অনেক বাচ্চাই টিভি দেখতে-দেখতে বা শুয়ে-বসে বিভিন্ন কাজের ফাঁকে দাঁত দিয়ে নখ কাটতে থাকে। একটা সময়ে নখের পাশের চামড়াও ছিড়তে শুরু করে তারা। আর এর থেকেই হতে পারে ইনফেকশন। গোড়া থেকেই বাচ্চার এই বদভ্যাস পাল্টাতে হবে। না হলে পরে এই অভ্যাস ছাড়ানো মুশকিল হয়ে যাবে।
কী কী সমস্যা হতে পারে
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাসপ্রসূন গিরি বলছেন, “দাঁত দিয়ে নখ খেলে নখের ময়লা পেটে চলে যায়। এর থেকে অনেক বাচ্চারই পেটে ইনফেকশন হতে পারে। আবার অনেকে নখের সঙ্গে তার চারপাশের চামড়াও দাঁত দিয়ে খেয়ে ফেলে। তখন সেই অংশ দিয়ে ব্যাক্টিরিয়া প্রবেশ করে নখের কোণেও ইনফেকশন হয়। একে বলে প্যারোনাইকিয়া। এই ইনফেকশনে নখের কোণে চামড়ার মধ্যে পুঁজ জমতে পারে। প্রথমে অ্যান্টিবায়োটিকস দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। তাতেও না কমলে সার্জিকালি পুঁজ বার করা হয়।”
এর সঙ্গে আর একটি সমস্যাও রয়েছে। দুধের দাঁত পড়ে নতুন দাঁত ওঠার সময়ে বাচ্চারা বারেবারে নখ বা হাত দাঁতে ঘষতে থাকলে দাঁতের গড়নও ঠিক হয় না। দাঁতের অ্যালাইনমেন্ট নষ্ট হতে পারে।
বদভ্যেস ছাড়ানোর উপায়
- বাচ্চার হাতে স্ট্রেস বল দিয়ে রাখুন, যাতে তার হাত দুটো ব্যস্ত থাকে। এতে সে অবচেতনে মুখে হাত দেবে না।
- সরাসরি বাচ্চার সঙ্গে কথা বলে তাকে বোঝান নখ খেলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে। ইনফেকশন হলে যে সার্জিকালি তার চিকিৎসা করার দরকার পড়ে, সেটা ওকে স্পষ্ট বলুন। অনেক সময়ে সরাসরি কথা বললে সমস্যার সমাধান হয়।
- বাচ্চার টিভি দেখার সময়ে তাকে আপেল বা বাদামের মতো ছোট ছোট জিনিস খেতে দিন, যেটা খেতে তার সময় লাগবে। সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকলে আর নখ খাবে না।
তবে নখ খাওয়ার বদভ্যাস থাকলে তা পাল্টাতে সময় লাগে। তাই ধৈর্য রাখুন। হাতে-পায়ে ক্রিম মাখিয়ে রাখুন। এতে কিউটিকলস বা নখের খোঁচা উঠে থাকবে না। হাতও মুখে দেওয়া ধীরে ধীরে কমবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)