অনেকেই আছেন, যাঁরা সারা বছর ধরে গরম জলে স্নান করেন। অফিস থেকে বাড়ি ফিরে ক্লান্তি কাটাতেও তাঁরা ভরসা রাখেন গরম জলের উপরেই। ইদানীং বরফজলে স্নান করার একটা প্রবণতা হয়েছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। সেই অভ্যাস কতটা স্বাস্থ্যকর?
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায় সুনীল ছেত্রী বলেছেন, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, তাঁর কিন্তু ঠান্ডা জলেই ভরসা। সুনীল বলেন, ‘‘আমি সকালে ৬টার সময় ঘুম থেকে উঠি। তার পর এক গ্লাস গরম জল খেয়ে ঠান্ডা জলে স্নান সেরে নিই। সকলকে বলছি, এই কৌশলটি কিন্তু ভীষণ কাজের। দিল্লির কনকনে শীতের দিনেও আমি ঠান্ডা জলেই স্নান করি। জল যত ঠান্ডা হবে, উপকার তত বেশি। বিশ্বাস করুন, আপনি মরবেন না। এই নিয়ম মানলে আপনি সুস্থ থাকবেন, এমনকি এটি শরীরের ফ্যাট ঝরাতেও সাহায্য করে।’’
ঠান্ডা জলে স্নান করলে শরীরে কী কী উপকার হয়?
১) ঠান্ডা জলে স্নান করলে শরীর থেকে এক প্রকার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান নির্গত হয়। যার ফলে ঠান্ডা লাগা, সর্দিকাশির মতো সাধারণ সংক্রমক ব্যাধিগুলি ঠেকিয়ে রাখা যায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা নিয়মিত ঠান্ডা জলে স্নান করেন, তাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ ভাল।
২) ঠান্ডা জলে স্নান করলে যে মনসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, তার কোনও বৈজ্ঞানিক কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। ঠান্ডা জলে স্নান করলে স্নায়ুর উপর এর প্রভাব পড়ে। মেজাজ ভাল করা হরমোন এন্ড্রোফিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এর ফলে অবসাদ, মনখারাপ কমে।
৩) শরীরে কোথাও চোট-আঘাত লাগলে বা রক্ত জমাট বেঁধে গেলে ঠান্ডা জল, বরফ দিতে বলা হয়। যাতে তাড়াতাড়ি রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে। শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে ঠান্ডা জলে স্নান।
৪) ত্বকের পক্ষেও ভাল ঠান্ডা জল। গরম জলে অনেকেরই ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। যার জেরে গায়ে-হাতে প্রদাহের সমস্যা দেখা যায়। চুলকায়, জ্বালা করে। কিন্তু শীতল জলে স্নানে এই সমস্যা থাকে না। পাশাপাশি ঠান্ডা জল ত্বকের উন্মুক্ত রন্ধ্র বন্ধ বা ছোট করতেও সাহায্য করে। যার ফলে ত্বক অনেক বেশি কোমল হয়ে ওঠে।
৫) শরীরচর্চা করার পর পেশিতে ব্যথা হলে উষ্ণ জলে স্নান করতে বলেন প্রশিক্ষকেরা। কিন্তু পেশিতে যদি ক্ষত হয় বা আঘাত লাগে, সে ক্ষেত্রে আবার আরাম দেয় ঠান্ডা জল।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। হার্টের অসুখ কিংবা কোনও ক্রনিক রোগ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিন।