পরোক্ষ ধূমপানের সময়ে নিজে ধূমপান না করলেও অন্যের ধূমপানের ধোঁয়া মানুষের শরীরে ঢোকে। ছবি: শাটারস্টক।
ধূমপান করলে কী কী ক্ষতি হয়, সে কথা বেশির ভাগ মানুষেরই জানা। জেনেবুঝেও সেই আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন না তাঁরা। কিন্তু যাঁরা পরোক্ষ ভাবে ধূমপান করেন, তাঁদের ক্ষতি কতটা— সেটি অনেকেরই অজানা। যাঁরা ধূমপান করেন না, তাঁরাও যে ধূমপানের ক্ষতিকর দিক থেকে রেহাই পাচ্ছেন, এমনটা কিন্তু নয়। বিভিন্ন গবেষণা জানা গিয়েছে পরোক্ষ ধূমপান এবং সরাসরি ধূমপানে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সমান। এরই মধ্যে হালে উঠে এসেছে আরও একটি বিষয়— তৃতীয় স্তরের ধূমপান বা ‘থার্ড হ্যান্ড স্মোকিং’। এই ধূমপানে ক্ষতির পরিমাণ নাকি পরোক্ষ ধূমপানের চেয়েও বেশি।
তৃতীয় স্তরের ধূমপান আদতে কী?
বদ্ধ ঘর বা গাড়ির মধ্যে ধূমপান করলে, সেই বাতাসে মিশে যায় ধূমপানের ফলে তৈরি হওয়া নানা রাসায়নিক। যা বাতাসে ভেসে থাকা ধূলিকণা, দূষিত পদার্থের সঙ্গে বিক্রিয়া করে আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। ধরুন, কেউ ঘরে বসে ধূমপান করে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছেন। সেই ঘরে পরবর্তী সময়ে অন্য কেউ ঢুকলে, তিনি হয়তো খালি চোখে ধোঁয়া দেখতে পান না, কিন্তু ধূমপানের ফলে তৈরি হওয়া ক্ষতিকারক রাসায়নিক তাঁর শরীরে ঢুকতে থাকে। ঘরের দেওয়াল, কার্পেট, সোফা, মেঝে, আসবাবপত্রের উপর নিকোটিনের আস্তরণ তৈরি হয়। বাতাসে অন্যান্য দূষিত কণার সঙ্গে মিশে গিয়ে সেই নিকোটিনের আস্তরণ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে শরীরের উপর। একেই বলা হচ্ছে তৃতীয় স্তরের ধূমপান।
পরোক্ষ ধূমপানের সময়ে নিজে ধূমপান না করলেও অন্যের ধূমপানের ধোঁয়া মানুষের শরীরে ঢোকে। ধূমপায়ীর যা যা ক্ষতি হয়, পরোক্ষ ধূমপানেও তার সমপরিমাণ ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু তৃতীয় স্তরের ধূমপানে ক্ষতি বেশি হতে পারে। এমনই আশঙ্কার কথা বলছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ ধূমপানের ধোঁয়ার চাইতে বিক্রিয়ার ফলে তৈরি হওয়া ভাসমান কণাগুলি আরও ক্ষতিকারক বলে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা। তৃতীয় স্তরের ধূমপান ক্যানসার, হৃদ্রোগের মতো অসুখের আশঙ্কা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, বাড়িতে শিশু, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা বা ধূমপায়ী নন এমন সদস্য থাকলে, যে সব ঘরে তাঁদের যাতায়াত, সেখানে ধূমপান করবেন না। খোলা জায়গায় ধূমপান করুন। তাঁদের বিপদের আশঙ্কা আরও বেশি। হাঁপানি, কানের সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy