বিমানে দিল্লি গিয়েছেন। দিল্লিতে মমতা উঠেছেন অভিষেকের বাড়িতেই। সোমবার সেখান থেকেই অভিষেকের সঙ্গে একই গাড়িতে তিনি সংসদে যান। সেখানে দলের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। সেখানও উপস্থিত চিলেন অভিষেক, তবে তিনি ওই বৈঠকে কোনও বক্তব্য পেশ করেননি। বুধবার মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের আগে মঙ্গলবার বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকেও একত্রে যোগ দেবেন মমতা-অভিষেক।
উল্লেখ্য, বকেয়া নিয়ে অভিষেক গোড়া থেকেই ‘আগ্রাসী’ আন্দোলনের পক্ষে। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ বাংলার বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিলেন। মমতা তাতে কিছুটা রাশ টেনেছিলেন ওই মঞ্চ থেকেই। দিল্লির আন্দোলন হোক বা কলকাতায় মিছিলের শেষে রাজভবনের সামনে ধর্না— সবটাই ছিল জঙ্গি মেজাজে। আন্দোলনের মেজাজ কী হবে, তা নিয়েও তৃণমূলের মধ্যে বিভাজন ছিল বলে শোনা যায়। তবে শেষ পর্যন্ত অভিষেকের নেতৃত্বে ঠিক হয়, কোনও ‘মিনমিনে’ আন্দোলন হবে না। বলিষ্ঠতার সঙ্গে আন্দোলনে নামতে হবে। এই ধরনের নানা চাপানউতরের মধ্যেই তৃণমূল চলছিল বেশ কিছু দিন ধরে। তা নিয়ে বিরোধী বিজেপি শিবিরের তরফেও সময়ে সময়ে কটাক্ষ করা হয়েছে। তবে তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা শুরু থেকেই বলছিলেন, মূলগত ভাবে মমতা-অভিষেকের কোনও দ্বন্দ্ব নেই। দিল্লি যাওরা আগে পাহাড়ে পারিবারিক বিবাহের অনুষ্ঠানেও যোগ দেন মমতা ও অভিষেক। তার পরেই দু’জনে একইসঙ্গে দিল্লিতে গিয়েছেন। যা থেকে মনে করা হচ্ছে, কোনও ‘শৈত্য’ তৈরি হয়ে থাকলেও তা আর নেই। অন্তত তৃণমূলের অন্দরের খবর তেমনই। যদিও প্রকাশ্যে দলের নেতারা বলছেন, এতে বিস্মিত হওয়ার কী আছে? মমতা দলের সর্বাধিনায়িকা। অভিষেক দলের সেনাপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy