শিশুর হাঁপানি থাকলে বাবা-মায়েরা কী কী খেয়াল রাখবেন। ছবি: ফ্রিপিক।
মরসুম বদল মানেই সর্দি-কাশি, জ্বর। সারা ক্ষণ নাক বন্ধ। ইদানীং অনেকেরই অভ্যাস, সর্দি হল কি হল না, গাদাখানেক অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে নেওয়া। নাক বন্ধ মানেই গুচ্ছ গুচ্ছ নাকের ড্রপ। এর ফলও হয় মারাত্মক। আর যাদের হাঁপানি আছে তাদের অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট, কাশি, শ্বাস নিতে গেলেই বুকে যন্ত্রণা, রাত্তিরে এই সমস্যা উত্তরোত্তর বেড়ে যাওয়া— এই হল হাঁপানির মূল উপসর্গ। হাঁপানির টান উঠলে স্বভাবতই কষ্ট বাড়ে। ওই সময়ে বাবা-মায়েরা কী ভাবে পরিস্থিতি সামলাবেন, তা জেনে রাখা ভাল।
ফুসফুসে বাতাস বহনকারী সরু সরু অজস্র নালি রয়েছে। অ্যালার্জি ও অন্যান্য কারণে সূক্ষ শ্বাসনালিগুলির মাংসপেশি সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। ঠিকমতো অক্সিজেন চলাচল করতে পারে না। ফলে শরীরও প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না। আর এর ফলে নিঃশ্বাসের কষ্ট-সহ নানা শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। মিউকাস বা কফ জমে সমস্যা উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে। এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলছেন, “রোগী অনুযায়ী অসুখের লক্ষণ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তবে বারে বারে সর্দি-কাশি এই অসুখের এক অন্যতম উপসর্গ। কাশতে কাশতে চোখ-মুখ লাল হয়ে যায়। বুকে চাপ ধরা ব্যথা ও কষ্ট হয়। রাত্তিরে কাশি ও শ্বাসকষ্ট বাড়ে। খাবার গিলতেও সমস্যা হয়।”
বাবা-মায়েরা খেয়াল রাখবেন, শিশুর হাঁপানি থাকলে বাড়িতে ধূমপান করা যাবে না। শিশু যে ঘরে আছে, সেখানে ধূপ বা ধুনো জ্বালাবেন না। মশার ধূপ তো একেবারেই নয়।
চিকিৎসকের কথায়, দূষিত পরিবেশ হাঁপানির কষ্ট বাড়িয়ে দেয়। ঘরের ভিতরের বাতাস যাতে বিশুদ্ধ থাকে, তা দেখতে হবে। দরকারে ‘এয়ার পিউরিফায়ার’ লাগাতে হবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ফিল্টার পরিষ্কার আছে কি না, দেখে নিতে হবে। অপরিষ্কার ফিল্টার থেকে ধুলো, নোংরা বেরিয়ে ঘরের বাতাস আরও বিষিয়ে দেয়।
হাঁপানি হলে ইনহেলার দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। হাতের কাছে সব সময়ে ইনহেলার রাখতে হবে। বিশেষ করে রাতের দিকে হাঁপানির টান উঠলে যাতে ইনহেলার কাছেই থাকে, তা দেখে নিতে হবে। তবে কী ধরনের ইনহেলার শিশুর জন্য উপযোগী, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে।
স্থূলতাও আরও একটা বড় সমস্যা। যে শিশুদের ওজন বেশি এবং তার সঙ্গে রক্তে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কম, তাদেরই শ্বাসজনিত রোগ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ভিটামিন ডি-র ৮০ শতাংশ আসে সূর্যের আলো থেকে। বাকি ২০ শতাংশ বিভিন্ন খাবার থেকে পাওয়া যায়। শিশু যাতে রোদ পায়, তা দেখতে পায়। সেই সঙ্গে খাওয়াদাওয়ার দিকেও নজর দিতে হবে। বিভিন্ন রকম মাছ, দানাশস্য যেমন ওট্স, ডালিয়া থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে। শুকনো ফলও ভিটামিন ডি-র উৎস। এ ক্ষেত্রে কাঠবাদাম, খেজুর, আখরোট খুবই উপকারী। পালং শাকে ভরপুর মাত্রায় ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়াম থাকে। তবে শিশুর ডায়েট ঠিক করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
শিশুকে অতি অবশ্যই নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও চিকেন পক্সের টিকা দিয়ে রাখতেহবে। হাঁপানির সঙ্গে সঙ্গে নিউমোনিয়া বা চিকেন পক্স হলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার ঝুঁকি থাকে। টিকা নেওয়া থাকলে সেই ভয় থাকে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy