রোহিত রায়। ছবি : ইনস্টাগ্রাম।
চরিত্রের জন্য অভিনেতারা অনেক কিছুই করেন। বলিউডে তেমন উদাহরণ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। কেউ মস্তক মুণ্ডন করান। কেউ দিনে-রাতে মিষ্টি, কেক, বাটার চিকেন ইত্যাদি খেয়ে মোটা হন তো কেউ দু’দিন কিচ্ছুটি না খেয়ে বানিয়ে নেন ‘জ়িরো সাইজ় ফিগার’। অভিনেতা রোহিত রায়েরও একটি চরিত্রের প্রয়োজনে নিজেকে গড়েপিটে নেওয়ার প্রয়োজন পড়েছিল। হাতে অল্প সময়। লক্ষ্য বড়। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য যে পদ্ধতি তিনি অনুসরণ করেছিলেন, তা ভেবে আজও আফসোস করেন অভিনেতা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ওই পদ্ধতিতে কাজ হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু এখন বুঝি কী মারাত্মক বোকা-বোকা ছিল ব্যাপারটা।
ছোট পর্দার পাশাপাশি বড় পর্দাতেও অভিনয় করেন রোহিত। ২০০৭ সালে একটি ভাল চরিত্রের প্রস্তাব আসে তাঁর কাছে। শুটআউট অ্যাট লোখন্ডওয়ালা ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। কিন্তু সেই চরিত্রের জন্য দরকার রোগা পেটানো চেহারা। আর রোহিতের শরীরে তখন ভারতীয় পুরুষোচিত কিছুটা কমনীয়। কিন্তু চেহারার জন্য চরিত্র হাতছাড়া হোক চাননি রোহিত। তাই শুরু করেন ‘ওয়াটার ডায়েট’। রোহিত বলছেন, ‘‘রোগা চেহারা পাওয়ার জন্য এতটাই বেপরোয়া ছিলাম যে, আমি একটা অত্যন্ত বোকা-বোকা ডায়েট শুরু করি। আর কোনও দিনও ওই ডায়েট আমি করব না। কিন্তু তখন আমাকে করতে হয়েছিল। ২৫-২৬ দিনে ১৬ কেজি ওজন ঝরান রোহিত। মারাত্মক চাপের ছিল সেটা।’’
ওয়াটার ডায়েট হল সারা দিনে কোনও খাবার না খেয়ে শুধুই জল খেয়ে থাকা। ওই ধরনের ডায়েট কেউ ২৪ ঘণ্টাও করতে পারেন, আবার কেউ এক সপ্তাহ বা এক মাসও চালিয়ে যেতে পারেন। রোহিত অবশ্য জানাচ্ছেন, ওই ডায়েট মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে এতে। তিনি বলছেন, ‘‘ওই ডায়েট ক্ষতিকর। বিপজ্জনক। সেই জন্যই আমি বোকা ডায়েট বলছি। কারণ পরে আমি শুনেছিলাম হলিউডে যাঁরা ওই ডায়েট করার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ মারা যান।’’
অভিনেতা রোহিত এখন ৫৬ এবং ওই বয়সেও ছিপছিপে চেহারা তাঁর। বাড়তি মেদ নেই শরীরে। তবে তার জন্য ওয়াটার ডায়েট নয়, রোহিত ভরসা করেন নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে। রোহিত জানিয়েছেন, তাঁর ভ্যানেই একটি জিম রয়েছে। কাজের ফাঁকে সেখানেই ঘাম ঝরিয়ে নেন তিনি। এ ছাড়া সময় মেনে খাওয়াদাওয়া করেন। রোহিত বলছেন, ‘‘২৪ ঘণ্টাকে আমি ১৬:৮ নিয়মে ভেঙে খাওয়া দাওয়া করি। ৮ ঘণ্টা রাখি যাবতীয় খাওয়াদাওয়ার জন্য বাকি ১৬ ঘণ্টা কিচ্ছু খাই না। তবে না খাওয়ার সময়টাকে এখন টেনে বাড়িয়ে ১৮ ঘণ্টা করার চেষ্টা করছি। সন্ধে ৭টার পর এখন খাওয়া বন্ধ করে দিই এবং পরের দিন সকাল দুপুর ১টা পর্যন্ত খাই না।’’
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করে সম্প্রতি ৬ মাসে ৫৫ কেজি ওজন কমানোর কথা বলেছেন বলিউড অভিনেতা রাম কপূরও। কিন্তু সত্যিই কি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং উপকারী? পুষ্টিবিদেরা অবশ্য বলছেন, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে কাজ হতে পারে। কিন্তু সেটা সবার জন্য উপযোগী সেটা বলা যায় না। তারকারা সুফল পেয়েছেন বলেই সেটা বাকিদের ক্ষেত্রেও সমান প্রযোজ্য তা-ও নয়। বরং পুষ্টিবিদের পরামর্শ কেউ ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করার কথা ভাবলে চিকিৎসকেরার সঙ্গে কথা বলে তবেই শুরু করুন। অন্য দিকে ওয়াটার ডায়েট প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, জল বেশি খাওয়া সব সময়েই ভাল। কিন্তু শুধু জল খেয়ে দিনের পর দিন কাটালে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। এক দিনের জন্য ওয়াটার ডায়েট করা গেলেও তা নিয়মিত না করাই ভাল। জল বেশি খান। সঙ্গে পুষ্টিকর খাবার খেলে এবং কিছু নিয়ম মেনে চললেও ওজন দ্রুত ঝরবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy