চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
কাজ করতে করতে হঠাৎ কাঁধে তীব্র যন্ত্রণা কিংবা ঘুম থেকে উঠে ঘাড়ে ব্যথা। এমন সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। কিন্তু, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছটফট না করে দু’-তিনটি আসনেই মিলতে পারে সমাধান। অফিসে চেয়ারে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করার জন্যই ক্রমশ ঘাড়, কাঁধ ও পিঠের মাংসপেশিতে টান পড়ে। এই সব ব্যথা-বেদনা ঠেকিয়ে রাখতে নিয়ম করে যোগাসন করা একান্ত প্রয়োজন। তবে সঠিক নিয়ম মেনে যোগাসন করলে তবেই মিলবে ফল। শরীর ও মন চাঙ্গা রাখতে কোন কোন আসন অফিসে কাজের মাঝে সময় বার করে অভ্যাস করতে পারেন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন। রইল আসন আসান করার পদ্ধতির হদিস। আজকের আসন স্পাইনাল ট্যুইস্ট বা মেরুদণ্ডে মোচড় ভঙ্গি।
এই আসন আদতে মাটিতে বসে করা প্রচলিত যোগের একটি ভঙ্গি যা প্রয়োজনে কিছুটা বদলে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যাঁদের দীর্ঘ ক্ষণ চেয়ারে বসে কাজ করতে হয়, তাঁরাও কাজের মাঝে মিনিট দশেক সময় বার করে আসনটি অভ্যাস করতে পারেন অনায়াসে। শিরদাঁড়ায় মোচড় দিলে প্যারাসিম্প্যাথেটিক স্নায়ু উজ্জীবিত হয়ে বাড়তি শক্তি পাওয়া যায়।
কী ভাবে করবেন?
• চেয়ারে সোজা হয়ে পা ঝুলিয়ে বসুন। দুই পা মাটিতে শক্ত ভাবে রাখুন। মাথা ও ঘাড় সোজা থাকবে। দুই হাতের তালু মাটির দিকে করে কোলের উপর রাখুন। আসন শুরুর প্রাথমিক অবস্থান এটি।
• এ বার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে শরীরের উপরিভাগ থেকে বাঁ দিকে সম্পূর্ণ ঘুরে যান। কোমর থেকে শরীরের উপরের অংশ মোচড় দিয়ে ঘোরাতে হবে। বাঁ হাত রাখুন বাঁ দিকের নিতম্বের কাছে আর ডান হাত বাঁ হাঁটুর উপরে।
• একই সঙ্গে বাঁ দিকে ধীরে ধীরে ঘাড়ও ঘোরান। জোর করে বেশি চাপ দিয়ে ব্যায়াম করবেন না। সাধ্যমতো অভ্যাস করুন।
• সামনে বা পিছনে কোনও দিকেই ঝুঁকে যাবেন না। ঘাড়, কাঁধ ও পিঠ সোজা রাখতে হবে।
• এ বার শ্বাস নিতে নিতে শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন।
• পুনরায় শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ডান দিকে ঘুরুন। ডান হাত রাখুন ডান দিকের নিতম্বের কাছ আর বাঁ হাত ডান হাঁটুর উপরে। ডান দিকে ঘাড় ঘোরান। এই অবস্থানে কয়েক সেকেন্ড থাকতে হবে।
• এ বার শ্বাস নিতে নিতে আসন শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন। এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল।
• এই ভাবে ৫–৭ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।
সতর্কতা
ঘাড়, কোমর, পিঠ বা শিরদাঁড়ায় ব্যথা বা চোট থাকলে এই আসন অভ্যাস করা মানা।
কেন করবেন?
চেয়ারে বসে কোমর থেকে শরীরের উপরিভাগ মোচড় দেওয়া বা স্পাইনাল ট্যুইস্ট নিয়মিত অভ্যাস করলে মেরুদণ্ড টান টান ও সোজা হয়। পেটের ভিতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলিতে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয় এবং হজমক্ষমতা বাড়ে। মোচড় দেওয়ার জন্যে মেরুদণ্ড সংলগ্ন পেশির সচলতা বাড়ে। একই সঙ্গে প্যারাসিম্প্যাথেটিক নার্ভ উদ্দীপিত হয়ে বিশ্রামরত অবস্থাতেও হজমক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে (রেস্ট অ্যান্ড ডাইজেস্ট মেকানিজ়ম)। ট্যুইস্টিংয়ের জন্য বক্ষদেশ প্রসারিত হয় ফলে হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy