ডেঙ্গি সারিয়ে ওঠার পরে কী কী লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের কাছে যাবেন? প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি সেরে গেলেও অন্তত সপ্তাহখানেক ধরে সাবধান না থাকলে শরীরে একাধিক রোগের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এমনই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। ডেঙ্গি সেরে গেছএ, এমন অনেকেরই বিভিন্ন রকম রোগের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এই বিষয়ে চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলছেন, ডেঙ্গি ভিতর থেকে শরীরকে দুর্বল করে দেয়। ডেঙ্গি আক্রান্তদের রক্তে প্লাজমা ও অণুচক্রিকা কমে যায়। কিছু ক্ষেত্রে যেমন ‘ডেঙ্গি হেমারেজিক জ্বর’ হলে শরীরের ভিতর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। তাই ডেঙ্গি নির্মূল হলেও তার রেশ থেকে যায় শরীরে।
ডেঙ্গি সেরে যাওয়ার পরে কী কী লক্ষণ দেখা দিতে পারে?
চিকিৎসকের মতে, প্রচণ্ড দুর্বলতা, পেশিতে যন্ত্রণা, মাথা ঘোরা, বমি ভাব এ সব তো থাকেই, পাশাপাশি চুল পড়া, ঘন ঘন মেজাজ বদলে যাওয়া এমনকি দৃষ্টিশক্তি ঝাপসাও হয়ে যেতে পারে। সকলের ক্ষেত্রেই যে এই সব উপসর্গ দেখা দেবে তা নয়, যদি শরীরে আগে থেকেই অনেক অসুখবিসুখ থাকে বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রচণ্ড দুর্বল হয়, তা হলে এমন নানাবিধ সমস্যা একে একে দেখা দিতে থাকে। অনেকেই বিভিন্ন রকম ওষুধ খান, তারও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে।
ডেঙ্গি থাবা বসায় হৃদ্যন্ত্রেও৷ ডেঙ্গি সেরে গেলেও বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, এমনকি হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হতেও দেখা গিয়েছে কিছু রোগীর। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে ‘মায়োকার্ডাইটিস’। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি সারিয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েও দিন পাঁচেকের মাথায় অনুচক্রিকা বা প্লেটলেট ফের তলানিতে নেমে গিয়েছে এমন রোগীও আছেন। রোগী বিপন্মুক্ত হওয়ার পরেও প্রায়ই দেখা যাচ্ছে, আরও একদফা বিপদ এসে হাজির হচ্ছে। বেশির ভাগ রোগীই জানিয়েছেন, তাঁদের পেশিতে ও গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি হচ্ছে। আচমকাই কমে যাচ্ছে ওজন।
ডেঙ্গি ভাইরাস লিভার ও কিডনির উপরেও মারাত্মক প্রভাব ফেলে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ, সাধারণ ভাইরাল জ্বর সেরে যাওয়া আর ডেঙ্গি সেরে যাওয়া এক নয়। কারণ যাবতীয় সমস্যা এর পরেই শুরু হয়। তাই ডেঙ্গি-পরবর্তী সময়ে অনেক বেশি সাবধান থাকতে হবে। জ্বর কমে যাওয়ার ৪৮-৭২ ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে বাড়তি নজরে রাখতে হবে। রোগীর নিজেরও খানিক সতর্ক থাকা জরুরি। কোনও সমস্যা হলে তা চেপে না রেখে চিকিৎসককে জানাতে হবে।
হার্ট, কিডনি, লিভার, অগ্ন্যাশয়ের নানা গোলমাল দেখা দিতে পারে এই সময়ে। শরীরে জলের ঘাটতি হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত জল খেতে হবে। রোগীর ডায়েটে শরবত, ফলের রস, পাতলা ঝোল, ডালের জল, স্যুপ, দইয়ের ঘোল, লাল চা রাখতে হবে। বেশি করে মরসুমি ফল, ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল ও শাকসব্জি খেতে হবে। ভুলেও বাইরের খাবার, তেল-মশলাদার খাবার, প্রক্রিয়াজাত মাংস খাবেন না। প্রোটিনও খেতে হবে ভাল মাত্রায়। ছোট মাছের ঝোল, চিকেন স্ট্যু, ডিম সেদ্ধ রাখতে হবে ডায়েটে। রোজ দুটি করে ভেজানো কাঠবাদাম খাওয়াও ভাল এই সময়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy