Advertisement
০৪ জুলাই ২০২৪
Waterborne Disease

বর্ষায় জলবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে, ঘরে-ঘরে ডায়েরিয়া, কী কী নিয়ম মানলে সুস্থ থাকবেন?

পেট খারাপ, বমি লেগেই আছে। বর্ষায়ে সংক্রামক বিভিন্ন রোগজীবাণুর প্রকোপ বাড়ে। ফলে অসুখবিসুখও বাড়তে থাকে। তাই সাবধান থাকা প্রয়োজন।

Tips to protect yourself from water-related diseases in this Monsoon season

বর্ষায় বিভিন্ন রকম রোগ-ব্যাধির প্রকোপ বাড়ে। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪ ১৮:০৫
Share: Save:

এত দিন পর বঙ্গে বর্ষা এল। কিন্তু তার সঙ্গে সময়ের নিয়ম মেনেই আসে রোগ-ব্যাধির প্রকোপ। জলবাহিত রোগ থেকে বাঁচবেন কী ভাবে?

আপনার বাড়িতে জলের ট্যাঙ্ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন তো? বৃষ্টির সময় শুরু হয়ে গিয়েছে। এই সময়ে জলবাহিত অসুখবিসুখের প্রকোপ বাড়বে। বৃষ্টির জমা জল, পুকুর-নালার দূষিত জল থেকে আন্ত্রিক, ডায়েরিয়ার মতো রোগও ছড়াচ্ছে। পেট খারাপ, বমির সমস্যায় ভুগছেন অনেকে। ডিহাইড্রেশনও ভোগাচ্ছে। জল সত্যিই পরিস্রুত কিনা, তা জানার জন্য যে নিয়মিত ও নিরন্তর তদারকি প্রয়োজন, তা সচরাচর করা হয় না। তাই, ভয় থেকেই যায়।

অনেক সময়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে নিকাশি নালা দিয়ে জল বয়ে চলেছে। সেই নোংরা, ঘোলাটে জলেই বাড়ির মেয়েরা গৃহস্থালির কাজ সারছেন। বাসন ধুচ্ছেন। জামা-কাপড় কাচছেন। বাড়ির ছোট ছেলে-মেয়েরা আবার সেই জলেই শৌচকর্ম সারছে। এই দৃশ্য অধিকাংশ গ্রামাঞ্চলের। শহরাঞ্চলেও নিকাশি নালার জলে বাসনপত্র ধোয়ার কাজ সারেন অনেকেই। নিকাশি নালার কথা বাদ দিলে রয়েছে পুকুরের নোংরা জল। পুকুর সংস্কার করা হয় না দিনের পর দিন। এক জায়গায় আবদ্ধ জলে ক্রমাগত মিশছে পুকুরপাড়ের বর্জ্য পদার্থ। তার থেকেও রোগ ছড়াচ্ছে। কোনও আবাসনে জলের ট্যাঙ্ক দিনের পর দিন পরিষ্কার না হলে তার থেকেও সংক্রামক অসুখ ছড়াতে পারে।

পেটের রোগ এই সময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এর কারণ হল ব্যাক্টেরিয়ার প্রকোপ। ই-কোলাই ব্যাক্টেরিয়া মলের মধ্যে থাকে। কোনও কারণে মল জলের সঙ্গে মিশে গেলে সংক্রমণ হয়। তা ছাড়া টাইফয়েড, ক্লসটিডিয়াম, সিরেলা, সালমোনেলা থেকেও সংক্রমণ হয়। জলবাহিত রোগ যে শুধু পানীয় জল থেকে হয়, তা নয়। দূষিত জলে স্নান করলে, মুখ-হাত ধুলে, এমনকি পুকুর, সুইমিং পুলের অপরিষ্কার জলে সাঁতার কাটার সময়েও কয়েক ফোঁটা মুখে ঢুকে গেলে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।

কী ভাবে সাবধান থাকবেন?

প্রথমেই দেখতে হবে, প্রস্রাব ঠিক মতো হচ্ছে কি না। না হলে ওআরএস দিতে হবে। ওআরএস দেওয়ার পরে বমি হতে পারে। কিন্তু, উদ্বিগ্ন হলে হবে না। মুখ ধুইয়ে ফের ওআরএস দিতে হবে। শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম বাইকার্বোনেট, পটাশিয়াম ক্লোরাইড ঢুকলে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় থাকবে।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, পাঁচ বারের বেশি পাতলা মল হলে তখন স্যালাইনের ব্যবস্থা করতে হবে। মলের সঙ্গে রক্ত পড়লে তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ‘স্টুল কালচার’ করাতে হবে।

খাওয়াদাওয়ায় বেশি নজর দিতে হবে এই সময়ে। বেশি করে জল খেতে হবে এবং ভাজাভুজি, তেল মশলাদার খাবার খাওয়া একেবারেই চলবে না। রাস্তার দোকান থেকে কেনা খাবার, কাটা ফল, লস্যি-শরবত খেলেই মুশকিল। কাঁচা শাকসব্জি খাবেন না, কারণ ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি থাকবে। এই সময়ে কোনও অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলে স্যালাড এড়িয়ে চলাই ভাল। বরং, বাড়িতে বানিয়ে খান। বাইরে থেকে ফল কিনে এনে খেলে, তা ভাল করে ধুয়ে নিন। শাকসব্জি ভাল করে সিদ্ধ করে রান্না করুন। সহজ পাচ্য খাবার খেতে হবে। শিশুদের শরীরে পটাশিয়াম দ্রুত কমে যায়। তাই লেবুর রস, কলা, স্যুপ জাতীয় খাবার, পেঁপে দিতে হবে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে। এতে শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ঢুকবে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। লেবু জাতীয় ফল, পেয়ারা বেশি করে খান। খাবারে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকলে ভাল। রেড মিটের বদলে মাছ, ডিম, মুরগির মাংস খেতে পারেন।

ঘর যদি মশা-মাছি মুক্ত রাখা যায় এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, তবে রোগ ছড়াতে পারে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE