Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

রাজ্যসভায় উদ্বৃত্ত ভোটও নীতীশদের দেবে না বিজেপি

চার রাজ্যের বিধানসভা ভোটে একপ্রস্ত দাপট দেখিয়েছে তাঁর দল। লোকসভার আগে ৭ ফেব্রুয়ারির রাজ্যসভা নির্বাচনেও বিভিন্ন রাজ্যে আর এক দফা শক্তি জাহির করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৪ ১৯:৩৫
Share: Save:

চার রাজ্যের বিধানসভা ভোটে একপ্রস্ত দাপট দেখিয়েছে তাঁর দল। লোকসভার আগে ৭ ফেব্রুয়ারির রাজ্যসভা নির্বাচনেও বিভিন্ন রাজ্যে আর এক দফা শক্তি জাহির করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার টক্করের মহড়া প্রাক্তন জোটসঙ্গী নীতীশ কুমারের সঙ্গেও, যিনি এনডিএ ছেড়েছিলেন মোদীকে বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার জেরে। বস্তুত, তার পর থেকেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর রাজ্যে দুর্বল করার নির্দেশ দিয়েছেন মোদী। রাজ্যসভা নির্বাচনে তাই তাঁদের সোজা হিসেব হাতে উদ্বৃত্ত ভোট থাকলেও তা জেডিইউ-কে নয়।
বিহারে এ বার পাঁচ জন রাজ্যসভা সাংসদের মেয়াদ ফুরোচ্ছে। জেডিইউয়ের শিবানন্দ তিওয়ারি, এন কে সিংহ ও সাবির আলি, বিজেপির সি পি ঠাকুর এবং আরজেডি-র প্রেমচাঁদ গুপ্ত। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর বিহারে আসন বিন্যাস যা দাঁড়িয়েছে, তাতে বিজেপি এ বার একার ক্ষমতাতেই দু’জনকে জিতিয়ে আনতে পারে। প্রত্যেক প্রার্থীর জয়ের জন্য চাই ৪০টি ভোট। এবং তার পরেও বিজেপির হাতে ১১টি ভোট উদ্বৃত্ত থাকবে। একই হিসেবে নীতীশের দলের দুই প্রার্থীর জয় নিশ্চিত। কিন্তু তৃতীয় জনকে জেতাতে হলে অন্য কোনও দলের কাছে হাত পাততেই হবে নীতীশকে। এ দিকে, বিহার বিজেপির সভাপতি মঙ্গল পাণ্ডে আজ সাফ বলেছেন, “আমাদের কাছে উদ্বৃত্ত ভোট থাকলেও তা কোনও অবস্থাতেই জেডিইউ-কে দিতে চাই না।”
দলীয় সূত্রের খবর, এক সময়ে নীতীশের ঘনিষ্ঠ, রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীলকুমার মোদীকে এ বার রাজ্যসভায় এনে জেডিইউ-কে বার্তা দেওয়ার কথা ভাবনা-চিন্তা করছেন অরুণ জেটলিরা। তবে সুষমা স্বরাজের মতো কেউ কেউ ওই নতুন আসনটি থেকে সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে রাজ্যসভায় ফেরানোর পক্ষপাতী। ওই আসনের দৌড়ে রয়েছেন রবীন্দ্র কিশোর সিন্হা, সুরজনন্দন কুশওয়াহার মতো নেতারাও। গোটা বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে আগামিকালই দিল্লি আসছেন বিহার বিজেপির সভাপতি। তবে সব কিছু চূড়ান্ত হবে এ মাসের শেষে, দলের নির্বাচনী বোর্ডের বৈঠকে।
প্রশ্ন হল, জেডিইউ-কে সমর্থন না দিলে বিজেপির বাড়তি ভোটটি কোথায় যাবে? এ ক্ষেত্রে বিজেপির কিছু নেতা লালু প্রসাদের প্রার্থী প্রেমচাঁদ গুপ্তকে সমর্থনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। বিজেপির সমর্থন না পেলে দৌড় থেকে ছিটকে যাবেন প্রেমচাঁদ। সে ক্ষেত্রে তিনি নির্দল হিসেবে দাঁড়ালে তাঁকে সমর্থন করা হবে, নাকি অন্য কোনও নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করা হবে সে সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখবে বিজেপি।
জেডিইউ কী করবে? দলীয় সূত্রের মতে, সাবির আলির ভূমিকায় খুশি নীতীশ। এন কে সিংহকেও হাতছাড়া করতে চাইছেন না তিনি। আবার মাঝেমধ্যে বেফাঁস মন্তব্য করে বসা শিবানন্দ তিওয়ারিকে বাদ দিলে তিনি নীতীশের বিরুদ্ধে ফের সক্রিয় হতে পারেন। ফলে চিন্তা রয়ে যাচ্ছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর। আর লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদী তো সেটাই চাইছেন। যেখানে দলের যা শক্তি রয়েছে, সেখানে অন্য দলের সঙ্গে সমঝোতায় না গিয়ে তা যেন যথাসম্ভব জাহির করা যায়।
যেমন রাজস্থানে তিনটি আসন খালি হচ্ছে। বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে জিতে আসার পর সেখানকার তিনটি আসনই নিজেদের দখলে রাখতে চাইছে বিজেপি। মধ্যপ্রদেশেও শিবরাজ সিংহ চৌহান নিজের শক্তিতে সাংসদদের ফিরিয়ে আনতে চান। মহারাষ্ট্রে একটি আসনে প্রকাশ জাভড়েকরকেই ফিরিয়ে আনা হবে। তবে মনোহর জোশীকে শিবসেনা প্রার্থী করতে চাইলেও বিজেপির তাঁকে জিতিয়ে আনার শক্তি নেই। আজ আবার মহারাষ্ট্রের শরিক নেতা রামদাস আটাওয়ালেকে মধ্যপ্রদেশ থেকে প্রার্থী করার আর্জি নিয়ে বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। এই অবস্থায় শেষ পর্যন্ত মোদীরা কী ভাবে রাজ্যসভার ঘুঁটি সাজান, সপ্তাহখানেকের মধ্যেই তা মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy