হরমোন নিয়ে আলোচনায় সকলের আগে আসবে ইনসুলিন। কারণ আমাদের রাজ্য তথা দেশে ডায়াবিটিস রোগীর সংখ্যা কম নয়। তাঁদের অনেকেই ইনসুলিনের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু পুষ্টিবিদ কোয়েল পালচৌধুরী বলছেন, “ডায়াবিটিস রোগীদের শরীরে ইনসুলিন রেজ়িস্ট্যান্স কতটা তৈরি হয়েছে, তা আগে দেখা জরুরি। মনে রাখতে হবে, মধুমেহ রোগে প্রথমেই ওষুধ শুরু হয় না। প্রথমে খাদ্যতালিকায় বদল এনে রক্তে গ্লুকোজ়ের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এমন অনেক রোগী আছেন, যাঁরা কেবল খাদ্যতালিকায় বদল এনেই ব্লাড গ্লুকোজ় লেভেল কমাতে পেরেছেন। তবে এর জন্য কী খাবেন আর কখন খাবেন... তা গুরুত্বপূর্ণ।”
ইনসুলিন ম্যানেজমেন্ট জরুরি
কোয়েল বলছেন যে, একদিনের ফাস্টিং, পিপি দিয়ে গ্লুকোজ় লেভেল বোঝা যায় না। তাই এইচবিএওয়ানসি করতে দেওয়া হয়। “তা ছাড়া বিভিন্ন রকমের ইনসুলিন আছে। কিছু ইনসুলিন রাতে দিতে হয়, যেমন লং অ্যাক্টিং ইনসুলিন। আবার মিক্সড ইনসুলিন হয়, যেটা খাবার খাওয়ার ১৫ মিনিট আগে দেওয়া হয়। এটাই সাধারণত রোগীকে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও র্যাপিড অ্যাক্টিং, ইন্টারমিডিয়েট অ্যাক্টিং ইনসুলিন আছে। তাই ইনসুলিন ম্যানেজমেন্টটাও জানতে হবে। কারণ রোগী যদি ইনসুলিন নেন, তা হলে ঠিক পরিমাণ মতো খাবার খেতে হবে। সেটা কমানো যাবে না। মনে রাখতে হবে, ব্লাড গ্লুকোজ় লেভেল বেড়ে গেলে তা ওষুধ ও চিকিৎসার মাধ্যমে কমানো যায়। কিন্তু হুট করে সেই লেভেল কমে গেলে সমূহ বিপদ,” সাবধান করলেন কোয়েল।
৪০-৫০ বছর বয়সে কারও যদি ডায়াবিটিস ধরা পড়ে, বুঝতে হবে তাঁর শরীরে আরও আগেই ইনসুলিন রেজ়িস্ট্যান্স তৈরি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সাবধান। কে কতটা ইনসুলিন নিচ্ছেন, তার উপরে নির্ভর করে শর্করা, প্রোটিনের পরিমাণ ধার্য করে খাদ্যতালিকা তৈরি করেন পুষ্টিবিদরা। তার সঙ্গে সেই রোগীর উচ্চতা, ওজন ইত্যাদি দিকও মাথায় রাখতে হবে। তাই কোনও একটা ডায়েট সকল রোগীর জন্য ঠিক নয়। তাই পুষ্টিবিদের পরামর্শ মতো ডায়েট মেনে চলুন।
আবার কারও ইনসুলিন বাড়বে না কমবে, তা নির্ভর করে কার্ব কাউন্টিংয়ের উপরে। আর সেই পদ্ধতিটা খুব সহজ নয় বা সকলের জন্য এক নয়। এই ক্যালরির হিসেব ব্যক্তিবিশেষে পাল্টে যায়। তাই সে ক্ষেত্রেও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া কাম্য। ইনসুলিন স্পাইকের উপরে নির্ভর করে খাদ্যতালিকা তৈরি করে দেন পুষ্টিবিদরা।
এ ছাড়া নিয়াসিন, ভিটামিন সি, ই, কে, এ, সেলেনিয়াম ইত্যাদি ভিটামিনস ও মিনারেলস আমাদের শরীরে ইনসুলিন নিঃসরণে সহায়ক। এগুলো মাছ, ডিম ইত্যাদি প্রোটিন জাতীয় খাবার ও নানা রকম আনাজপাতি, ফলে পাওয়া যায়। তাই খাদ্যতালিকায় এই ধরনের খাবার রাখতে হবে।
মেনোপজ়ের সময়ে
মহিলাদের ক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৫০-এর মধ্যে হরমোনাল ইমব্যালান্স হতে দেখা যায়। মেনোপজ় বা পেরিমেনোপজ়াল সময় থেকেই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে দেখা যায়। এ সময়ে ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। তখন অনেকেরই হরমোন থেরাপি চলে। এ সময়ে মুড সুয়িং ও অবসাদ দেখা দিতে পারে। তাই প্রাণায়াম, যোগব্যায়ামের পাশাপাশি মুড এলিভেটিং খাবার অর্থাৎ আমন্ড, ডার্ক চকলেট, পালং শাক, টক দই, বেরি, কলা খুব ভাল কাজে দেয়। এ ছাড়া নানা রকম ডাল, মাছ, টক দই, স্কিমড মিল্ক, বাদাম ও নানা রকম সিডস রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়। এতে শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়াম, প্রোটিন, ফাইবার, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের জোগান বজায় থাকবে।
এই বয়সের পুরুষদের মধ্যেও টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে দেখা যায়। তাঁদের যৌন চাহিদা কমে আসে। ফলে সম্পর্ক স্থাপনে অনীহা দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে ডার্ক চকলেট, অয়েস্টার, অ্যাসপারাগাস, রসুন, পাম্পকিন সিডস খাদ্যতালিকায় রাখলে উপকার পাবেন।
তবে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ শুরু করা বা হরমোন থেরাপির দরকার পড়তে পারে। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy