Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Heart Attack At Young Age

৩০ বছরেই হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ-পুত্রের, কম বয়সে কেন বাড়ছে হৃদ্‌রোগ?

অনিয়ন্ত্রিত আধুনিক জীবনযাপন, অনিয়মই যে হার্ট অ্যাটাকের একমাত্র কারণ, সেটা ধরে নেওয়াও ঠিক নয়। কম বয়সিদের মধ্যে কেন বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি?

What’s behind the rise in Heart Attacks among Young Age.

অল্প বয়সিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ছে কেন? ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৫২
Share: Save:

হার্ট অ্যাটাক হল বেশি বয়সের রোগ— এমনটাই মনে করেন অনেকেই। তবে এই ধারণা যে আসলে ভ্রান্ত, তা আরও এক বার প্রমাণ করে রাজ্যের প্রাক্তনমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর পুত্র বছর তিরিশের হীরকজ্যোতি অধিকারীর অকালমৃত্যু। হীরকজ্যোতি নিজে পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। তা সত্ত্বেও এত কম বয়সে হার্ট অ্যাটাক হয়ে তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্কিত অনেকেই। তিনি দীর্ঘ দিন কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। পাশাপাশি, কার্ডিয়াক রেসপিরেটরি ফেলিয়োর হওয়ায় মৃত্যু হয়েছে।

অল্পবয়সিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা সম্প্রতি বেশ ভয় ধরাচ্ছে। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, ইদানীং ৪০-এর নীচে হার্ট অ্যাটাকের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেরই মত, এই প্রজন্ম অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তার জেরেই বাড়ছে হৃদ্‌যন্ত্রের জটিলতা। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণাও তেমনই ইঙ্গিত করছে। অনিয়ন্ত্রিত আধুনিক জীবনযাপন, অনিয়মই যে হার্ট অ্যাটাকের একমাত্র কারণ, সেটা ধরে নেওয়াও ঠিক নয়। কমবয়সিদের মধ্যে কেন বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি? হার্টের চিকিৎসক তাপস রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘অল্প বয়সে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ইদানীং প্রকাশ্যে আসছে বেশি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আগে এমন হত না। সংখ্যায় কম হলেও, কম বয়সে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর উদাহরণ কম নেই। তবে এখন মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা সহজ বলে একটা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। পাশাপাশি এড়িয়ে গেলে চলবে না যে, অল্পবয়সিদের মধ্যে হার্টের ব্লকেজ আসছে।’’ কী কারণ থাকতে পারে এর নেপথ্যে? চিকিৎসক বলেন, ‘‘বাবা-মায়ের ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে ৪০-এর পর থেকেই সন্তানদের মধ্যে হার্টের ব্লকেজের একটা আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে শুধু বংশগত কারণে যে হার্টের সমস্যা দেখা দেয়, তা কিন্তু নয়। বাইরের খাবার খাওয়ার প্রবণতা, অত্যধিক ধূমপানের অভ্যাসও কিন্তু মারাত্বক ভাবে হার্টের উপর প্রভাব ফেলছে।’’ আর মদ্যপান? তিনি বলেন, ‘‘মদ্যপান তো শরীরের জন্য অস্বাস্থ্যকর বটেই। তবে অ্যালকোহল হার্ট অ্যাটাকের প্রত্যক্ষ কারণ নয়। রক্তনালি সঙ্কুচিত হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু অ্যালকোহল রক্তনালি প্রসারিত করে। ফলে পরিমিত মদ্যপান করলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কম। তবে তার মানে এই নয় যে, হার্ট ভাল রাখতে রোজ মদ্যপান করতে হবে।’’ মানসিক অবসাদ কি কোনও ভাবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে? চিকিৎসকের কথায়, ‘‘অনেকেরই ধারণা, উদ্বেগ হল হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ। উদ্বেগ হার্টকে জখম করে ঠিকই। কর্মক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার দৌড় উদ্বেগের জন্ম দেয়। অফিসে গিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করার চাপ, সহকর্মীকে কাজের পরিসরে পিছনে ফেলে দেওয়ার প্রবণতায় হার্টের উপর চাপ পড়ে। হৃদ্‌স্পন্দনের হার বেড়ে যায়। তবে এটা ঠিক যে, প্রত্যক্ষ ভাবে না হলেও পরোক্ষ ভাবে, হার্ট অ্যাটাকের নেপথ্যে উদ্বেগ একটা কারণ। তা ছাড়া, জিমে গিয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনাও ঘটে প্রচুর। পুজোর মাসখানেক আগে জিমে গিয়ে পছন্দমতো চেহারা তৈরির যে তাগিদ দেখা যায়, সারা বছর সেই শরীরচর্চা বজায় রাখলে সুস্থ থাকে হার্ট। সঠিক প্রশিক্ষণ এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অত্যধিক শরীরচর্চাও কিন্তু হার্টের উপর প্রভাব ফেলে।’’

হার্ট অ্যাটাক মানেই তা ব্লকেজ থেকে হচ্ছে, এই ধারণা সব সময় সঠিক নয়। তেমনটাই বলছেন চিকিৎসকেরা। সব হার্ট অ্যাটাক ব্লকেজ থেকে হয় না। কমবয়সিদের মধ্যে ব্লকেজের কারণে হার্ট অ্যাটাকের হার ২০-৩০ শতাংশ। বাকি সবটাই হল ‘মায়োকার্ডাইটিস’। যা ভাইরাল সংক্রমণের কারণে হয়। ফ্লু কিংবা জ্বর-সর্দি-কাশি হলে শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলা জরুরি। বিশেষ করে জিমে গিয়ে শরীরচর্চা এই সময় না করাই শ্রেয়। কারণ, ভাইরাস যখন সারা শরীরে থাকে, তখন হার্ট সঙ্কুচিত হয়ে থাকে। সেই সময়ে শরীরের উপর অত্যধিক চাপ হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy