মুক্তো একটি মহামূল্যবান রত্ন। এই মুক্তোর জন্মরহস্য কী? মুক্তোর জন্মরহস্য নিয়ে দুটো মত আছে। মুক্তো আমরা প্রধানত ঝিনুকের মধ্যে পেয়ে থাকি। কথিত আছে যে, স্বাতী নক্ষত্রে বৃষ্টির জল ঝিনুকের মধ্যে পড়লে মুক্তোর জন্ম হয়।আবার কিছু ক্ষেত্রে একথাও শোনা যায় যে, স্বাতী নক্ষত্রে বৃষ্টির জল হাতির মাথায় পড়লে গজ মুক্তোর জন্ম হয়। প্রাচীন রত্নতত্ত্ববিদগণ আট প্রকার মুক্তোর কথা বলেছেন: ১। গজমতি, ২। সর্পমণি, ৩। বরাহ, ৪। মীন, ৫। বেণুজ, ৬। শঙ্কজ, ৭। জীমুত ৮। শুক্তি।
এখন উল্লেখিত মুক্তো প্রসঙ্গে জেনে নেওয়া যাক:
গজ মুক্তো: ঐরাবত জাতীয় হস্তির কুম্ভ মধ্যে ও দন্তকোষে ঈষৎ পীতবর্ণের বৃহদাকার মুক্তো পাওয়া যায়। এটা অতি পবিত্র ও দুর্লভ।
সর্পমণি মুক্তো: বাসুকী কুল সম্ভুত সাপের মাথায় নীলবর্ণের গোল মুক্তো জন্মায়। কথিত আছে, পাপীদের দৃষ্টিগোচর হয় না এই মুক্তো।
বরাহ মুক্তো: বন্য বরাহের দন্তমূলে একরকম মুক্তো জন্মায়। এর নাম বরাহ মুক্তো। এটা নীল বর্ণের বড়, খসখসে ও কর্কশ হয়ে থাকে।
মীন মুক্তো: তিমি মাছের মুখে এক প্রকার মুক্তো জন্মায়, এর নাম মীন মুক্তো। আবার এও কথিত আছে, গভীর সমুদ্রে বোয়াল মাছের মতো এক জাতীয় মাছের মাথায় একপ্রকার মুক্তো জন্মায়, এটা মীন মুক্তো। এই মুক্তো একটু বড় ও হালকা হয়ে থাকে। এর ঔজ্জ্বল্য খুব কম হয়।
বেনুজ মুক্তো: বাঁশের ভেতর এক রকম মুক্তো জন্মায়। কেউ কেউ বংশলোচনকেই বেণুজ মুক্তো বলেন। কথিত আছে, বেদমন্ত্র দ্বারা এই মুক্তোকে রক্ষা করতে হয়।
শঙ্খজ মুক্তো: কোনও কোনও সমু্দ্রজাত শঙ্খের গর্ভে পায়রার ডিমের মতো এক রকম মুক্তো জন্মায়, এই মুক্তোর তেমন ঔজ্জ্বল্য নেই। ইংরেজিতে একে কঞ্চ পার্ল বলে।
জীমুত মুক্তো: কথিত আছে, কখনও কখনও আকাশ থেকে নাকি মুক্তো বর্ষণ হয়। একে তাই জীমুত মুক্তো বা মেঘ মুক্তো বলে।
শুক্তি মুক্তো: ঝিনুক জাতীয় এক রকম সমুদ্রজাত প্রাণীর গর্ভ থেকে যে মুক্তো পাওয়া যায় তাকে শুক্তি মুক্তো বলে। ইংরেজিতে একে বলা হয় অয়েস্টার পার্ল।
আরও পড়ুন: সম্পর্কে উষ্ণতার ঝড় তুলতে এই রঙের বিছানার চাদর ব্যবহার করুন
ওপরোক্ত যে আট রকম মুক্তোর কথা আলোচনা করা হল, তার মধ্যে সাতটি মুক্তোরই বর্তমানে দেখা মেলে না। তবে শুক্তিমুক্তো বা ঝিনুকের মধ্যে যে মুক্তো জন্মায় তা বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু তার মূল্য বেশি এবং খুব কম পাওয়া যায়।
বিজ্ঞানের ভাষায় ঝিনুকের মধ্যে যে মুক্তো জন্মায় তার সৃষ্টি হয় ঝিনুকের রস থেকে। অর্থাৎ শুক্তির দেহের মধ্যে কোথাও বেদনাদায়ক কারণ উপস্থিত হলে সে স্থানে প্রদাহ অনুভুত হয় এবং এক প্রকার রস নিঃসৃত হয়ে ওটা জমে যায়। এই লালারসকে ইংরেজিতে পার্ল নেক্রি বলে। আবার অনেকে একে মৌক্তিক রস বলে থাকেন। এই জমে যাওয়া মৌক্তিক রসই শেষে মুক্তোয় পরিণত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy