মহিলাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন এই কিটো ডায়েট মেনে চললে ঋতুঃস্রাব অনিয়মিত হয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
অনলাইনে হালফ্যাশনের পোশাক দেখেই হাত নিশপিশ! তবে সব পোশাক কেনায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে আপনার বাড়তি ওজন। কেবল পেটেই নয়, মেদ জমেছে উরু, কোমরেও। নিয়মিত শরীরচর্চা করার সময় কোথায়? তাই ভাল ডায়েট প্ল্যানই এখন এক মাত্র ভরসা।
বিগত কয়েক বছরে কিটো ডায়েটের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। চটজলদি ওজন কমাতে এই ডায়েটের কোনও জবাব নেই। দ্রুত মেদ ঝরাতে কার্যকরী হলেও এই ডায়েটে রয়েছে বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার এই বিশেষ ডায়েটে একেবারে এড়িয়ে চলতে হবে। পরিবর্তে খেতে হবে পরিমাণ মতো প্রোটিন এবং বেশি করে ফ্যাট জাতীয় খাবার। মূলত ফ্যাট গলিয়েই শরীরের এনার্জির ঘাটতি মিটবে। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিলে শরীর যে বিশেষ মেটাবলিক পর্যায়ে চলে যায় তাকেই চিকিত্সার ভাষায় কিটোসিস বলে। আর সেই থেকেই এই ডায়েটের নাম হয় কিটো ডায়েট। শরীর যখন কিটোসিস অবস্থায় থাকে, তখন প্রচুর মাত্রায় ফ্যাট বার্ন হয়। যে কারণে ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগে না।
তবে সঠিক নিয়ম মেনে এই ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ না করলে একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষত, মাথা যন্ত্রণা, ক্লান্তি, খিদে কমে যাওয়া, ঘুম কমে যাওয়া, চুল পড়া, মাথা ঘোরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিটো ডায়েট শুরুর প্রথম দুই-তিন সপ্তাহ ঝুঁকি কম হলেও দীর্ঘমেয়াদি কিটো করলে মুখ থেকে দুর্গন্ধ বেরোনো, পেশিতে টান, নানা ধরনের পেটের রোগ, আলসার, কিডনিতে স্টোন, কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগও লেজুড় হতে পারে।
মহিলাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন এই কিটো ডায়েট মেনে চললে ঋতুঃস্রাব অনিয়মিত হয়ে পড়ে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়া এই ডায়েট কখনই করা উচিত নয়। কখনও যদি কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তা হলে পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে সঙ্গে সঙ্গে কিটো ডায়েট বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
পুষ্টিবিদ এবং যাপন-সহায়ক অনন্যা ভৌমিকের মতে, এপিলেপসি বা মৃগী রোগীদের চিকিত্সার জন্য গবেষণার মাধ্যমে কিটো ডায়েটের আবিষ্কার করা হয়। মূলত এই ডায়েটের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াই হল দ্রুত ওজন হ্রাস। তিনি বললেন, ‘‘কিটো ডায়েট করলে দ্রুত ওজন ঝরানো সম্ভব হলেও খুব বেশি দিন সেই ওজন ধরে রাখা যায় না। ডায়েট বন্ধ করে দিলেই ওজন আবার বেড়ে যেতে পারে। এই ডায়েটে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি হয়। এই ডায়েটের ফলে ইচ্ছে থাকলেও অনেক কিছু খেতে পারি না আমরা। বিশেষত মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে বড়ই মন চায়। এর ফলস্বরূপ মানসিক অবসাদেও ভুগতে পারেন মানুষ। উদ্বেগের কারণে মহিলাদের শরীরে হরমোনাল ডিসব্যালেন্স তৈরি হয়, যা ঋতুচক্রের উপরেও পরোক্ষ প্রভাব ফেলতে পারে।’’
অনন্যা বলেছেন, ‘‘ যদি একান্তই এই ডায়েট করতে হয় তা হলে এক থেকে দু’মাসের বেশি এই ডায়েট কখনই করবেন না। ওজন কমাতে লো-কার্ব ডায়েট করা যেতে পারে। প্রাথমিক ভাবে ২০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট দিয়ে এই ডায়েট শুরু করার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। ধীরে ধীরে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমান, দেহকে এই বদলের সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ার সময় দিন।’’
কারা একেবারেই করবেন না এই ডায়েট?
শিশুদের ক্ষেত্রে এই ডায়েট একেবারেই করা উচিত নয়। কেবলমাত্র ওবিসিটি বা পিসিওডির সমস্যা থাকলে চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ করেই তবেই এই ডায়েট করা যাবে। এ ছাড়া ক্যানসারের রোগীদের ক্ষেত্রেও এই ডায়েট করা একেবারেই উচিত নয়। আপনার কিডনির সমস্যা কিংবা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে এই ডায়েট এড়িয়ে চলুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy