শরীরচর্চা না কি ডায়েট, শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার আদর্শ উপায় নিয়ে নানা মত রয়েছে। তবে চিকিৎসকেদের মতে, ডায়াবেটিকদের সুস্থ থাকতে হলে শরীরচর্চা এবং নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া, দু’টিই করতে হবে। অনেকে আবার সুস্থ থাকতে শরীরচর্চার চেয়ে খাওয়াদাওয়ায় বেশি বিধি-নিষেধ মেনে চলেন। পাশাপাশি, শরীরচর্চা কথা ভুলে গেলে কিন্তু চলবে না। বরং বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে সে দিকে।
খাওয়াদাওয়া থেকে শরীরচর্চা, ডায়াবেটিকদের সব কিছুই নিয়মে বাঁধা। সেই তালিকায় কিন্তু শরীরচর্চাও পড়ে। দিনের যে কোনও সময়ে ইচ্ছা হলেই ব্যায়াম কিংবা যোগাসন করলে কোনও লাভ হয় না। তাই ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়ে শরীরচর্চা করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। ‘জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজ়ম’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা জানাচ্ছে, সকালের খাবার খাওয়ার আগে যদি শরীরচর্চা করতে পারেন, তা হলে সুফল মিলতে পারে। কিন্তু কেন?
গবেষণা জানাচ্ছেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেড়ে যায়। ডায়াবেটিকদের কাছে এই বিষয়টি স্পষ্ট। ডায়াবিটিস থাকলে সকালের দিকে মাথা ঘোরা, দুর্বল লাগার মতো সমস্যা হয়। শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া এর নেপথ্যে রয়েছে। ঘুম থেকে ওঠার পর পেশিগুলি সঙ্কুচিত হয়ে থাকে। রক্ত চলাচলও স্বাভাবিক হতে সময় লাগে। রক্ত সঞ্চালনও অনেক সময়ে ধীরগতিতে হয়। সে কারণে শর্করার মাত্রাও বেশির দিকেই থাকে।
শর্করার মাত্রা যখন বেশির দিকে, সেই সময়ে যদি শরীরচর্চা করতে পারেন, তা হলে তা কার্যকরী হবে। তবে এক দিন করলে হবে না। নিয়মিত করলে তবেই মিলবে সুফল। প্রতি দিন যদি একটি নির্দিষ্ট সময়ে ডায়াবেটিকরা শরীরচর্চা করেন, তা হলে শরীরও তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে।
প্রায় ১৫০ জন ডায়াববিটিস আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে ছ’সপ্তাহ ধরে এই গবেষণাটি চালানো হয়। সকলেই জলখাবার খাওয়ার আগে শরীরচর্চা করছেন। মাস দ়েড়েক পর দেখা গিয়েছে, অধিকাংশের শর্করার মাত্রা নিম্নগামী।