দীর্ঘ দিন ধরে লিভারের সমস্যায় ভুগে প্রাণ হারালেন অভিনেত্রী সোনালি চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত
যকৃৎ বা লিভারের নানা সমস্যা শরীরকে কমজোরি যেমন করে তোলে, তেমনই লিভারের সমস্যার জেরে মৃত্যু পর্যন্ত হানা দিতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে লিভারের সমস্যায় ভুগে প্রাণ হারালেন অভিনেত্রী সোনালি চক্রবর্তী। লিভারের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত থেকে জন্ম নেয় ফ্যাটি লিভারের মতো অসুখ।
অনেকেরই ধারণা, কেবল অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে এই অসুখ হানা দেয়। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, মদ্যপান ছাড়াও বেশ কিছু ভুল অভ্যাসের জেরেও এই অসুখ হানা দিতে পারে। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ফ্যাটি লিভার রোগটিকে দু’টি ভাগে ভাগ করা যায়, নন-অ্যালকোহলিক এবং অ্যালকোহলিক। নাম থেকেই স্পষ্ট, অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে লিভারে ফ্যাট জমলে তাকে বলা হয় অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। এটি ধরা পড়লে রোগীকে সচেতন হতে হবে। মদ্যপান পরিহার করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। কিন্তু নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় সামান্য পরিবর্তন করে রোগী সুস্থ হতে পারেন। সামান্য সতর্কতায় ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকিও এড়ানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী জানালেন তার উপায়।
সহজপাচ্য খাবার: হজমশক্তিকে বাধা দেবে না, এমন খাবার খাওয়ার অভ্যাস আছে কি? অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কবলে পড়ে প্রায় রোজই তৈলাক্ত খাবার, অতিরিক্ত ঝাল-মশলাযুক্ত খাবার গ্রহণ করেন অনেকেই। এতে ফ্যাটি লিভারের সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়। মশলাদার খাবার, জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে বরং আস্থা রাখুন সবুজ শাকসব্জি, কম তেল-মশলার খাবার, মরসুমি ফলে। কার্বহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার ডায়েটে বেশি করে রাখতে হবে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার: দীর্ঘ দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় এমন খাবার থাকে খাদ্যতালিকায়? তা হলে এই অভ্যাস আজই ত্যাগ করুন। বোতল ও টিনজাত খাবারের রমরমা ফ্যাটি লিভারের অন্যতম কারণ। প্রিজ়ারভেটিভ বা সংরক্ষণক্ষম খাবার অর্থাৎ, সস, বোতলজাত ফলের রস, নরম পানীয়, বেকারিজাত স্ন্যাক্স— এ সব যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
ব্যথানাশক: শরীরের কোথাও ব্যথা বাড়লেই তা সহ্য না করে যখন-তখন ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস থাকে। এমন অভ্যাসও কিন্তু লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ব্যথানাশক ওষুধে ব্যবহৃত নানা যৌগ লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে লিভারের ক্ষতিসাধন করে। কখনওই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথানাশক ওষুধ খাবেন না।
শরীরচর্চা: সারা দিন কতটা হাঁটা হয়? কী কী কায়িক পরিশ্রম করেন? শারীরিক শ্রম কিন্তু শরীরে মেদ জমতে দেয় না। এক জায়গায় দীর্ঘ ক্ষণ বসে কাজ শরীরে মেদ জমতে সাহায্য করে। তাই নিয়ম করে শরীরচর্চা করতেই হবে।
জল খাওয়া: শরীরের চাহিদা অনুযায়ী জল পানের অভ্যাস করুন। জল টক্সিন সরিয়ে শরীর সুস্থ রাখে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঠিক পরিমাণে জল খান।
ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হলে যকৃতের কোষগুলির ক্ষয় হতে শুরু করে। সে ক্ষেত্রে লিভার অকেজো হয়ে যাওয়া, লিভার সিরোসিস তো হতেই পারে, হতে পারে লিভার ক্যানসারও। তাই ফ্যাটি লিভার ধরা পড়লেই খাদ্যতালিকায় বিশেষ নজর দিতে হবে। তা হলেই কিন্তু মারণরোগের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy