বিয়ের ঘণ্টা বাজলেই যেন তাদের মধ্যে ওজন কমানোর জন্য একটা আলাদা উদ্যম কাজ করে। প্রতীকী ছবি।
‘প্লাস সাইজ়’ এখন সামাজিক স্বীকৃতি পেলেও ওজন বেশি হলেই মহিলাদের মাথায় চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায়। মাঝেমধ্যেই তাঁরা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কোমর ঘুরিয়ে নিজেকে দেখেন আর ভাবেন, সামনের বছর ঠিক কৃতি শ্যাননের মতো কোমরের মাপ করে ফেলব। এই ভেবেই অবশ্য কেটে যায় বছরের পর বছর সময়! তবে বিয়ের ঘণ্টা বাজলেই যেন তাদের মধ্যে ওজন কমানোর জন্য একটা আলাদা উদ্যম কাজ করে। শাড়ি হোক বা লেহঙ্গা, বিয়ের দিন যেন সকলের নজর কনেতেই আটকে থাকে, সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই রোগা হওয়ার বিশেষ তোড়জোড় দেখা যায় ভাবী কনেদের মধ্যে। তবে খাওয়াদাওয়া একেবারে বন্ধ করে কিংবা কঠোর ডায়েট করে নয়, ওজন কমাতে হবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে।
পুষ্টিবিদদের মতে, এক মাসে ৩ কেজি কমানো স্বাস্থ্যসম্মত। অর্থাৎ হাতে যদি ৩ মাস সময় থাকে, তবে সহজেই মাসে ৮ থেকে ১০ কেজি ওজন কমানো যেতে পারে। প্রত্যেক মেয়ের শারীরিক গঠন আলাদা। বিয়ের কনেদের নজর থাকে পেট, ঊরু ও নিতম্বের মেদ কমানোর দিকে। তাই এমন ব্যায়াম বাছতে হবে, যাতে কম সময়ে বেশি ফল পাওয়া যায়। ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিক ভাবে ছ’-সাতটি ব্যায়াম বেছে নিতে হবে। স্কোয়াট, রোয়িং, হ্যামকার্ল, লঞ্জ। এই ব্যায়ামগুলি নিয়ম করে করলে অনেকটা ওজন ঝরানো সম্ভব হয়।
পেটের অংশের মেদ কমানোর জন্য কোর এক্সারসাইজ় যেমন প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, ব্রিজ করা যেতে পারে। তবে কেবল শরীরচর্চা করলেই হবে না, ব্যায়ামের পাশাপাশি জীবনযাপন এবং খাওয়াদাওয়াতেও বদল আনতে হবে।
মাসে ৩ থেকে ৫ কেজি ওজন ঝরানোর জন্য কেমন ডায়েট করার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা?
১) অতিরিক্ত ক্যালোরি-যুক্ত খাবার যেমন, ভাজাভুজি, কেক-মিষ্টি, চকোলেট, নরম পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার আগামী ১ মাস সম্পূর্ণ ভাবে এড়িয়ে চলুন।
২) অনেকের মতে, ডায়েট মানেই ভাত-রুটি খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, ডায়েট থেকে কার্বহাইড্রেট বাদ দেওয়ার দরকার নেই। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এই এক মাস যেন জটিল কার্বহাইড্রেট-যুক্ত খাবারই খাওয়া হয়। যেমন সাধারণ পাউরুটির পরিবর্তে ব্রাউন ব্রেড, ভাত খেতে ইচ্ছা করলে ব্রাউন রাইস, ময়দার বদলে আটার রুটি খাওয়া যেতেই পারে।
৩) তেল-মশলা ছাড়া খাবার দিন সাতেক খাওয়ার পর আর খেতে ইচ্ছে করে না। শরীরে কোনও জটিল রোগ না থাকলে একবারে তেল ছাড়া খাবার খাওয়া উচিতও নয়। ওজন ঝরাতে চাইলে সারা দিনের রান্নায় ৪ থেকে ৫ চামচ তেল ব্যবহার করা যেতেই পারে। ডায়েটে মাখন না রাখাই ভাল, পরিবর্তে দিনে এক চামচ ঘি খাওয়া যেতেই পারে। ঘি কিন্তু ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৪) আমাদের রোজের ঘরোয়া রান্নায় আলুর চল ভীষণ বেশি। মাছ-মাংসের ঝোল থেকে বিরিয়ানি, সবেতেই আলু থাকা মাস্ট! তবে ওজন ঝরাতে চাইলে কিন্তু দিনে এক থেকে দু’টুকরোর বেশি আলু খাওয়া চলবে না।
৫) ডায়েটে বেশি করে মরসুমি ফল রাখতেই হবে। বাঙালিদের ফল খাওয়ার অভ্যাস কম, তবে ওজন ঝরাতে চাইলে দিনে একটি থেকে দু’টি ফল খেতেই হবে। এ ক্ষেত্রে কলা রোজ না খাওয়াই ভাল। এতে অনেক ক্যালোরি থাকে। খিদে পেলে ভাজাভুজি না খেয়ে একটা ফল খেয়ে নিতে পারেন। বাইরে কোথাও গেলে সঙ্গে ড্রাই-ফ্রুটস রাখুন।
৬) ওজন ঝরাতে চাইলে দিনে দুই থেকে আড়াই লিটার জল কিন্তু খেতেই হবে। আর সাত থেকে আট ঘণ্টার ঘুমও ভীষণ জরুরি।
৭) অনেক সংস্থাই দাবি করে তাদের ওষুধ, ক্যাপসুল কিংবা মিল সাপ্লিমেন্ট খেলে সহজেই অনেকটা ওজন কমানো যায়। কিন্তু ওজন কমানোর কোনও ‘শর্ট কাট’ নেই। এই প্রকার সাপ্লিমেন্ট একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। এ সবের কারণে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে হাজার রোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy