তিনি গত ১৪ বছর ধরে সূর্য ডোবার পর আর কোনও খাবার খান না। ছবি: সংগৃহীত।
পর্দায় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে উপস্থিত হতে হয়। চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে অভিনয়ের ঘষামাজা তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে শরীরের যত্নও নিতে হয় আলাদা করে। নিজেকে সুস্থ এবং চাঙ্গা রাখতে অনেক অভিনেতারা তাই নানা নিয়ম মেনে চলেন। সম্প্রতি মনোজ বাজপেয়ী নিজের রোজের ডায়েট নিয়ে অকপট হয়েছেন। মনোজ জানিয়েছেন, তিনি গত ১৪ বছর ধরে সূর্য ডোবার পর আর কোনও খাবার খান না। এতগুলি বছর ধরে রাতের খাবার খান না অভিনেতা! এ কথা শোনার পর অনেকেই আঁতকে উঠেছেন। তবে মনোজ অবশ্য জানিয়েছেন, এই রুটিন মেনে চলে তিনি সুস্থ আছেন। ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল কিংবা অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা তাঁর শরীরে এখনও পর্যন্ত বাসা বাঁধেনি। তিনি যথেষ্ট সুস্থ।
শরীর সুস্থ রাখতে নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করাই দস্তুর। খাওয়াদাওয়ার অনিয়মে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তেমনটাই বলে থাকেন চিকিৎসকরাও। কিন্তু দীর্ঘ ক্ষণ ধরে না খেয়ে থাকার এই পদ্ধতি কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? অন্য কোনও রোগের ঝুঁকি থেকে যায় কি? উত্তর জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল চিকিৎসক অদ্রিজা রহমান মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। চিকিৎসক বলেন, ‘‘সারা দিনের খাবার খাওয়ার যে সময় ভাগ করা রয়েছে, সেটা ব্যক্তিগত ভাবে কেউ নির্ধারণ করেনি। ঘড়ির কাঁটার অবস্থান কোথায় থাকলে ভাল হজম হয়, সেই অনুযায়ী এই সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। অনেক ক্ষণ না খেয়ে থাকলে পাকস্থলী থেকে এক ধরনের অ্যাসিড নিঃসরণ হয়। যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। কিন্তু সেটারও একটা মাত্রা রয়েছে। খালি পেটে দীর্ঘ ক্ষণ থাকলে সেই অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তার ফলে গ্যাস্ট্রাটাইটিসের সমস্যা দেখা যায়। এখন অনেকেই দীর্ঘ ক্ষণ না খাওয়ার মতো একটি রুটিন মেনে চলেন। তার ফলে পরবর্তী সময়ে কী সমস্যা দেখা দিতে পারে, তা এখনই বোঝা সম্ভব নয়। কারণ এর কিছু সুফলও পাওয়া যাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে। ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরলের মতো রোগের সঙ্গে ক্যালোরি খাওয়ার একটা সম্পর্ক আছে। ফলে কম খেলে ক্যালোরিও কম পরিমাণে শরীরে প্রবেশ করছে। ফলে ফিট থাকা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু চাপ পড়ছে খাদ্যযন্ত্রের উপর। খাবার খাওয়ার বিরতির ফলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।’’
একই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিকের কাছেও। অনন্যা বলেন, ‘‘এক জন মানুষ যদি সূর্যাস্তের পর না খান, সেটা নির্ভর করছে কখন ঘুমোতে যাচ্ছেন তার উপর। আর এটা যে সকলের জন্য প্রযোজ্য এবং সেই কারণেই যে ওঁর কোনও অসুখ হয়নি, এটা বলা যায় না। কারণ তার জন্য অনেকের উপর এই সমীক্ষাটা করতে হয়। ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ কিন্তু অনেকে করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কিন্তু সূর্য ডোবার সঙ্গে পাচনক্রিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। ১৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকা নিয়ম। আমার কাছে যাঁরা আসেন, তাঁদের সূর্যাস্তের পর আমি খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিই। তাঁরা যথেষ্ট সুস্থ আছেন। কিছু কিছু মানুষের জন্য ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং খুবই কাজে আসে। কিন্তু সেটা বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে। সকলের জন্য নয়। কিন্তু সূর্যাস্তের পর খাবার খেলে যে কোনও অসুবিধা হবে, তা একেবারেই ঠিক নয়। এই ধারণা ভুল। আমার মনে হচ্ছে উনি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করছেন। সেটা কাকতালীয় ভাবে সূর্য ডোবার সঙ্গে মিলে গিয়েছে। হয়তো ওঁর কোনও শারীরিক সমস্যা নেই। ফলে এই ধরনের ডায়েটে উনি সুস্থ আছেন। কিন্তু তার মানে যে সকলের জন্য এটি কাজ করবে, তা কিন্তু নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy