কতটা পরিমাণ নুন রোজ খাওয়া নিরাপদ? ছবি- সংগৃহীত
আপনি কি খাদ্যরসিক? খাবারের স্বাদ ভাল না হলে মুখে ঠিক রোচে না? রান্নায় একটু নুন কম হলেই স্বাদ বাড়াতে পাতে কাঁচা নুন নিয়ে খাওয়ার অভ্যাস আছে? তা হলে কিন্তু এখনই সাবধান হন!
এতেই বাড়ে সমস্যা। আর বাড়ে শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা। নিজের অজান্তেই কমতে থাকে আয়ু। কারণ, অনেকেই জানেন না, নুন কতটা প্রভাব ফেলে রোজের জীবনে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কাঁচা নুন খাওয়ার অভ্যাস সময়ের আগেই মৃত্যুর আশঙ্কা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষকে নিয়ে চালানো হয় এই সমীক্ষা। সমীক্ষায় জানতে চাওয়া হয় রান্না করার পর তাঁরা কতখানি নুন পাতে নেন। জুলাই মাসে ইউরোপীয় হার্ট জার্নালে প্রকাশিত হয় এই সমীক্ষার ফলাফল।
ন’বছর পর গবেষকরা পুনরায় সেই অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এতে দেখা গিয়েছে, যাঁরা বেশি মাত্রায় কাঁচা নুন খান তাঁদের শরীরে একাধিক রোগ বাসা বেঁধেছে। তাই তাঁদের মধ্যে বয়সের আগেই মৃত্যুর ঝুঁকিও বেশি।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের সুপারিশ অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন ২,৩০০ মিলিগ্রামের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু রোজের ডায়েটে ১,৫০০ মিলিগ্রাম নুন রাখা বেশি নিরাপদ। অত্যধিক নুন খাওয়ার অভ্যাস রক্তচাপ বাড়াতে পারে, যার ফলে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক এবং কিডনির রোগও হতে পারে, এমটাই বলেছে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন।
ইউকে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস সুপারিশ অনুযায়ী প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরে রোজ এক চা চামচ সোডিয়াম যাওয়া নিরাপদ, এর বেশি হলেই দেখা দিতে পারে নানা শারীরিক সমস্যা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মতে, রোজকার খাবারে নুনের পরিমাণ কমালে প্রত্যেক বছর প্রায় ২৫ লক্ষ জীবন বাঁচানো সম্ভব। তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রত্যেক বছর ৩০ লক্ষ মানুষ হৃদ্রোগে এবং স্ট্রোক হয়ে মারা যান। নোনতা স্ন্যাক্স, প্রসেস্ড ফুড, চিজের মতো খাবারে কতটা সোডিয়াম থাকা উচিত, তার একটা মাপকাঠি তৈরি করেছে হু। যেমন আলুর চিপ্সের মতো খাবারে প্রতি ১০০ গ্রামে শুধু ৫০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকা বাঞ্ছনীয়। পাই বা পেস্ট্রির ক্ষেত্রে ১২০ মিলিগ্রাম এবং প্রসেস্ড মিটের ক্ষেত্রে ৩৪০ মিলিগ্রাম। সকল খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থাকে এই মাপ মেনে চলার অনুরোধ করেছে হু।
আমেরিকান হেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউট-সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থা এর আগে বহু বার দাবি করেছে, কাঁচা নুন মস্তিষ্কের নিউরোনকেও প্রভাবিত করে। এর প্রভাবে কোলন ক্যানসার ও পাকস্থলীর ক্যানসারের মতো মারণরোগও বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রেও অনেক সময় এই অতিরিক্ত নুন মূল ভূমিকা পালন করে।
নুনের সোডিয়াম যে কেবল কিডনি বা যকৃতের ক্ষতি করে এমনই নয়, ওবেসিটি বা মেদবাহুল্যের জন্যও নুন অনেকটাই দায়ী। এ ছাড়াও অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্যও অতিরিক্ত নুন ভাল নয়, এর প্রভাবে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় যা, তাঁদের অন্তঃস্থ ভ্রূণের উপর প্রভাব ফেলে।
তাই পরিমিত মাত্রায় নুন খান। কাঁচা নুন একেবারেই এড়িয়ে চলুন। প্রক্রিয়াজাত খাবারের রাশ টানুন। রেস্তরাঁর পরিবর্তে বাড়িতে তৈরি খাবার খান, যাতে আপনি নুনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy