হার্টে ছিদ্র নিয়ে জন্মালে বেশ কিছু ঝুঁকি থেকে যায়। ছবি:সংগৃহীত।
বিয়ের বছর ছয়েক পরে মা হয়েছেন অভিনেত্রী বিপাশা বসু। মেয়ে দেবীর বয়স এখন ন’মাস। কিছু দিন আগেই অন্নপ্রাশন হয়েছে একরত্তির। সেই ছবিও সমাজমাধ্যমে নিজেই পোস্ট করেছিলেন বিপাশা। ঠিক তার কয়েক দিন পরেই মেয়ের অসুস্থতার কথা প্রকাশ্যে আনলেন তিনি। দেবীর জন্মের দিন তিনেক পরেই নাকি তার হৃদয়ে দু’টি ছিদ্র ধরা পড়ে। ‘ভেন্ট্রিকুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট’-এ ভুগছিল সে। সেই সময় অনেক ছোট থাকায় অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি নেননি চিকিৎসকেরা। দেবী তিন মাস বয়সে পা দিতেই ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়েছিল। তবে এখন অবশ্য সুস্থ আছে সে।
হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা শুধু বড়দের নয়, শিশুদেরও হতে পারে। তার মধ্যে হৃদ্পিণ্ডে ছিদ্র হওয়ার ঝুঁকি ইদানীং বেড়ে গিয়েছে। শিশুদের ক্ষেত্রে হৃদ্পিণ্ডের সমস্যা দুই প্রকারের হয়ে থাকে। প্রথমটি জন্মগত। আর দ্বিতীয়টি জন্মের পরে হওয়া সমস্যা। হৃদ্পিণ্ড একটি পেশিবহুল অঙ্গ। দু’টি অলিন্দ এবং দু’টি নিলয়— সব মিলিয়ে হৃদ্পিণ্ডের চারটি অঙ্গ। হৃদ্রোগ সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা নির্দিষ্ট এই জায়গাতেই হয়।
কিন্তু কেন হয় এই রোগ? এ প্রসঙ্গে হৃদ্রোগ চিকিৎসক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘‘হার্টের চারটি চেম্বার আছে। দুটো ছোট, যেগুলি উপরে থাকে। আর দু’টি বড়, যেগুলি নীচে থাকে। এগুলি রক্ত পাম্প করে। এই চারটি চেম্বারের মধ্যে পর্দা থাকে। বাচ্চা যখন মায়ের গর্ভে থাকে, এই উপর এবং নীচের পর্দার মধ্যে দূরত্ব থাকে। এই দূরত্বের কারণেই ফুটো তৈরি হয়। উপরের পর্দায় যদি ফুটো থাকে, তা হলে সমস্যা হয় না। ৮-১০ বছর বয়সের মধ্যে নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। তবে এই ফুটো যদি ৭ মিলিমিটারের বেশি হয় তা হলে বন্ধ না-ও হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি থাকে, যদি নীচের দু’টি পর্দায় ফুটো তৈরি হয়।’’
হৃদ্পিণ্ডের ফুটো আছে কি না, তা সব সময় বাইরে থেকে বোঝা যায় না। তবে বাচ্চার যদি ঘন ঘন বুকে সংক্রমণ হয় সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। ইকোকার্ডিয়োগ্রাফি এবং ইসিজির মাধ্যমে ধরা পড়ে এই রোগ। ফুটো যদি বন্ধ না হয়, সে ক্ষেত্রে কী কী ঝুঁকি থেকে যায়? চিকিৎসক বলেন, ‘‘নীচের চেম্বারের ফুটো যদি ২০ বছরের মধ্যে এবং উপরের চেম্বারের ফুটো যদি ৩০ বছরের মধ্যে বন্ধ না হয়, সে ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্রমাগত সংক্রমণে হার্ট ফেল হয়ে যায়।’’ এই রোগের চিকিৎসা কী? চিকিৎসক বলেন, ‘‘এই রোগের চিকিৎসা হৃদ্পিণ্ডের ছিদ্রের আকার এবং অবস্থানের উপর নির্ভর করে। ফুটো ছোট হলে নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ প্রয়োগ করে ফুসফুসের বাড়তি রক্তের চাপ কমিয়ে রাখা হয়। বড় এবং মাঝারি আকারের ছিদ্র হলে ডিভাইসের মাধ্যমে বন্ধ করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন পড়ে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy