Advertisement
২১ অক্টোবর ২০২৪
Pregnancy Weight Gain

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও বেশি ওজন বাড়েনি দীপিকার! কী ভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন হবু মায়েরা?

প্রতি মাসে ২ কেজির বেশি ওজন বাড়লে হবু মায়েদের একটু সতর্ক হওয়া জরুরি। কী ভাবে শরীর ও সন্তানের খেয়াল রেখেও অন্তঃসত্ত্বারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, রইল হদিস।

হবু মায়েরা শরীরের সঙ্গে আপস না করেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন কী করে?

হবু মায়েরা শরীরের সঙ্গে আপস না করেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন কী করে? ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:১১
Share: Save:

অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অনুভূতি আলাদাই। তবে সন্তান গর্ভে আসার পর যে পরিবর্তনগুলি মায়ের শরীরে ক্রমশ দেখা দিতে শুরু করে, তার মধ্যে অন্যতম হল ওজন বেড়ে যাওয়া। বাড়তি ওজন দেখে অনেক মহিলাই হতাশ হয়ে পড়েন। ওজন নিয়ে চারপাশের লোকজনেরও মাথাব্যথা বেড়ে যায়। তাঁদের কটু কথাগুলি আরও অবসাদ বাড়িয়ে দেয় হবু মায়েদের। পুষ্টিবিদ ও যাপন সহায়ক অনন্যা ভৌমিক বলেন, ‘‘সাধারণত অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ৯ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত ওজন বাড়তে পারে। পুরো ওজনের বেশির ভাগটাই বাড়ে পেটের দিকে।’’

তবে অনেক মহিলার ক্ষেত্রেই এই সময়ে ওজন অত্যধিক বেড়ে যায়। এই সময় ওজন বেড়ে গেলে শরীরে ডায়াবিটিস-সহ একাধিক রোগ বাসা বাঁধার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তাই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদেরও ওজন নিয়ে একটু সচেতন হওয়া জরুরি। প্রতি মাসে কত কেজি করে আপনার ওজন বাড়ছে, সে দিকে নজর রাখুন। হঠাৎ কোনও মাসে অনেকখানি ওজন বেড়ে গেলে কিন্তু সতর্ক হতে হবে। তখন অবশ্যই চিকিৎসক কিংবা পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। স্ত্রীরোগ চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সাধারণত ১০ থেকে ১২ কেজি ওজন বৃদ্ধি হয়। প্রতি মাসের হিসাবে ১ থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত ওজন বাড়ে হবু মায়েদের। আমরা যদি ওজনটা ঠিক কী ভাবে বাড়ে সেটা লক্ষ করি, তা হলে দেখা যাবে ৯ মাসের শেষে, ২ থেকে আড়াই কেজি ওজন হয় শিশুর, জলের পরিমাণ থাকে ১ থেকে দেড় কেজি, জরায়ুর ওজন হয় প্রায় ৪ কেজি, প্লাসেন্টার ১ থেকে দেড় কেজি, স্তনের ওজন বাড়ে ১ কেজি। সুতরাং বাকি ১ থেকে দেড় কেজি মেদ শরীরে জমা হয়।’’

সুতরাং প্রতি মাসে ২ কেজির বেশি ওজন বাড়লে হবু মায়েদের একটু সতর্ক হওয়া জরুরি। সম্প্রতি অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনকেও দেখা গিয়েছে অনন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও অভিনেত্রীর শরীরে খুব বেশি মেদ জমতে দেখা যায়নি। কী ভাবে শরীর ও সন্তানের খেয়াল রেখেও অন্তঃসত্ত্বারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, রইল হদিস।

১) এই অবস্থায় অল্প অল্প করে বারে বারে খাবার অভ্যাস করতে হবে। একসঙ্গে বেশি খেয়ে ফেললে পেটভার হয়ে হজমের সমস্যা হতে পারে। এই পদ্ধতিতে খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস শরীরে মেদের মাত্রাও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই ২-৩ ঘণ্টা পর পর ‌হালকা স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্‌স খান। জলখাবার, দুপুরের খাবার ও রাতের খাবারও হালকা রাখুন।

২) এই অবস্থায় বেশি করে জল খেতেই হবে। জল খেলে কিন্তু হজমশক্তি বাড়ে। বাড়িতে থাকুন কিংবা বাড়ির বাইরে— সঙ্গে একটি বোতল অবশ্যই রাখুন। জল খেলে কিন্তু ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

৩) ওজন বেশি মাত্রায় বাড়তে থাকলে কার্বোহাইড্রেট, বিশেষ করে মিষ্টিজাতীয় খাবারের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা ভীষণ জরুরি। এর বদলে প্রোটিন ও ফাইবারজাতীয় খাবার ডায়েটে বেশি করে রাখতে হবে। বাইরের খাবার, জাঙ্কফুড পিৎজ়া, পাস্তা, রোল-চাউমিন, মিষ্টি একেবারে এড়িয়ে চলুন। বাড়ির খাবারেই ভরসা রাখুন এই সময়।

৪) অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর মহিলাদের নিজেকে অসুস্থ ভাবার কোনও কারণ নেই, বরং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজের কাজের মধ্যে থাকাই ভাল। প্রয়োজনের বেশি খাওয়াদাওয়া, শরীরচর্চা বন্ধ রাখা এ অবস্থায় ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। বরং সঠিক ডায়েট, সাঁতার কাটা, হাঁটাহাঁটি করা, যোগাসন করার অভ্যাস করতে হবে। তা হলেই কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

৫) অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ভাজাভুজি, মশলাদার কিংবা মিষ্টি খাবারের প্রতি অনেকেরই ঝোঁক বেড়ে যায়। তবে এই সময় স্বাদের সঙ্গে একটু আপস করতেই হবে। মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করলে আপেলের সঙ্গে পিনাট বাটার মাখিয়ে কিংবা খেজুর –কিশমিশ খেতে পারেন। এ ছাড়া গ্রিক ইয়োগার্টের সঙ্গে সব রকম ফল মিশিয়েও খেতে পারেন। ভাজাভুজি খেতে ইচ্ছে করলে বেক করা রাগি চিপ্‌স, মিষ্টি আলুর চিপ্‌স খেতে পারেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Pregnancy Care
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE