চিয়া বীজ খেলে ওজন কমে। চিয়া বীজে ত্বকে জেল্লা আসে। চিয়া বীজ চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। চিয়া বীজের এমন হরেক উপকারিতার কথা মাঝেমধ্যেই ভেসে ওঠে সমাজমাধ্যমে। সম্প্রতি এক পেটের চিকিৎসক জানালেন, টানা দু’সপ্তাহ প্রতি দিন এক চামচ করে চিয়াবীজ খেলে হজম সংক্রান্ত সমস্যা থেকেও মুক্তিলাভ হবে!
কী ভাবে?
সৌরভ শেট্টি নামে এক গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজিস্ট, যিনি সানফ্রান্সিসকোয় কর্মরত এবং আমেরিকান সোসাইটি ফর গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল এন্ডোস্কোপির অনুমোদিত চিকিৎসক, একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিয়োয় এ ব্যাপারে নিজের মতামত জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘চিয়া বীজ পেটের স্বাস্থ্যর জন্য উপকারী। গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজিস্ট হিসাবে আমি প্রায়শই আমার রোগীদের চিয়া বীজ খেতে বলি। যদি টানা দু’সপ্তাহ এক চামচ করে চিয়া বীজ খান, তবে আপনার হজমক্ষমতা আগের থেকে অনেক গুণ ভাল হয়ে যাবে।’’ কী ভাবে চিয়াবীজ হজমক্ষমতা বৃদ্ধি করবে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন চিকিৎসক শেট্টি।

১। চিয়া বীজে আছে জলে মিশে যেতে পারে এমন ফাইবার, যা হজমে সাহায্য করে। পাশাপাশি, কোষ্ঠের সমস্যা দূর করে পেট পরিষ্কার রাখে।
২। চিয়া বীজে থাকা ফাইবার হজমে সাহায্যকারী ভাল ব্যাকটেরিয়ার শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে পেটের জন্য প্রিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে চিয়া বীজ।
৩। চিয়া বীজ নিজের ওজনের ১০ গুণ বেশি জল ধারণ করে এক ধরনের জেল তৈরি করে। আর এই জেল শরীরের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্ট, অর্থাৎ মুখগহ্বর থেকে পায়ুদ্বার পর্যন্ত বিস্তৃত যে নালিপথ, তাকে আর্দ্র রাখে।
৪। জলে মিশে যাওয়া ফাইবার খাবার থেকে শর্করার শোষণের মাত্রা মন্থর করে দেয়। ফলে খাওয়ার পরে হঠাৎ রক্তে শর্করা বৃদ্ধির ঝুঁকি কমে। হজমের সমস্যা হয় না।
চিকিৎসকের দাবি কতটা ঠিক?
গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজিস্টের সঙ্গে সহমত পুষ্টিবিদ নিশা মণ্ডল। গুরুগ্রামের এক বেসরকারি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ নিশা বলছেন। টানা দু’সপ্তাহ রোজ এক টেবিল চামচ করে চিয়া বীজ জলে ভিজিয়ে খেলে হজমের সমস্যা তো মিটবেই, তা ছাড়াও আরও নানা উপকার মিলবে।

১। উদ্যম
চিয়া বীজ শক্তিক্ষয়ের হার কমায়। ফলে দিনের শেষে ক্লান্তি বোধ আসে দেরিতে। শরীরকে দীর্ঘ ক্ষণ সক্রিয় রেখে কাজ করার শক্তি জোগায়। চিয়া বীজে থাকা প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর স্নেহপদার্থ কাজ করার ক্ষমতা জোগাতেও সাহায্য করে।
২। আর্দ্রতা
গ্রীষ্মে শরীরকে দীর্ঘ ক্ষণ আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে চিয়া বীজ। অতিরিক্ত গরমে ডিহাইড্রেশনের সমস্যাও রাখে দূরে।
৩। ওজন কমায়
যেহেতু চিয়া বীজ পাকস্থলীতে যাওয়ার পরে আরও বেশি ফোলে, তাতে খিদে কম পায়, যা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক।
৪। হার্টের স্বাস্থ্য
চিয়ার বীজে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। নিয়মিত খেলে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমাতে সাহায্য করে।
৫। ত্বক এবং চুল
চিয়া বীজে থাকা অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস ত্বক এবং চুল ভাল রাখে। পাশাপাশি, আর্দ্রতা বজায় রেখে চুলে ঝলমলে ভাব আনে। ত্বকেও বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না।