আর্থ্রাইটিসের কারণে চোখের কী কী ক্ষতি হতে পারে, কী ভাবে সাবধান থাকবেন। ছবি: ফ্রিপিক।
একটা বয়সের পর থেকে শরীরের সব অঙ্গই ধীরে ধীরে দুর্বল হয়। যত বয়স বাড়ে, তত ক্ষয় বাড়ে। যেমন দাঁত পড়ে যায়, ত্বক কুঁচকে যায়, চুল পাতলা হতে থাকে ইত্যাদি। ঠিক একই ভাবে দুর্বল হয় দৃষ্টিশক্তি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের বিভিন্ন সমস্যা বাড়তে থাকে। কিন্তু আরও কিছু কারণ থাকে যে কারণে চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে একটি হল রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস। অবাক হলেও সত্যি। আর্থ্রাইটিসে পেশিতে বা গাঁটে গাঁটে ব্যথার পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গেও এর প্রভাব পড়ে। ফুসফুস, হৃদ্যন্ত্র, রক্তনালিতে রক্ত সরবরাহে সমস্যা হতে পারে। চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস প্রথমে ছোট ছোট অস্থিসন্ধিগুলির ক্ষতি করে। রোগটা যত বাড়তে থাকে, কব্জি, হাঁটু, গোড়ালি, কনুই, কাঁধে ব্যথা বাড়তে থাকে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগীর প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এই রোগের জেরে হাড়ে প্রদাহ ও ব্যথা বাড়ে। হাত, কব্জি, পায়ে যন্ত্রণা হতে থাকে। তবে রোগ অতিরিক্ত পর্যায় পৌঁছলে চোখ, ত্বক, ফুসফুস, হৃদ্যন্ত্র ও রক্তনালিতে সমস্যা হয়। চোখ ফুলে যাওয়া, অনবরত জল পড়া, চোখে জ্বালা, চুলকানির মতো সমস্যা হয়। আর্থ্রাইটিসের কারণে অন্ধত্বের ঝুঁকি বাড়ে বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস হয়েছে কি না তার কিছু লক্ষণ আছে। যেমন, গাঁটে গাঁটে ব্যথা তো হয়ই, পাশাপাশি হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়াও এই রোগের আর একটি লক্ষণ। হাত এবং পায়ের জোরও কমে যেতে পারে এর জেরে। মাঝেমধ্যেই জ্বর আসতে পারে। ভিতরে জ্বর-জ্বর ভাব থাকে। অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতাও এই রোগের লক্ষণ। যদি দেখা যায়, চোখ ফুলে লাল হয়ে যাচ্ছে, তা হলেও সতর্ক হতে হবে। চোখের সংক্রমণ ভেবে অনেকে এড়িয়ে যান। কিন্তু পরে ধরা পড়ে আর্থ্রাইটিসের কারণে চোখের সমস্যা হচ্ছে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস আগে ছিল বয়সজনিত সমস্যা। কিন্তু এখন জীবনযাপনের ধরন, খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চার অভাবের মতো বিভিন্ন কারণে ৩০ থেকে ৫০ বছরেও ব্যথা কাবু করছে। টানা ৭-৮ ঘণ্টা কম্পিউটারে বসে কাজ করেন যাঁরা, শরীরচর্চার ধাত নেই খুব একটা, তাঁরা বেশি ভুগছেন।
এই সমস্যা থেকে যদি দূরে রাখতে হয়, তা হলে জীবনযাপনে সংযম দরকার। শরীরে ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়ামের ঘাটতি হলে হবে না। আমাদের দেশে কড লিভার অয়েল তেমন পাওয়া যায় না। আর যে যে খাবার থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যেতে পারে, সে সব খাওয়ার চলও আমাদের দেশে কম। কয়েক রকম বাদাম, সব্জি থেকে যতটুকু ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, তা শরীরের জন্য যথেষ্ট নয়। কারণ, সে সব খাবার আমরা মাঝেমধ্যে খাই। তাই ভিটামিন ডি-র সবচেয়ে ভাল উৎস হল সূর্যের আলো। রোদে কিছু ক্ষণ শরীর সেঁকলে সেই প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে। মাঝদুপুরের চড়া রোদে থাকতে বলা হচ্ছে না, তবে দিনে কিছুটা সময় সূর্যের আলো গায়ে লাগাতেই হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে শাকসব্জি, ফল খেতে হবে। সুষম আহার জরুরি। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুমও দরকার। অতিরিক্ত ধূমপান, মদ্যপানের অভ্যাস ছাড়তে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy