স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা ক্রমেই বাড়ছে। রোজের খাদ্যতালিকায় নিয়ম মানার পাশাপাশি মুখরোচক খাবারেও স্বাস্থ্যকর উপাদান, পুষ্টিগুণ খুঁজছেন অনেকেই। সমাজমাধ্যমে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, খাবার নিয়ে ভালমন্দের ক্রমাগত চর্চায় অনেকের কাছেই স্পষ্ট কোন উপাদান ভাল, কোনটি মন্দ। খাবারে নুন, চিনির আধিক্য, উচ্চ মাত্রার ক্যালোরি যে এড়িয়ে চলা দরকার, তা জানেন প্রায় সকলেই। আর এই সচেতনতার ফলে বিভিন্ন খাদ্য প্রস্ততকারক সংস্থাও ‘স্বাস্থ্যকর’ দাবি করে বিক্রি করছে চিপ্স থেকে চানাচু্র-সহ অনেক কিছুই।
কিন্তু যে খাবার কিনছেন, তা আদৌ স্বাস্থ্যকর তো? খাদ্যের উপাদানে ‘সুগার’-এর উল্লেখ নেই মানেই কি তা চিনিরহিত? প্যাকেটের লেবেল দেখে তা কী করে বুঝবেন?
মুখরোচক খাবারের বিক্রেতা একটি সংস্থার কর্ণধার আশুতোষ আগরওয়াল বলছেন, প্রথমেই যে কোনও খাবারের প্যাকেটে থাকা লেবেলের উপকরণগুলি মন দিয়ে দেখতে হবে। কিছু কিছু উপাদানের নাম থেকে বোঝা যায়, সেটিতে প্রক্রিয়াজাত রাসায়নিক নেই। তবে আলাদা করে প্রক্রিয়াজাত রাসায়নিক, কৃত্রিম গন্ধ, কোন তেলে ভাজা হয়েছে, সেগুলি নির্ধারণ করে খাবারটি স্বাস্থ্যকর কি না। আর একটি সংস্থার কর্ণধার জনার্দন সওহর মনে করেন, খাদ্যদ্রব্য কেনার আগে তার উপকরণগুলি মনোযোগ সহকারে পড়ে নেওয়া দরকার। তিনি বলছেন, প্যাকেটের গায়ে হয়তো আলাদা করে ‘সুগার’ শব্দটির উল্লেখ নেই। তবে উপকরণের তালিকায় ডেক্সট্রোজ়, মল্টোজ়, ফ্রুক্টোজ়— এই সমস্ত নাম ইঙ্গিত দেয়, জিনিসটি পুরোপুরি চিনি ছাড়া তৈরি নয়। এ রকম অনেক নামই কৌশলে বুঝিয়ে দিতে পারে, তাতে চিনি, নুন বা প্রক্রিয়াজাত রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়েছে কি না। কোনও কোনও ক্ষেত্রে রাসায়নিকের নাম পড়ে সেটির সম্পর্কে ধারণা করা সহজ হয় না। এ ক্ষেত্রে সহজ উপায় হল মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট বা এমএসজি, সোডিয়াম নাইট্রেট-এর মতো উপকরণ থাকলে তা এড়িয়ে চলা। এগুলি স্বাস্থ্যকর নয়।
শব্দের অর্থ
‘লো ফ্যাট’, ‘অর্গ্যানিক’, ‘ন্যাচারাল’ এমন অনেক শব্দই লেখা থাকে খাবারের প্যাকেটে। জনার্দন বলছেন, এগুলি লেখা মানেই খাবারটি যে স্বাস্থ্যকর, তা প্রমাণ হয় না। বরং প্যাকেটের উপরে বড় করে কোনও কিছু লেখা থাকলেও, উপকরণের খুঁটিনাটিতে চোখ বোলানো উচিত। সেই উপকরণগুলি প্রাকৃতিক কি না, দেখা দরকার।
আশুতোষের কথায়, স্ন্যাক্সের ক্ষেত্রে দেখা দরকার তাতে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে কি না।। চিনি ছাড়া বা কম মাত্রার চিনিযুক্ত খাবার স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকাভুক্ত হবে। কোনও খাবারের মোড়কের সামনের অংশে উল্লেখ করা থাকে ‘গ্লুটেন ফ্রি’, ‘সুপার ফুড-রিচ’-এর মতো শব্দবন্ধ। তবে, সেগুলি ঠিক কি না, পরখ করার জন্য মোড়কের পিছনে লেখা উপাদানে চোখ রাখা দরকার, জানাচ্ছেন তিনি।