Advertisement
E-Paper

বয়স বাড়ছে মা-বাবার, এই সময় পড়ে গেলে ঘটতে পারে বড় বিপদ, বাঁচতে গেলে মানতে হবে কিছু নিয়ম

প্রতি বছর বিশ্বে ৪ কোটির কাছাকাছি গুরুতর চোট পান ও হাসপাতালে ভর্তি হন। যাঁরা এ ভাবে আহত হন তাঁদের সিংহভাগই ৬৫ উত্তীর্ণ। তাই বয়স বাড়লে অতিরিক্ত সতর্ক হতে হবে।

বয়সকালে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে অনেকে পড়ে যান।

বয়সকালে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে অনেকে পড়ে যান। ছবি: প্রতীকী

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১১:৪২
Share
Save

বেশি বয়সে আচমকা ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়া এক মারাত্মক বিপদ। আচমকা পতন ও তার ফলে মৃত্যু ঘটাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ‘ফ্যাটাল ফল’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পরিসংখ্যান বলছে, আচমকা পড়ে যাওয়ার ফলে প্রতি বছর বিশ্বে ৪ কোটির কাছাকাছি গুরুতর চোট পান ও হাসপাতালে ভর্তি হন। যাঁরা এ ভাবে আহত হন, তাঁদের সিংহভাগই ৬৫ উত্তীর্ণ। এঁদের মধ্যে ৬ লক্ষ ৪৬,০০০ জন স্রেফ পড়ে যাওয়ার কারণেই প্রাণ হারান।

কেন হয় এমন?

এর কারণ এক নয়, একাধিক। বয়সকালে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে অনেকে পড়ে যান। দেহের ভারসাম্য রক্ষার তিনটি অঙ্গ হল চোখ, কান এবং মস্তিষ্ক। এর কোনও একটিতে ব্যাঘাত ঘটলেই পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। হৃদ্‌রোগের সমস্যা থাকলেও সাবধানে থাকতে হবে প্রবীণদের। রক্তচাপের সমস্যাও এর অন্যতম কারণ। প্রেশার বা সুগারের ওষুধ ঠিকমতো না খেলেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। আর এ সবের বাইরে থাকে বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা। স্নায়ু ও পেশির কার্যক্ষমতা কমে আসাও হাঁটাচলার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। যার ফলে পড়ে যান অনেক প্রবীণ মানুষ।

এগুলি তো হল অভ্যন্তরীণ কারণ। আচমকা পড়ে যাওয়ার নেপথ্যে শারীরিক অক্ষমতার বাইরেও বেশ কিছু বাহ্যিক কারণ থাকে। পিচ্ছিল মেঝে, এবড়োখেবড়ো রাস্তা, চটি বা জুতো ছিঁড়ে যাওয়া বা পা হড়কে পড়ে যাওয়া। বা কোনও দড়ি অথবা কিছুতে ধাক্কা খেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে যাওয়া। শাড়ি, ধুতি বা পোশাকে পা জড়িয়ে, সিঁড়ি, টুল বা কোনও উঁচু জায়গায় উঠতে-নামতে গিয়েও পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। বয়স বাড়লে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। ফলে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

খেয়াল রাখতে হবে যেন মন ভাল রাখা যায় প্রবীণ মানুষগুলির।

খেয়াল রাখতে হবে যেন মন ভাল রাখা যায় প্রবীণ মানুষগুলির। ছবি: প্রতীকী

এই বিপদ থেকে বাঁচতে মেনে চলতে হবে কয়েকটি নিয়ম

১। পোশাকের ঝুল যেন মাপসই হয়। পায়ে আটকে হোঁচট খেতে না হয়। চটি বা জুতোর তলা যেন পিচ্ছিল না হয়।

২। শৌচাগার ও ঘরের দূরত্ব বেশি হওয়া চলবে না। শৌচাগারে গেলে সম্ভব হলে কাউকে সঙ্গে নিতে হবে। বিশেষ করে রাত্রিবেলা একা একা উঠে পড়লে বিপদ বেশি। বাড়ির প্রতিটি ঘরে যেন পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকে।

৩। নার্ভের অসুখ, হার্টের অসুখ, রক্তচাপের সমস্যা, ডায়াবিটিস-সহ অন্য অসুখ থাকলে তার যথাযথ চিকিৎসা করানো জরুরি। শুধু চিকিৎসা করালেই হবে না, নিয়ম করে খেতে হবে ওষুধ। যদি বাড়ির প্রবীণ মানুষটি ওষুধ খেতে ভুলে যান, তবে অন্য কাউকে সেই দায়িত্ব নিতে হবে। এ ছাড়া হিয়ারিং এড এবং চশমার পাওয়ার ঠিক রাখতে হবে সব সময়।

৪। সম্ভব হলে ঘরের মধ্যে বয়স্কদের হাঁটাচলার সুবিধার জন্য রেলিং লাগানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। শৌচাগারে প্রবেশের পথেও তেমনই কোনও ব্যবস্থা রাখলে ভাল।

৫। নিয়ম করে সাধারণ কিছু শরীরচর্চা করতে হবে বয়স বাড়লেও। এতে হাত, ঘাড়, শিরদাঁড়ার পেশি সচল থাকবে। নিয়ম করে দিনে আধঘণ্টা যোগাসন, প্রাণায়াম ও হাঁটাচলা করতে হবে। পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে যেন মন ভাল রাখা যায় প্রবীণ মানুষগুলির। আসলে বয়সের ভারে অনেক সময়ই মানুষ একা হয়ে পড়েন। তা থেকে আসতে পারে মানসিক চাপ। অন্যমনস্ক হয়ে হাটঁতে গেলে বেড়ে যায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

Senior Citizens Health care Ageing

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}