নিউমোনিয়ার উপসর্গ কী? ছবি: সংগৃহীত।
পাকিস্তানের পঞ্জাবে ২০ দিনে প্রায় ২০০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় বেশ চিন্তায় সে দেশের সরকার। প্রশাসন সূত্রে খবর, তীব্র ঠান্ডায় শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। গত ২০ দিনে ২০০-র বেশি শিশু-মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন পঞ্জাব প্রদেশের সরকার। তবে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, অপুষ্টির কারণেই অধিকাংশ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া, নিউমোনিয়ায় অনেক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তাদের অধিকাংশই নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন নেয়নি। শরীর দুর্বল হওয়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও নেই, তার ফলেই বাড়ছে মৃত্যুর হার।
পরিসংখ্যান অনুসারে, কেবল পঞ্জাবে ১ জানুয়ারি থেকে সাড়ে ১০ হাজার শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। যার মধ্যে ২২০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কেবল পঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী, লাহোরে ৪৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
নিউমোনিয়া হল ফুসফুসের সংক্রমণ। এই রোগে ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষেত্রে জলও জমতে পারে। সাধারণত ব্যাক্টেরিয়া কিংবা ভাইরাসের সংক্রমণে নিউমোনিয়া হয়। যেমন, স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি নামের ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ নিউমোনিয়া রোগের একটি অন্যতম প্রধান কারণ। এ ছাড়া, ছত্রাকের সংক্রমণ থেকেও নিউমোনিয়া হতে পারে।
শীতকালে তাপমাত্রা কম থাকায় উপযুক্ত আবহাওয়া পেয়ে নিউমোনিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়া কিংবা ভাইরাস আরও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। সামান্য ঠান্ডা লাগা থেকেও কেউ কেউ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন। তবে যাঁদের প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, বিশেষ করে শিশু কিংবা প্রবীণ মানুষের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
নিউমোনিয়ার প্রধান উপসর্গ অস্বাভাবিক জ্বর। জ্বর ক্রমশ বাড়তে থাকা নিউমোনিয়ার অন্যতম লক্ষণ। তাই জ্বর যদি ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং কিছুতেই না কমে, তখন অবশ্যই সাবধান হতে হবে। জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে কাশি এবং বুকে ব্যথা হলেও সতর্ক হতে হবে। এ ছাড়া, মাথায় যন্ত্রণা, ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া, খাওয়ায় অনীহা, সারা ক্ষণ বমি বমি ভাবও আনুষঙ্গিক লক্ষণের মধ্যে পড়ে। এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। মনে রাখবেন, নিউমোনিয়া কিন্তু খুব দ্রুত শরীরকে দুর্বল করে দেয়।
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে কিংবা কোনও ক্রনিক অসুখ থাকলে নিউমোনিয়ার সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। যেমন ডায়াবিটিস, আর্থ্রাইটিস এবং এইচআইভি পজ়িটিভে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে নিউমোনিয়ার ভাইরাস ঢুকলে দ্রুত সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে।
কী ভাবে সাবধান হবেন?
কনকনে শীতে যেন কোনও ভাবেই ঠান্ডা না লাগে, তার জন্য গরম জামাকাপড় পরে থাকতে হবে। রাতের দিকে রাস্তায় বেরোতে হলে বয়স্ক ও শিশুদের কানঢাকা টুপি ব্যবহার করতে হবে। বয়স্কদের ধূমপান, মদ্যপান বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হল, বয়স্কদের উচিত নিউমোনিয়ার প্রতিষেধক হিসাবে টিকা নেওয়া। শিশুদের চেয়েও এই টিকা বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে বেশি প্রয়োজনীয়। কারণ, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের সহজাত প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। পাশাপাশি, ‘ভিটামিন সি’-ও নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে। নিউমোনিয়ার কারণে রোগীমৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে ভারতেও। তাই টিকা নেওয়াটা আবশ্যক হয়ে পড়েছে, এমনটাই মত চিকিৎসকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy