Advertisement
০৯ নভেম্বর ২০২৪
Depression and Personal Hygiene

এই গরমেও স্নান করতে ইচ্ছে করছে না! তার সঙ্গে মনখারাপের যোগ নেই তো? কী বলছেন মনোবিদ?

মনখারাপ থাকলে শুধু স্নান কেন, অত্যন্ত সাধারণ যে কাজগুলি আমাদের সকালে ঘুম থেকে উঠেই করতে হয়, সেগুলিও করতে ইচ্ছে করে না।

মনখারাপ থাকলে স্নান করতে ইচ্ছে করে না কেন?

মনখারাপ থাকলে স্নান করতে ইচ্ছে করে না কেন? ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৪ ১০:৫৩
Share: Save:

কারও সঙ্গে কথা বলা দূর! দাঁত মাজা, স্নান, খাওয়া, রান্না কিংবা পড়াশোনা করা— মনখারাপ থাকলে কিছুই করতে ইচ্ছে করে না। মনোবিদ দেবশীলা বসু বলছেন, অবসাদ বা মনখারাপ হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা। কলেজের প্রথম বর্যের ছাত্রী সুলগ্না বলেন, “ঋতুস্রাব চলাকালীন কোনও কারণ ছাড়াই হঠাৎ হঠাৎ মনখারাপ হয়। তখন বিছানা ছেড়ে উঠে ন্যাপকিন বদলাতেও ইচ্ছে করে না।” ঠিক যেমন অফিস যাওয়ার তাড়া থাকলেও বিছানা ছেড়ে উঠে স্নান করতে ইচ্ছে করে না বহুজাতিক সংস্থার কর্মী শ্রীজাতর। তবে দেবশীলার মত, “এই ধরনের উপসর্গ অবসাদের মারাত্মক একটি পর্যায়ে অর্থাৎ সিভিয়র লেভেলে গিয়ে দেখা দেয়। অবসাদ গ্রাস করলে মানুষ সাধারণ কাজ করার ইচ্ছেশক্তি হারিয়ে ফেলেন।”

শুধু স্নান কেন, অত্যন্ত সাধারণ যে কাজগুলি আমাদের সকালে ঘুম থেকে উঠেই করতে হয়, সেগুলি করতেও ইচ্ছে করে না। হয়তো কোনও মতে শরীরটাকে টেনে নিয়ে গিয়েছেন শৌচাগারে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা কমোডের উপর বসেই রয়েছেন। কল খুলে দিয়েছেন, স্নানের জল ভরে বালতি উপচে গেলেও কোনও হুঁশ থাকছে না। অবসাদগ্রস্ত রোগীদের মধ্যে এমন ধরনের উপসর্গ খুবই সাধারণ।

মনখারাপের সঙ্গে স্নানের যোগ কোথায়?

স্নান করতে যাওয়া আগে এবং পরে অনেকগুলি কাজ থাকে। বালতিতে স্নানের জল নেওয়া থেকে গায়ে জল ঢালা, সাবান, শ্যাম্পু-কন্ডিশনার মাখা। আবার, মাথা ধোয়া, তার পর গা মোছা। স্নানঘর থেকে বেরিয়ে কী পরবেন তা ঠিক করা। তার পর ভিজে তোয়ালে শুকোতে দেওয়া কিংবা চুল শুকোনো। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই এত কাজ একসঙ্গে করার মতো ইচ্ছেশক্তি তখন থাকে না। তাই মনখারাপ থাকলে স্নান করার মতো সাধারণ কাজটিও ভীষণ পরিশ্রমের কিংবা কঠিন বলে মনে হয়।

এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় কী?

অবসাদ গ্রাস করলে এই ধরনের স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে ইচ্ছে না-ও করতে পারে। তবে, এই ধরনের উপসর্গ যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ, দীর্ঘ দিন ধরে অপরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাসে নানাবিধ রোগব্যধি বাসা বাঁধতে পারে। তাই সে বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। দেবশীলা বলেন, “অবসাদের মাত্রা যদি কারও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার ইচ্ছেশক্তি কেড়ে নেয়, তাহলে অবশ্যই থেরাপির সাহায্য নিতে হবে।”

মনোবিদেরা নানা রকম থেরাপি নিয়ে কাজ করেন। কার কী ধরনের থেরাপি প্রয়োজন তা নির্ভর করে অবসাদের কারণ এবং মাত্রার উপর। অবসাদের একেবারে প্রথম পর্যায়ে সাধারণত ‘কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি’-র সাহায্য নেওয়া হয়। এই থেরাপিতে রোগীর সঙ্গে কথা বলে, তাঁর মানসিক পরিস্থিতি বা মনখারাপের কারণ বুঝে, তাঁর চিন্তা-ভাবনার ধরন নিয়ে কাজ করা হয়। মনের কোথাও শিকড় ছড়িয়ে থাকা নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনাগুলোকে বদলানোর চেষ্টা করা হয়। তবে, অবসাদের মাত্রা যদি ‘সিভিয়র’ হয়, সে ক্ষেত্রে থেরাপির সঙ্গে মনোরোগ চিকিৎসকেরও সাহায্য নিতে হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE