গত কয়েকশো বছরের সংখ্যাতত্ত্বের চর্চায় ব্যাপক ভাবে এগিয়ে পাশ্চাত্য সংখ্যাতত্ত্ব বা নিউম্যারোলোজি। পাশ্চাত্য সংখ্যাতত্ত্ব মূলত হিব্রু সংখ্যাতত্ত্ব বা সেমেটিক সংখ্যা তত্ত্বের উপর মৌলিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত।
হিন্দু জ্যোতিষ যে গভীরতায় পৌঁছেছে সেই গভীরতায় হিন্দু সংখ্যাতত্ত্ব পৌঁছতে পারেনি। হিন্দু সংখ্যাতত্ত্বে সে রকম কোনও বিখ্যাত বই নেই। বরং ফেং শ্যুই-এর দৌলতে চৈনিক সংখ্যাতত্ত্বে একটা আলাদা আভিজাত্য লক্ষ্য করা যায়। চৈনিক সংখ্যাতত্ত্ব প্রাশ্চাত্য সংখ্যাতত্ত্ব বা নিউম্যারোলোজির থেকে কিছু কিছু অংশে বেশ আলাদা।
নীচে চৈনিক সংখ্যাতত্ত্বের সংক্ষিপ্ত বৈশিষ্টগুলি আলোচনা করা হল:
১) চিনা সংখ্যাগুলি ‘yin’ এবং ‘yang’ এই দর্শনের উপর প্রতিষ্ঠিত, ‘yin’ মানে স্ত্রী, চন্দ্র বা মেঘে ঢাকা বা নেগেটিভ আর ‘yang’ মানে পুং, সূর্য, পজিটিভ। এরা পরস্পর পরস্পরকে ব্যালান্সে রাখে।
২) বিজোড় সংখ্যা, যেমন ১, ৩, ৫, ৭, ৯-কে ‘yang’ বলে।
৩) জোড় সংখ্যা, যেমন ২, ৪, ৬, ৮-কে ‘yin’ বলে।
আরও পড়ুন: নীচের সাতটি স্বপ্ন জানাবে নিকট ভবিষ্যতে আপনি চাকরি পেতে চলেছেন কি না (দ্বিতীয় অংশ)
৪) ফেং শ্যুই বা চিনা মতে পাঁচটি তত্ত্ব আছে। যেমন, জলতত্ত্ব, মৃত্তিকাতত্ত্ব, কাষ্ঠতত্ত্ব, ধাতুতত্ত্ব ও অগ্নিতত্ত্ব।
জলতত্ত্বের প্রতীক= ১, মৃত্তিকাতত্ত্বের প্রতীক= ২, ৮ এবং ৫, কাষ্ঠতত্ত্বের প্রতীক= ৩ এবং ৪, ধাতুতত্ত্বের প্রতীক= ৬ এবং ৭ আর অগ্নিতত্ত্বের প্রতীক= ৯
এ বার ফেং শ্যুই বা চৈনিক মতে বিভিন্ন সংখ্যা সম্বন্ধে কী বলা হচ্ছে তা জানার চেষ্টা করব:
১) এই ১ সংখ্যা চিনা মতে পজিটিভ সংখ্যা, এর মানে ‘একতা’ বা ‘ইউনিটি’। ১-এর মধ্যে ‘yin’ এবং ‘Yang’ মধ্যে সমতা আছে। তাই সংখ্যাটি পূর্ণ। ১-এর মানে সক্রিয়তা, উন্নতি এবং ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আশাবাদী। তবে ১-এর মধ্যে আছে একাকীত্ব ও বিচ্ছিন্নতা।
২) এই ২ সংখ্যা একটি ভাল ধরনের শুভ সংখ্যা যা প্রাশ্চাত্য মতের বিরোধী। চিনা ভাষায় উচ্চারণের উপর ভিত্তি করে সংখ্যার শুভত্ব ও অশুভত্ব নির্ভর করে। চিনা ভাষায় ২-এর উচ্চারণের সময় কানে শুনতে ভাল লাগে, তাই শুভ ভাব বহন করে যার মানে ‘সহজ’, অর্থাৎ সহজে যা পাওয়া যায়। তাই ২ একটি শুভ সংখ্যা।
৩) এই ৩ সংখ্যার ফেং শ্যুই মতে মানে দাঁড়ায় জন্মানো, বৃদ্ধি পাওয়া, যে কোনও সৃষ্টিশীলতা, সূর্যোদয়, দিনের শুরু বা কোনও আরম্ভ। এটিও শুভ সংখ্যা।
৪) চিন দেশে সংখ্যার মধ্যে সব থেকে খারাপ আর ভয়ের যদি কোনও সংখ্যা থাকে তা এই চার সংখ্যা। চিনা ভাষায় উচ্চারণের সময় ৪-এর উচ্চারণ খারাপ শুনতে লাগে। তাই বহু প্রাচীনকাল থেকেই এই সংখ্যাকে ভিলেন হিসেবে চিনারা চিহ্নিত করে আসছে। এই সংখ্যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অমঙ্গলের মতো কিছু, মৃত্যু বা পুনর্জন্ম। তাই চিনে কোনও শুভকাজ, বাড়ির বা গাড়ির নম্বর, সিনেমা হলে কোনও সিট নম্বর ৪, ১৩, ২২, ৩১ এই নম্বরগুলির মধ্যে পড়ে না। একমাত্র ১৩ সংখ্যা বাদে এই ভাবনা হিন্দু সংখ্যাতত্ত্বের ও পাশ্চাত্য সংখ্যাতত্ত্বের বিরোধী।
আরও পড়ুন: কী করে বুঝবেন আপনি প্রথম দেখায় প্রেমে পড়েছেন (দ্বিতীয় পর্ব)
৫) চিনে এই ৫ সংখ্যা না খারাপ না ভাল— কোনওটার মধ্যেই পড়ে না। বলা হয়, এটি নিরপেক্ষ সংখ্যা। এই রকম কোনও আইডিয়োলজি পাশ্চাত্য সংখ্যাতত্ত্বে নেই।
৬) এই ৬-কে ফেং স্যুই মতে উন্নতির সংখ্যা বা দ্বিগুণ সংখ্যা বলা হয়ে থাকে। সম্পদের সংখ্যা, লাভের ও খুব সহজে হয় এমন কাজ ৬ দিয়ে প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
৭) এই ৭ কে চিনে ‘নিশ্চিত’ বোঝাতে ব্যাবহার হয়ে থাকে যা প্রাশ্চাত্যের ভাবের বিরোধী। চিন দেশে ৭ মানে একসঙ্গে বোঝায়, বন্ধুত্ব বোঝায়। প্রাচুর্যের প্রতীক এই সাত। এই সব ভাব প্রশ্চাত্যের সংখ্যাতত্ত্বের সঙ্গে মেলে না।
৮) চিনে সব থেকে শুভ সংখ্যা এই ৮। চিন দেশে কোনও কিছুতে বা কোনও কাজে ৮-কে পাওয়া মানে ভগবানকে পাওয়া। চিন দেশে মনে করা হয়ে থাকে, কোনও খারাপ থেকে ভালতে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ৮ সংখ্যার আছে। তাই কোনও শুভ কাজ, বিয়ে, মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান, কোনও উদ্বোধন, গাড়ির বা বাড়ির নম্বর, সব সময় চেষ্টা করা হয়ে থাকে যেন ৮-এর প্রভাবে হয়।
৯) এই ৯-কে চিন দেশে স্থায়িত্বের সংখ্যা বলা হয়ে থাকে। এটি বিশেষ শুভ সংখ্যা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy