নিয়মিত ইনসুলিন নিয়ে বা ওষুধ খেয়েও রক্তে শর্করা বশে থাকে না অনেক সময়েই। কখনও রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটা বেড়ে যায়, আবার কখনও কমে যায়। তাই নিয়মিত সুগার মাপতে হয় ডায়াবিটিস রোগীদের। পাশাপাশি, খাওয়াদাওয়াও বুঝেশুনে করতে হয়। রক্তে শর্করা কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকবে, সে নিয়ে যদি চিন্তা থাকে তা হলে একটি উপায় আছে। খাওয়ার পরে রোজ একটি পানীয় নিয়ম মেনে খেতে হবে। তাতে সমস্যার সমাধান হতে পারে অনেকটাই।
কী খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়বে না?
একাধিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, অ্যাপল সাইডার ভিনিগার খেলে নাকি রক্তে শর্করা বশে থাকে। ‘আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অফ ডায়াবিটিস’ এই নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিল। তাতে গবেষকেরা জানিয়েছিলেন, রোজ খাওয়ার পরে যদি পরিমিত পরিমাণে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার পান করা যায়, তবে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমবে। যাঁদের ডায়াবিটিস আছে ও নিয়মিত ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নিতে হয় বা ওষুধ খেতে হয়, তাঁরাও যদি দুপুরে খাওয়ার পরে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার খান, তা হলে হঠাৎ করে রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার বা কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
কেন উপকারী অ্যাপল সাইডার ভিনিগার?
দেশের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থও এই নিয়েও গবেষণা চালাচ্ছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ডায়াবিটিসের সমস্যায় এই ভিনিগার খুবই উপকারী। খাওয়ার পরে এক গ্লাস জলে এক চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। আসলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিন হরমোন। এই হরমোনের তারতম্য হলেই তখন শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। অগ্ন্যাশয়ের অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিতে তিন রকম কোষ থাকে আলফা, বিটা ও ডেল্টা। এর মধ্যে বিটা কোষ থেকে ইনসুলিন ক্ষরিত হয়। ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেলে সেটি গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয় লিভারের মাধ্যমে। সেই গ্লুকোজকে দেহকোষের মধ্যে প্রবেশ করাতে সাহায্য করে ইনসুলিন। আলফা কোষে থাকে গ্লুকাগন যা গ্লুকোজ়কে জারিত করে শক্তি তৈরি করে। তাই এই হরমোনটির তারতম্য হলে গোটা প্রক্রিয়াটা ব্যাহত হয়, তখন গ্লুকোজ় রক্তে জমতে থাকে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গিয়ে ডায়াবিটিস হয়। অ্যাপল সাইডার ভিনিগার এই প্রক্রিয়াটিকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। খাওয়ার পরে আপেল সিডার ভিনিগার খেলে রক্তে শর্করা জমতে পারে না।
তবে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার কী পরিমাণে খাওয়া উচিত ও সব ডায়াবিটিসের রোগীরাই তা খেতে পারবেন কি না, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। গবেষণাভিত্তিক ফলাফল যা-ই হোক না কেন, ডায়াবিটিস থাকলে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার খাবেন কি না তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়া ভাল।