স্কিৎজোফ্রেনিয়ার ব্যাখ্যা কি মিলল? গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
স্কিৎজোফ্রেনিয়া, নামটির মতোই কঠিন রোগটিও। রোগটিকে অল্প কথায় ব্যাখ্যা করা কঠিন। তবে সহজ করে বলতে গেলে এটি এমন এক, রোগ যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি বাস্তবকে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করেন। এক বার এই রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণত সারা জীবনই চিকিৎসার প্রয়োজন হয় আক্রান্তের।
পুরুষদের ক্ষেত্রে সাধারণত মধ্য কুড়িতে ও নারীদের ক্ষেত্রে মূলত তিরিশের গোড়াতে এই রোগ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। শিশু ও পঁয়তাল্লিশ পেরিয়ে যাওয়া মানুষদের ক্ষেত্রে এই রোগ সাধারণত বিরল। এই রোগের অন্যতম প্রধান একটি লক্ষণ বাস্তব পরিস্থিতির ভুল ব্যাখ্যা করা। কিছু ক্ষেত্রে স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা ভাবেন যে, কেউ তাঁদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন, কেউ কেউ খ্যাতি, ভালোবাসার সম্পর্কেও ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে থাকেন। কেউ কেউ এমন কিছু দেখেন যার আদৌ কোনও বাস্তব অস্তিত্বই নেই। কোনও কোনও রোগীর ক্ষেত্রে কথা বলার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
এত দিন এই রোগের কারণ সম্পর্কে বিশেষ কিছুই জানা ছিল না কারও। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এই রোগের পিছনে থাকতে পারে জিনঘটিত সমস্যা। গবেষকদের দাবি, তাঁরা অন্তত দশটি জিন খুঁজে পেয়েছেন যেগুলির পরিব্যাপ্তি এই রোগের আশঙ্কা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি তাঁরা আরও ১২০টি জিন চিহ্নিত করতে পেয়েছেন যেগুলি এই রোগ সৃষ্টির কারণ হতে পারে।
এই বিষয়ে প্রায় একই সঙ্গে দুটি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার’ পত্রিকায়। একটি গবেষণায় কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা প্রায় ৭৭ হাজার স্কিৎজোফ্রেনিয়া রোগীর সঙ্গে ২৪৪০০০ জন সুস্থ মানুষের জিনগত উপাদানের তুলনা করেছেন। এই গবেষণাতেই উঠে এসেছে স্কিৎজোফ্রেনিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রায় ১২০টি জিনের কথা। অপর গবেষণাটিতে হার্ভার্ড ও এমআইটির গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন বিরল পরিব্যাপ্তিযুক্ত দশটি জিন যা এই রোগের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এত দিন স্কিৎজোফ্রেনিয়ার কারণ সম্পর্কে বিশেষ কোনও ধারণা ছিল না কারও। ফলে চিকিৎসাও ছিল সীমাবদ্ধ। সেই দিক থেকে তাঁদের আশা এই দুটি গবেষণা এই রোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy