ওজন কমাতে কলা খাবেন? কী ভাবে খেতে হবে? ছবি: ফ্রিপিক।
শরীর ভাল রাখতে রকমারি ফল খেতে বলেন পুষ্টিবিদ- চিকিৎসকেরা। সেই তালিকায় থাকে কলাও। ভিটামিন, খনিজে ভরপুর কলায় রয়েছে ফাইবার। এতে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়ামও।
ওজন বৃদ্ধি করতে চাইলে, পুষ্টিগুণে ভরপুর কলা খাদ্যতালিকায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ওজন যিনি কমাতে চাইছেন, তিনিও কি কলা খেতে পারেন? পাকা কলা না কাঁচা কলা, কোনটা খেলে ভাল? পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘যেহেতু পাকা কলায় ক্যালোরির পরিমাণ বেশি, ১০০ গ্রাম কলায় ১১৭-১২০ কিলোক্যালোরি পাওয়া যায়। তাই কলা ওজন বৃদ্ধিতেই সাহায্য করে। তবে যদি ক্যালোরি মেপে খাওয়া যায়, তা হলে ওজন যাঁরা কমাতে চাইছেন, তাঁরাও কলা ডায়েটে রাখতে পারেন।’’
বিষয়টি ঠিক কী রকম?
ধরা যাক, কারও সারা দিনে ১২০০ কিলোক্যালোরি প্রয়োজন। তিনি সারা দিনে ভাত, রুটি ও অন্যান্য খাবার খেয়ে তার সঙ্গে কলা খেলেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর দিনের ধার্য ক্যালোরির পরিমাণ বেড়ে যাবে। শম্পার কথায়, ‘‘যাঁরা ওজন কমাতে চাইছেন, তাঁরা যদি রুটি বা ভাতের পরিমাণ কমিয়ে অথবা সেগুলি বাদ দিয়ে পাকা কলা খান, তা হলে অসুবিধা হবে না। সকালে রুটি না খেয়ে একটি রুটির পরিবর্তে একটি কলা খাওয়া যেতে পারে। কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। কারও শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ে অসুবিধা না থাকলে, ডায়েটে কলা রেখে ওজন কমানো যেতে পারে। কেউ দুপুরের খাবারে ভাতের সঙ্গে অন্য সব্জি না খেয়ে একটি কলা খেলেন, সেটি চলতে পারে। আবার রাতের খাবারে একটি রুটি, একটি কলা, এক কাপ দুধ খেলেন, তাতেও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’’ পুষ্টিবিদেরা বলছেন, শুধু ক্যালোরি নয়, একটি কলা শরীরে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ভিটামিন বি৬, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের অভাব পূরণ করতে পারে। এতে থাকে ফাইবার। শরীর ভাল রাখতে ফাইবারে সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া খুব জরুরি।
ওজন কমাতে কী ভাবে সাহায্য করে কলা?
একটি পাকা কলা খেলে পেট বেশ কিছু ক্ষণ ভরা থাকে। ফলে, চট করে অন্য কিছু খাওয়ার ইচ্ছা হয় না। উল্টোপাল্টা খাবার বাদ পড়লে, ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যা ওজন কমাতে পরোক্ষ ভাবে সহায়ক হয়। তা ছাড়া, শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজের অনেকটাই পূরণ হয় কলা খেলে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে।
কাঁচকলা
কাঁচকলায় পাকা কলার চেয়ে ক্যালোরির পরিমাণ একটু কম। স্টার্চের পরিমাণ কম। তবে, ওজন কমাতে পাকা কলার চেয়ে কাঁচকলা বাড়তি ভূমিকা রাখে বলে মনে করেন না পু্ষ্টিবিদ। তিনি জানাচ্ছেন, কাঁচকলায় রয়েছে ‘পেকটিন’-এর মতো ডায়েটরি ফাইবার। এই ফাইবার ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে সারাদিনে কতটা ক্যালোরি খাওয়া হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করবে কাঁচকলা বা পাকা কলা ওজন বাড়াবে না কমাবে।
কী কী ভাবে কলা খাওয়া যেতে পারে?
ওট্স এবং পাকা কলা
সকালের খাবারে ওট্স এবং কলা একসঙ্গে রাখতে পারেন। কলা শরীরে পটাশিয়ামের অভাব পূরণ করবে। ওটসে প্রচুর ফাইবার রয়েছে। স্মুদি হিসাবে খান বা ওটসের মধ্যে কলার টুকরো দিয়ে, এই দু’টি জিনিস একসঙ্গে খেলে অনেক ক্ষণ পেট ভর্তি থাকবে।
কলা এবং বাদামের মাখন
শরীর ভাল রাখার জন্য ফ্যাট বাদ নয়, বরং স্বাস্থ্যকর উপায়ে তা খাওয়া দরকার। বাদামের মাখনে থাকে প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। সকালে যদি কলা এবং বাদাম অথবা কাঠবাদামের মাখন খাওয়া যায়, তা হলে শরীর একসঙ্গে ফাইবার, ভিটামিন, খনিজের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাটও পাবে।
কাঁচকলার স্মুদি
শুধু পাকা নয়, কাঁচকলা দিয়েও স্মুদি বানিয়ে নিতে পারেন। কাঁচকলা, আখরোট, মধু এবং সামান্য জল দিয়ে মিক্সিতে বেটে স্মুদি তৈরি করে নিন। ওজন কমাতে এটিও কাজে আসবে। এর মধ্যে কিছুটা প্রোটিন গুঁড়ো অথবা দুধও মিশিয়ে নিতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy