গাঁটের যন্ত্রণা কমাতে কী ভাবে হলুদ ব্যবহার করবেন? ছবি: শাটারস্টক
হাঁটতে গেলেই পায়ের আঙুলে ব্যথা, গোড়ালিতে ব্যথা কিংবা অস্থিসন্ধি ফুলে গিয়ে অসহ্য যন্ত্রণা— এমন উপসর্গ মাঝেমধ্যেই কাবু করে অনেককে। কর্মব্যস্ত জীবন, খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম যে সব অসুখকে আরও বড় আকারে ডেকে আনছে তার মধ্যে অন্যতম রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া। এই রোগের কারণে যে কেবল গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা বাড়ে তা নয়, কিডনির সমস্যা ও ওবিসিটির মতো সমস্যাও শরীরে বাসা বাঁধে ইউরিক অ্যাসিডের হাত ধরে।
শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে মূলত হাড় ও কিডনির উপরেই বেশি প্রভাব পড়ে। খাওয়াদাওয়ায় একটু রাশ টানলেই এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব। তবে ইউরিক অ্যাসিডের উপসর্গ সম্পর্কে অনেকেরই তেমন কোনও ধারণা নেই। কোন উপসর্গগুলি দেখা দিলে আগেভাগে সতর্ক হবেন?
ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়া মানেই কেবল ডায়াবিটিস নয়, ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেও এমন উপসর্গ দেখা যায়। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে বার বার প্রস্রাব পাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। শরীরে বাড়তি ইউরিক অ্যাসিডের কারণে প্রস্রাব থেকে বেরোতে পারে রক্তও। হতে পারে ইউটিআই বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন। ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা বাড়লে প্রস্রাবের সময় অনেকেরই জ্বালা করে। এই জ্বালা এতটা বেশি হয় যে, মানুষটি প্রস্রাবের বেগ এলেও অনেক সময় করতে চান না। এর থেকে কিডনিতে পাথরও হতে পারে। শরীরে এমন কোনও উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে হলুদ রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। হলুদে কারমিউমিন নামে একটি বিশেষ যৌগ থাকে যার প্রদাহনাশক গুণ রয়েছে। রোজের ডায়েটে তাই হলুদ রাখলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ব্যথার ওষুধ খেলে শরীরে বিভিন্ন রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তাই ওষুধের পরিবর্তে রোজ কাঁচা হলুদ কিংবা হলুদ গুঁড়ো বেশি মাত্রায় খেয়ে দেখতে পারেন।
কী ভাবে খেলে উপকার পাবেন?
১) হলুদ চা: চার কাপ জলে এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে ভাল করে ফুটিয়ে নিন। এ বার গ্যাস বন্ধ করে ওই মিশ্রণের মধ্যে আদার রস, লেবুর রস আর মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
২) দুধ হলুদ: দু’কাপ দুধ ভাল করে গরম করে নিয়ে তার সঙ্গে এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন। স্বাদ বৃদ্ধি করতে একটু গোলমরিচ কিংবা কেশর মিশিয়ে নিতে পারেন।
৩) কাঁচা হলুদ আর মধু: সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ আর মধু খেলেও উপকার পেতে পারেন। খেতে সুস্বাদু না হলেও এই খাবার কিন্তু বেশ স্বাস্থ্যকর।
ইউরিক অ্যাসিডেরর মাত্রা বাড়লে কেমন ডায়েট মেনে চলবেন?
ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে কফি, কোল্ড ড্রিংকস, মদ খাওয়া চলবে না। করা যাবে না ধূমপানও। পালংশাক, পুঁইশাক, ফুলকপি, মিষ্টিকুমড়ো, ঢ্যাঁরস, টমেটোর মতো সব্জি না খাওয়াই ভাল। পাশাপাশি, অতিরিক্ত প্রোটিন যেমন— খাসির মাংস, সামুদ্রিক মাছ এড়িয়ে চলুন। বিভিন্ন রকম ডাল খাওয়াও ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের জন্য ভাল নয়। লেবু, মোসাম্বি, কমলালেবুর মতো টকজাতীয় ফল, চেরি, কাজু, মাখানা রোজের ডায়েটে রাখলে এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy