প্রক্রিয়াজাত কোন কোন খাবার শরীরের জন্য চরম ক্ষতিকর? ছবি: ফ্রিপিক।
অনেকেরই ধারণা, এক-আধ দিন সসেজ বা বার্গার খেলে কী হবে! তাই মাঝেমাঝেই কফির আড্ডা জমে যায় গরম বেকন বা সসেজে। তবে ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’-এর গবেষকেরা অন্য কথাই বলছেন। তাঁদের মতে, সসেজ, বেকন, হটডগের মতো খাবার তৈরি হয় প্রক্রিয়াজাত মাংস দিয়ে। এই প্রক্রিয়াজাত মাংস সংরক্ষণের জন্য এমন রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, যা থেকে হতে পারে টাইপ ২ ডায়াবিটিস, ক্যানসারের মতো রোগ। এই সব খাবারকে বলা হয় ‘আলট্রা প্রসেস্ড ফুড’, যা এক কথায় শরীরের জন্য বিষ।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সঙ্গে এই গবেষণায় রয়েছে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজও। ৩ লক্ষ মানুষের উপর গত দশ বছর ধরে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যাঁরা সবচেয়ে বেশি ‘আলট্রা প্রসেস্ড ফুড’ খেয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত ১৪ হাজারের টাইপ ২ ডায়াবিটিস ধরা পড়েছে। পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের রোগেও ভুগছেন অনেকে। আলসারও ধরা পড়েছে বেশ কিছু জনের। ‘দ্য ল্যানসেট’ পত্রিকায় এই গবেষণার রিপোর্ট ছাপা হয়েছে।
গবেষণা বলছে, দৈনিক ৫০ গ্রাম প্রক্রিয়াজাত মাংস খেলে হতে পারে ক্যানসারও। বিশেষ করে, পায়ুপথ ও খাদ্যনালিতে ক্যানসারের আশঙ্কা বেড়ে যায়। অর্থাৎ, রোজ যদি বেকনের দু'টি টুকরোই খান কেউ, তা হলেও তাঁর ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যাবে। গবেষকেরা আরও দেখেছেন, যদি প্রতি দিন পক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া হয়, তা হলে শরীরে ইনসুলিন হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যাবে। রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে থাকবে। ডায়াবিটিসের লক্ষণ দেখা দেবে। শুধু তা-ই নয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেলে উচ্চ রক্তচাপ ও অনিদ্রার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
কোন কোন খাবার বিপদ ডেকে আনছে?
বিজ্ঞানীদের মতে, ভাজাভুজির মধ্যে চিপ্স, দোকান থেকে কেনা প্যাকেটবন্দি পপকর্ন, প্যাকেটবন্দি বিভিন্ন রকম স্ন্যাকস ইত্যাদি।
প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে নাগেট্স, সসেজ, বেকন, সালামি, বার্গার।
যে কোনও রকম ‘ফ্রোজ়েন ফুড’ যা শূন্য ডিগ্রির নীচে সংরক্ষণ করে রাখা হয়, সেগুলির পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। ‘কিছু ফ্রোজ়েন ফুডে সোডিয়াম একটু বেশি মাত্রায় ব্যবহার করা হয়। মুখে দিলে নোনতা স্বাদ পাওয়া যায়। এই জাতীয় খাবার হার্ট ও কিডনির রোগীদের জন্য বিপজ্জনক।
গবেষকেরা বলছেন, প্রক্রিয়াজাত খাবারের বদলে যদি টাটকা ও তাজা খাবার খাওয়া যায়, তা হলে অসুখবিসুখের ঝুঁকি কমে। যেমন সসেজ বা বেকনের বিকল্প হতে পারে ডিম, তাজা দুধ। আলট্রা প্রসেস্ড বা প্রক্রিয়াজাত হলেও যেগুলির উৎস উদ্ভিদ, সেই সব খাবারের ক্ষেত্রে মারাত্মক কোনও রোগে আক্রান্ত হওয়ার তেমন আশঙ্কা নেই বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন গবেষকেরা। যেমন, পাউরুটি বা দানাশস্য প্রক্রিয়াজাত হওয়া সত্ত্বেও তা ক্ষতিকর নয়। কারণ এতে রাসায়নিক নয়, থাকে ফাইবার, যা শরীরের জন্য উপকারী। জলখাবার, দুপুরের খাবার কিংবা নৈশভোজে স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নিলেও সমস্যা হয় বিকেলে হালকা খিদে পেলে। তখনই চিপ্স, বার্গার, পিৎজ়া খাওয়ার প্রতি ঝোঁক বাড়ে। তাই অফিস হোক বা বাড়িতে, হাতের কাছে স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস, যেমন ড্রাইফ্রুট, মাখানা ইত্যাদি রাখাই ভাল। টাটকা ফল দিয়ে স্যালাড বানিয়ে রাখলে আর প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার রুচি থাকবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy