শরীরে ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি অবহেলা নয়। ছবি: শাটারস্টক।
রোগ প্রতিরোধ, জীবনীশক্তি ও শরীরের বাড়বৃদ্ধিতে সহায়তা করে বলে ভিটামিনের খুব কদর। সেই অনুপাতে খনিজ নিয়ে সচেতনতা একটু কম। কিন্তু শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলিতে ভিটামিন আর মিনারেল একসঙ্গে কাজ করে। অনেক ক্ষেত্রেই একটি ছাড়া অপরটির সুফল পাওয়া কঠিন। নীরোগ থাকা, হাড়-দাঁত-চুল মজবুত ও মসৃণ করা, হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা, হৃদ্স্পন্দন স্বাভাবিক রাখায় ভিটামিন ও মিনারেলের ভূমিকা সমান গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক সময়ে পুষ্টিকর খাবার খেলে শরীরে ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি হয় না। কিন্তু প্রয়োজনীয় পরিমাণে স্বাস্থ্যকর খাবারটুকু খেতে মহিলাদের যেন অনীহা! তাই মিনারেলের অভাব জনিত নানা সমস্যা তাঁদের ভোগায়। নিয়ম মেনে খনিজ ও ভিটামিনে ভরপুর খাবার খেলেই শরীর ফিট থাকবে। ত্বক উজ্জ্বল থাকবে। খাদ্যাভ্যাসে কেবল কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিনকে গুরুত্ব দিলে হবে না, ভিটামিন ও মিনারেলের দিকেও সমান নজর দিতে হবে বইকি।
জেনে নিন শরীরে কোন কোন ভিটামিন ও খনিজের অভাব হয় মাঝেমধ্যেই। কী ভাবেই বা শরীরে তাদের অভাব পূরণ করা যায়?
আয়রন
শরীরে আয়রনের অভাব ইদানীং কালে একটি বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক মানুষই আয়রনের অভাবে নানা সমস্যায় ভুগে থাকেন। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা আরও বেশি করে চোখে পড়ে। এই ঘাটতি রক্তাল্পতার মতো সমস্যা ডেকে আনে। শরীরে আয়রনের ঘাটতি মেটাতে বিট, গাজর, কিশমিশ, সাদা-কালো তিল, সবুজ শাকসব্জি, ডাল জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। এ ছাড়া কাস্ট আয়রনের বাসনে রান্না করলেও উপকার পাবেন।
ভিটামিন বি ১২
ভিটামিন বি১২ দেহের জন্য অপরিহার্য উপাদানগুলির মধ্যে অন্যতম। যাঁরা নিরামিষ খাবার খান, তাঁদের মধ্যে এই ভিটামিনের ঘাটতি বেশি দেখা যায়। এই ভিটামিন নানাবিধ অসুখকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে। শরীরে ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি তৈরি হলে অ্যানিমিয়া, ডায়ারিয়া, পেপটিক আলসার, কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ভিটামিন মানসিক অবসাদ কমায়, চুল, নখ ও ত্বক ভাল রাখে, হাড়ের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে সাহায্য করে। ডিম, মাশরুম, বিভিন্ন ধরনের মাংস ও মেটে, সামুদ্রিক মাছের মতো খাবার ভিটামিন বি১২-এর সমৃদ্ধ উৎস। এ ছাড়া দুধ, দই, ছানা, মাংসেও ভিটামিন ডি ভাল মাত্রায় থাকে।
ভিটামিন ডি
এ ভিটামিন শরীরে অন্দরেই তৈরি হয়। এই ভিটামিন শরীরে ক্যালশিয়াম এবং ফসফরাস শোষণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তা ছাড়াও, ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, বিভিন্ন সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। হাড় এবং দাঁতের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশকেও সাহায্য করে এই ভিটামিন। শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে তার প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের উপরেও। এই ভিটামিন মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ সচল রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি-র ঘাটতি স্নায়ু সংক্রান্ত রোগের জন্ম দেয়। রোজের খাদ্যাভ্যাসে সামান্য কিছু বদল আনলেও শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি মেটানো সম্ভব। শরীরে এই ভিটামিনের পর্যাপ্ত জোগান দিতে ডায়েটে বেশি করে দই, দুধ, ছানা, মাছ, মাশরুম, ওট্স, পালং শাকের মতো খাবার রাখতে হবে।
ভিটামিন এ
শরীরে এই ভিটামিনের অভাব হলে মূলত দৃষ্টিশক্তি ও প্রতিরোধ শক্তির উপর প্রভাব পড়ে। বাজরা, মিষ্টি আলু, তিল, পেঁপে ভিটামিন এ-র ভাল উৎস। তবে শরীরে পর্যাপ্ত মাত্রায় ফ্যাট থাকলে তবেই এই ভিটামিনের শোষণ হয়, তাই ডায়েটে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের ভারসাম্যও বজায় রেখে চলতে হবে।
আয়োডিন:
থাইরয়েড গ্রন্থির স্বাস্থ্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আয়োডিন। আয়োডিনের অভাবে গলগণ্ড বা গয়টার রোগ হয়ে থাকে। অন্তঃসত্ত্বা নারীর শরীরে আয়োডিনের ঘাটতির ফলে অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাত কিংবা বিকলাঙ্গ সন্তান প্রসবের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তা ছাড়া শিশুর মস্তিষ্ক ও দেহের বিকাশেও এই মৌল অত্যন্ত জরুরি। আয়োডিনের অভাবে স্নায়বিক দুর্বলতা, বধিরতা, বাকশক্তিহীনতা, মানসিক প্রতিবন্ধকতা, বামনত্বের মতো নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীরে এই খনিজের ঘাটতি হলে আয়োডিন আছে এমন নুন, দুগ্ধজাত খাবার, সামুদ্রিক মাছ ডায়েটে রাখতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy