ভারতীয়দের মধ্যে কোন কোন ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি বেশি হচ্ছে? ছবি: ফ্রিপিক।
ভিটামিন তো বটেই, শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খনিজ উপাদানেরও ঘাটতি হচ্ছে ভারতীয় মহিলা ও পুরুষদের শরীরে। এমনটাই দাবি করা হয়েছে ‘দ্য ল্যানসেট’-এর একটি গবেষণাপত্রে। ১৮৫টি দেশে সমীক্ষা চালিয়ে ল্যানসেট দাবি করেছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মহিলা ও পুরুষদের শরীরে অন্তত ১৫ রকম খনিজ উপাদানের ঘাটতি রয়েছে। তার মধ্যে ভারতীয়েরা বেশি ভুগছেন ক্যালশিয়াম ও আয়রনের ঘাটতিতে। তা ছাড়া, আয়রন ও ভিটামিন ই-র স্বল্পতাও লক্ষ করা গিয়েছে।
হার্ভার্ড টিএইচ স্কুল অফ পাবলিক হেল্থের গবেষকেরা এই সমীক্ষাটি করে দেখেছেন। গবেষকদের দাবি, পুরুষ বা মহিলা, সকলের জন্যই আয়রন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের যেখানে প্রতি দিন ৮ মিলিগ্রাম আয়রনের প্রয়োজন, সেখানে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার শরীরে প্রতি দিন আয়রনের প্রয়োজন ১৮ মিলিগ্রাম। যা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গিয়ে দাঁড়ায় ২৭ মিলিগ্রামে। এই সময়ে প্লাসেন্টার গঠনের জন্য আয়রন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শুধু মায়ের জন্য নয়, শিশুর বৃদ্ধির জন্যও আয়রন জরুরি। কিন্তু ভারতে ১০ থেকে ৩৪ বছর অবধি মহিলাদের শরীরে আয়রনের মারাত্মক ঘাটতি হচ্ছে। শুধু আয়রন নয়, ক্যালশিয়াম, ফোলেট, থায়ামিন, সেলেনিয়ামের মতো খনিজ উপাদানেরও ঘাটতি দেখা গিয়েছে।
শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকলে লোহিত কণিকার উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়। আয়রনের অভাবে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন না থাকলে সারা শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হয়। আবার ক্যালশিয়ামের ঘাটতি হলে হাড় ও দাঁতে বিভিন্ন অসুখবিসুখ দেখা দিতে পারে। শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি হলেই পেশিতে ব্যথা, ক্র্যাম্প এবং খিঁচুনি শুরু হয়। চরম ক্লান্তিভাব আসতে পারে। ক্লান্তি থেকেই যে কোনও কাজ করতে অনীহা আসে। এর প্রভাবে অনিদ্রার সমস্যা শুরু হয়। শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতির কারণে মনোযোগের অভাব, ভুলে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। শরীরে ক্যালশিয়ামের সামগ্রিক মাত্রা কমে গেলে, হাড় ভঙ্গুর হয়, তখন অস্টিয়োপোরোসিসের মতো রোগ বাসা বাঁধে শরীরে।
ল্যানসেটের গবেষকদের পরামর্শ, শরীরে খনিজ উপাদানের ঘাটতি হলে শুধু সাপ্লিমেন্টে কাজ হয় না। বরং সাপ্লিমেন্ট নিতে হয় শরীর বুঝে। সকলের জন্য তা নয়। তার চেয়ে রোজের খাওয়াদাওয়ায় নজর দিলে ভিটামিন ও খনিজের খামতি পুষিয়ে যেতে পারে। আয়রনের জন্য প্রচুর পরিমাণে শাকসব্জি, ফল খেতে হবে। বিন বা ডাল জাতীয় খাবার রাখা যেতে পারে ডায়েটে। সয়াবিন শুধু আয়রনেরই উৎস নয়, এতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও সেলেনিয়ামও রয়েছে। এ ছাড়াও ছানা বা পনির, ডিম, চিকেন খেলেও শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন পাবে। ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পূরণে দুধ, দই, পনির, ছোট মাছ, বিন্স খাওয়া যেতে পারে। সুষম আহারেই শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy