ওমিক্রনের নতুন সংস্করণ ‘এক্সই’-এর জীবাণু এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে প্রবেশ করেনি। তবু ঘরে ঘরে বিভিন্ন বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন অজানা জ্বরে। কোভিডের চেয়ে কোথায় আলাদা এই ভাইরাল জ্বর?
অনেকের মধ্যে কোভিড পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার অনীহা দেখা দিচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ঘরে ঘরে জ্বরের হানা নতুন নয়। তবে জ্বরের প্রকারভেদে এর গুরুত্ব ও চিকিৎসাও বদলে যায়। সাধারণত, এ রাজ্যে ফি বছর ডেঙ্গি ও ভাইরাল জ্বরে মৃত্যু হয় অনেকের। তবে এ বারের চিত্রটি খানিক আলাদা। অনেক সময় জ্বর হলেও কী ধরনের জ্বর তা বুঝতেই কেটে যায় অনেকগুলি দিন। কিছু দিন আগে পর্যন্ত জ্বর হলেই ধরে নেওয়া হচ্ছিল, কোভিড হয়েছে। আরটি-পিসিআর পরীক্ষাতেও পজিটিভ রিপোর্ট আসছিল। কিন্তু এখন করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্থিতিশীল। সংক্রমণের হারও প্রায় শূন্য। ওমিক্রনের নতুন সংস্করণ ‘এক্সই’-এর জীবাণু এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে প্রবেশ করেনি। তবু ঘরে ঘরে বিভিন্ন বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন অজানা জ্বরে। এ ক্ষেত্রে অনেকের মধ্যে কোভিড পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার অনীহা দেখা দিচ্ছে। আবার পরীক্ষা করলেও তার ফলাফল আসছে নেগেটিভ। ফলে এই জ্বরের কারণ করোনা নয় বলেই মত চিকিৎসকদের।
এই ভাইরাল জ্বরের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কী কী উপসর্গ দেখা দিচ্ছে?
১) জ্বর স্থায়ী হচ্ছে ৩-৪ দিন।
২) সর্দি,কাশি।
৩) গলা ব্যথা।
৪) গলা খুসখুস করা।
জ্বর কমে গেলেও কাশি, সর্দির মতো কিছু উপসর্গ কিছু দিন থেকে যাচ্ছে। এই ধরনের জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে গলা এবং শ্বাসযন্ত্রজনিত সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে।
এই বিষয়ে ফুসফুস বিশেষজ্ঞ দেবরাজ যশ জানাচ্ছেন, ‘‘অনেক সময়ে কোনও উপসর্গ ছাড়াই জ্বর চলে আসছে। কারও ক্ষেত্রে জ্বরের মাত্রা খুব বেশিও নয়। কিন্তু সর্দি, কাশি, গলা ব্যথার মতো শারীরিক সমস্যাগুলি থেকে যাচ্ছে। জ্বরে আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা অনেক কম। তবে জ্বর নিয়ে হাসপাতালের বহির বিভাগে ভিড় জমাচ্ছেন আক্রান্তরা। জ্বর থাকছে ৩-৪ দিন। শারীরিক দুর্বলতা গ্রাস করছে ভীষণ ভাবে। কারও ক্ষেত্রে জ্বর এবং বাকি শারীরিক সমস্যা থেকে সুস্থ হতে ১০ দিনও লেগে যাচ্ছে। বাইরের তীব্র গরম থেকে ফিরেই এসিতে ঢোকা, ঠান্ডা জল খাওয়ার অভ্যাসই মূলত এই ভাইরাল জ্বরের কারণ। তা ছাড়া জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলেও জ্বর হচ্ছে। তবে আমি বলব জ্বর এলেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়াই উচিত হবে।’’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দলুইয়ের মতে, ‘‘জ্বর হচ্ছে তবে তা কোভিড নয়। অধিকাংশ রোগীই আসছে ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গ নিয়ে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণেই এমন হচ্ছে মূলত। তবে আমি বলব বিশেষ ভয়ের কিছু নেই।’’
একই কথা বলছেন চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তীও। তিনি জানাচ্ছেন, ‘‘কী কারণে জ্বর হচ্ছে সেটা এখনও অজানা। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু সব পরীক্ষাই করতে দিচ্ছি। কিন্তু বেশির ভাগই নেগেটিভ ফল আসছে। ১০২-১০৫ ফারেনহাইট অব্দিও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। তবে এই অজানা জ্বরের আসল কারণ কী তা, এখনও বলা মুশকিল। রোদ থেকে ফিরে অনেকেই এসির তাপমাত্রা কমিয়ে দিচ্ছেন দুম করে অনেকটা। এতেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আমি বলব ঘরের তাপমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এসির তাপমাত্রা রাখা উচিত। এ ছাড়াও শরীর যতটা সম্ভব আর্দ্র রাখার চেষ্টা করুন। বাইরে বেরোলেও সঙ্গে জলের বোতল রাখুন। যথাসম্ভব ছায়া আছে এমন কোনও জায়গায় থাকার চেষ্টা করুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy