মূলত দুটি পদ্ধতিতে লেজ়ার ট্রিটমেন্ট করানো হয়, অ্যাবলেটিভ এবং নন-অ্যাবলেটিভ। ছবি: শাটারস্টক।
বছর দুয়েক আগে প্রেমিকের নামে ট্যাটু করিয়েছিল সোহিনী। তবে এখন সেই সম্পর্ক অতীত। ট্যাটু তুলতে লেজ়ার ছাড়া উপায় নেই!
মুখে অতিরিক্ত লোমের জ্বালায় ঘন ঘন সালোঁয় যেতে যেতে বিরক্ত সুতপা! পাকাপাকি ভাবে লোম তুলে দিতে লেজ়ার ট্রিটমেন্ট করানোর কথা ভাবছেন তিনি!
রূপচর্চায় যখন ঘরোয়া সমাধান আর বাজারচলতি প্রসাধনী সামগ্রী খুব বেশি একটা কাজে দেয় না তখন নিতে হয় ভিন্ন ব্যবস্থা। আর বিকল্প ভাবনা ভাবতে গেলে প্রথমেই আসে লেজ়ার ট্রিটমেন্টের কথা। সৌন্দর্যায়নের ক্ষেত্রে এক ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে লেজ়ার ট্রিটমেন্ট। মূলত এটি এক ধরনের ক্লিনিক্যাল ট্রিটমেন্ট। এই চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে স্কিন লিফটিং, টাইটেনিং, অবাঞ্ছিত লোম দূর করা, জন্মদাগ দূর করা, স্ট্রেচমার্ক দূর করা, ত্বক মসৃণ করা— সবই করা সম্ভব। কাটাছেঁড়া ও ব্যথা ছাড়াই কৃত্রিম ভাবে সুন্দর হওয়ার এই পদ্ধতির গ্রহণযোগ্যতা দিনকে দিন বেড়েই চলছে।
লেজ়ার ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে মূলত নতুন ত্বক প্রতিস্থাপন করা হয়ে থাকে। লেজ়ার দিয়ে মূলত ত্বকে সরাসরি তাপ দেওয়া হয়। লেজ়ারের রশ্মি ত্বকের উপরের স্তর ধ্বংস করে ফেলে। একই সঙ্গে, এটি ত্বকের ভেতরের স্তরটিকে উত্তপ্ত করে তোলে। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে কোলাজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং স্কিনটোন ও টেক্সচার ভাল হয়।
মূলত দুটি পদ্ধতিতে লেজ়ার ট্রিটমেন্ট করানো হয়, অ্যাবলেটিভ এবং নন-অ্যাবলেটিভ। চর্মরোগ চিকিৎসকরাই আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী আপনাকে পরামর্শ দিতে পারেন যে ঠিক কোন উপায়টি আপনার জন্য প্রযোজ্য। অ্যাবলেটিভ লেজ়ারে স্কারস, মোল, ফাইন লাইনস এবং রিঙ্কেলস দূর করা হয়। অ্যাবলেটিভ লেজ়ার ত্বকের বাইরের স্তরটিকে সরিয়ে দেয়। নন-অ্যাবলেটিভ লেজারের ক্ষেত্রে ত্বকের উপরিভাগের কোনও ক্ষতি হয় না। এই পদ্ধতিতে ত্বকের নিম্নভাগের টিস্যু গরম করে কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। রোসেসিয়া, ব্রণ-সম্পর্কিত সমস্যায় নন-অ্যাবলেটিভ লেজ়ার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
লেজ়ার ট্রিটমেন্ট একটি খরচসাপেক্ষ প্রক্রিয়া! যেমন ধরুন, সারা শরীরের লোম তুলতে মোট ছ’টা সেশনের খরচ পড়বে ৪৫,০০০ থেকে ১, ৫০,০০০ টাকা। চিকিৎসাকেন্দ্র অনুযায়ী খরচ ওঠানামা করে।
লেজ়র ট্রিটমেন্টের কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে?
শহরে বেশ কিছু বিউটি পার্লারে কোনও প্রশিক্ষণ ছাড়াই লেজ়ার ট্রিটমেন্ট করা হচ্ছে। যার জেরে নিত্যদিন বাড়ছে ভুক্তভোগীর সংখ্যাও। চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের চিকিৎসক সৌরদীপ গুপ্তের মতে, ‘‘অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণহীন কারও হাতে লেজ়ার ট্রিটমেন্টে মুখের ব্রণ সারাতে গিয়ে কিংবা লোম তুলতে গিয়ে অনেকের ত্বক পুড়ে যেতে পারে। ত্বকের সেই নির্দিষ্ট অংশটি বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া ত্বকে দীর্ঘ দিন ধরে লালচে ভাব দেখা দিতে পারে।’’
কী কী বিষয় মাথায় রাখতে হবে?
সব চিকিৎসা পদ্ধতিতেই কমবেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। সৌরদীপ বলেন, ‘‘লেজ়ার করানোর আগে বেশ কিছু বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। যে জায়গা থেকে ট্রিটমেন্ট করাচ্ছেন সেটি ঠিকঠাক কি না, সেখানকার কুলিং সিস্টেম ঠিকঠাক কি না, চিকিৎসক করছেন, না কি কোনও টেকনিশিয়ান করছেন সেই বিষয়গুলি নজরে রাখতে হবে। যেখানে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি খোলসা করে বলা হবে, কেবল ভাল দিকগুলি প্রচার করা হবে না— এমন জায়গাই বেছে নিন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy