নানা কারণে দুশ্চিন্তা চেপে বসছে। তৈরি হচ্ছে উদ্বেগ। এমন সময় কেউ যেমন খাওয়াদাওয়ার পাট তুলে দেন, তেমন উল্টোটাও হয়। অনেকেরই মন সারা ক্ষণ শুধু খাই-খাই করে। তবে ভাত, ডাল, তরিতরকারি নয়। ভাজাভুজি, মিষ্টি জাতীয় লোভনীয় পদের দিকে ঝোঁক তৈরি হয়। এ নিয়ে একাধিক গবেষণাও হয়েছে। আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে। আর তাতেই দেখা গিয়েছে ‘স্ট্রেস’ বা দুশ্চিন্তা থেকে হরমোনের তারতম্য-সহ নানা কারণে অনেক সময় কারও কারও অতিরিক্ত ফ্যাট, চিনিযুক্ত খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যায়। যাকে বলা হয় ‘স্ট্রেস ইটিং’।
তবে, সেই তালিকায় একটি পানীয় জুড়লে কিন্তু অনেকটাই লাভ হতে পারে, বলছে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা। ব্রিটেনের বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটির গবেষক ক্যাটারিনা রেনডেইরোর একটি সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা যেমন বিপদ ডেকে আনতে পারে, হার্টের ক্ষতি করতে পারে, তেমনই একটি পানীয় খাবারের তালিকায় রাখলে তা হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। সেই পানীয়টি হল এক কাপ গরম কোকো।
আরও পড়ুন:
ক্যাটারিনা তাঁর সমীক্ষার জন্য তরুণ প্রজন্মের কয়েক জন প্রতিনিধিকে বেছে নিয়েছিলেন। তাঁদের সকালের খাবারে দেওয়া হত দু’টি মাখন দেওয়া ক্রসিয়্যান্ট, চিজ় এবং দুধ। সঙ্গে থাকত এক কাপ গরম কোকো। এতে থাকে ফ্ল্যাভোনল নামে একটি উপাদান। কাউকে বেশি কড়া কোকো পানীয় দেওয়া হত, কাউকে কম মাত্রার কোকো যুক্ত পানীয়। তার পর তাঁদের দুশ্চিন্তাজনক পরিবেশের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাওয়া হত, যাতে মানসিক চাপে কার শরীর কী ভাবে প্রভাবিত হচ্ছে, দেখা যায়।
গবেষক ক্যাটারিনা বলছেন, ‘‘দুশ্চিন্তা থেকে ফ্যাটযুক্ত খাবারের প্রবণতা বেড়ে যায়, আগেই দেখা গিয়েছে। তবে এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল, ফ্যাটযুক্ত বিভিন্ন পদের পাশাপাশি উচ্চমাত্রার ফ্ল্যাভোনল যুক্ত খাবার খাওয়ালে দুশ্চিন্তা এবং খাদ্যাভাসে কোনও বদল আসে কি না, তা দেখা।’’
সমীক্ষার ফলাফল বলছে, যাঁরা কম মাত্রায় ফ্ল্যাভোনল সমৃদ্ধ পানীয় খেয়েছেন তাঁদের রক্তবাহী নালি, ধমনীর কার্যক্ষমতা ১.২৯ শতাংশ কমেছে। যাঁদের পানীয়ে উপাদানটি উচ্চমাত্রায় ছিল, তাঁদের ক্ষেত্রে ভাল ফল মিলেছে। ফ্ল্যাভোনল এমন একটি উপাদান, যা ‘কার্ডিয়োভাস্কুলার হেল্থ’ ভাল রাখতে সাহায্য করে। এতে হার্ট ভাল থাকে।
এক কাপ কোকো কেন?
গবেষণা বলছে, এতে থাকা ফ্ল্যাভোনল শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত খাবারের নেতিবাচক প্রভাব দূর করতে কিছুটা হলেও সাহায্য করে। তবে কারও কোকো পছন্দ না হলে তিনি গ্রিন টি খেতে পারেন।