শনি গ্রহের নাম শুনলেই মানুষ আতঙ্কিত হয়। শনির সাড়েসাতির কথা শুনলে মানুষ আরও আতঙ্কিত হয়। শনির সারেসাতি যে সারে সাত বছরই অশুভ ফল দান করে তা, কিন্তু না। সারেসাতি চলাকালীন অনেক শুভ ফলও প্রাপ্ত হয়। তা অবশ্য নির্ভর করে জন্ম পত্রিকার উপর, রাশি, নক্ষত্র ইত্যাদির উপর।
সাড়েসাতি কী? চন্দ্র রাশির দ্বাদশে, চন্দ্র রাশিতে এবং চন্দ্র রাশির দ্বিতীয়ে শনির অবস্থান কালকে শনির সাড়েসাতি বলে। সারে সাতি কালে শুভ বা অশুভ ফল প্রাপ্ত হয় সর্বাধিক কারণ হল শনি ধীর গতিসম্পন্ন গ্রহ এক এক রাশিতে সর্বাধিক সময়ে অবস্থান করে এই কারণে ফল দানের ক্ষমতাও সর্বাধিক। শনি প্রত্যেক রাশিতে ২ বৎসর ৬ মাস অবস্থান করে।
আরও পড়ুন:
কখন সাড়েসাতির শুভ বা অশুভ কোন প্রভাবই থাকে না?
রাশির দ্বাদশে শনির অবস্থান কালে শুরু হয় সাড়েসাতি, ঠিক সেই সময়ে অর্থাৎ, শনি যখন রাশির দ্বাদশে অবস্থান করে, তখন রাশির তৃতীয়ে বৃহস্পতি অবস্থান করলে সাড়েসাতির অশুভ প্রভাব থেকে মুক্ত থাকবে। প্রভাব মুক্ত থাকবে কেবল মাত্র বৃহস্পতির অবস্থান কালের সময় (কমবেশি এক বৎসর)। তৃতীয়ে বৃহস্পতির পরিবর্তে রাহু বা কেতু অবস্থান করলে (কমবেশি এক বৎসর ছয় মাস) সাড়েসাতির শুভ বা অশুভ প্রভাব পরে না। এই রূপে বৃহস্পতি বা রাহু কেতুর পরিবর্তে অন্য গ্রহের অবস্থানেও এই ফল মেলে (যদিও বৃহস্পতি, রাহু কেতুর তুলনায় খুবই কম সময়)। ব্যতিক্রম কেবল রবি (সূর্য), রবির তৃতীয়ে অবস্থান করলে শনির ফলের ক্ষেত্রে শুভ বা অশুভ কোন রকম প্রভাব দান করে না।
আরও পড়ুন:
শনি গ্রহের নামেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। শনি মারক গ্রহ নহে। শনি অশুভ গ্রহ হলেও শনি ন্যায়বিচারক এবং ন্যায়পরায়ণ গ্রহ। পরম পবিত্র, পরম যোগী, ত্যাগী, পরিশ্রম এবং শৃঙ্খলা শিক্ষা দান কারি গ্রহ। শনির সাড়েসাতি জাতক-জাতিকাদের শুদ্ধ এবং বাস্তববাদী করে তোলে।
জীবনধারার কিছু পরিবর্তন শনির সাড়েসাতির অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তি দিতে বা অশুভত্ব হ্রাস করতে পারে।
সাড়েসাতি চলাকালীন কঠিন পরিশ্রম, সততা অবলম্বন, বয়স্ক মানুষদের সহিত ভাল ব্যবহার এবং সেবা, সাত্বিক খাদ্যাভাস, শুদ্ধ মনে সামর্থ্য অনুযায়ী দান ইতাদি সারেসাতির অশুভ প্রভাব হ্রাস করে।
সাড়েসাতি চলাকালীন শনিবার শনিদেবের পূজা দান। ভগবান শিবের পূজা উপাসনা সাড়েসাতির অশুভ প্রভাব হ্রাস করে।