কখনও শীত আর কখনও ঠান্ডার এই আবহাওয়া প্রভাব ফেলে শরীরের উপরও। ছবি: সংগৃহীত
কথায় আছে মাঘের শীত বাঘের গায়ে। অথচ বাস্তব চিত্রটা একেবারে অন্য রকম। কপালে জমছে বিন্দু বিন্দু ঘামের রেখা। বাস, ট্রাম, মেট্রো চেপে অফিস থেকে বাড়ি ফিরেই হাত চলে যাচ্ছে ফ্যানের সুইচে। কিন্তু জানুয়ারি মাসে কি এমন হওয়ার কথা ছিল? বাঘের গায়ে তো দূর, মানুষের গায়ে পর্যন্ত লাগছে না। অনেকের মনেই উঁকি দিচ্ছে প্রশ্ন, তবে কি পাততাড়ি গোটাল শীত?
হাওয়া অফিস বলছে, আপাতত তাপমাত্রার তারতম্য চলবে। তবে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে তাপমাত্রা আবার খানিকটা নামতে পারে। মিলতে পারে শীতের আমেজ। যদিও হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় এ বছর এক রকম ইতি। চলতি ২৪ ঘণ্টা একই রকম আবহাওয়া থাকবে। তার পর তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমবে। তার পর আবার গরম বাড়বে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। তবে উত্তুরে হাওয়ার জোর খানিকটা বেড়েছে। তার জেরেই গুমোট কেটে চনমনে আবহাওয়া মিলছে শুক্রবার।
কখনও শীত আর কখনও ঠান্ডার এই আবহাওয়া প্রভাব ফেলে শরীরের উপরও। শীতকালীন রোগবালাই তো ছিলই, তার উপর হাওয়া বদলের এই খবরে শরীর খারাপের আশঙ্কা জাঁকিয়ে বসছে মনে। আবহাওয়ার ওঠানামার প্রভাবে শারীরিক কী কী সমস্যা হতে পারে? কী ভাবেই বা প্রকৃতির এই খামখেয়ালিপনার সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ থাকা সম্ভব, তা জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল চিকিৎসক অদ্রিজা রহমান মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
এই পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকার উপায় জানালেন চিকিৎসক। অদ্রিজার বলেন, ‘‘আবহাওয়ার এমন খামখেয়ালিপনায় মূলত দু’টি সমস্যা হয়। সর্দি-কাশি আর পেটের গোলমাল। কখনও খুব ঠান্ডা, আবার এই দরদর করে ঘাম ঝরছে কপাল থেকে। এক বার সোয়েটার, পরক্ষণেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের হাওয়ায় স্বস্তি পাওয়া। এ সব তো লেগেই রয়েছে। ফলে বিভিন্ন আবহাওয়ার সংস্পর্শে এসে খারাপ হচ্ছে শরীর। ঘাম বসে আরও বেশি ঠান্ডা লেগে যাচ্ছে। এ বার এটা যে শীতকালে ঠান্ডা লেগে হচ্ছে নাকি, আবহাওয়ার হেরফেরে হচ্ছে, তা অনেক সময়ে বোঝা যায় না। তাতেই আরও সমস্যা বাড়ে।’’
তাপমাত্রার ওঠানামায় ঠান্ডা লাগা তো আছেই, সেই সঙ্গে দেখা দেয় পেট খারাপও। পেটের গোলমালেও ভোগেন অনেকে। কেন হয় এমন? চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ঠান্ডা আর গরম মিশ্রিত আবহাওয়ায় পেট খারাপ হওয়ার একটা আশঙ্কা থেকে যায়। শীতকাল মানেই একের পর এক উৎসব চলতেই থাকে। সেই আমেজ এখনও কাটেনি। ফলে বাইরের খাবার খাওয়াদাওয়াও বজায় আছে। একে তো আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি, তার উপর ক্রমাগত তেল-মশলাদার খাবার খেলে চাপ পড়ে পেটের উপর। এটা ছাড়াও শীতকালে জল খাওয়ার প্রবণতা একেবারে কমে যায়। প্রস্রাবের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই জল খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিলে চলবে না।’’
এই সময়ে সুস্থ থাকতে কী কী সতর্কতা মেনে চলা জরুরি? অদ্রিজা বলেন, ‘‘ঠান্ডা পুরোপুরি চলে যায়নি। সকালের দিকে বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়ে গরম লাগলেও, রাতের দিকে কিন্তু ঠান্ডা হাওয়া দেয়। তাই মোটা সোয়েটার না পরলেও অন্তত পাতলা একটা চাদর সঙ্গে রাখুন। দরকার মতো গায়ে জড়িয়ে নিলেই হল। বাইরের খাবার খাওয়াও বন্ধ করলে ভাল। তাতে সুস্থ থাকবে পেট। বাইরে থেকে ফিরেই ফ্যান কিংবা এসি না চালানোই শ্রেয়। গরম লাগছে মানেই ফ্রিজ খুলে ঢকঢক করে ঠান্ডা জল খাওয়া যাবে না। তাতে মারাত্মক ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। ঠান্ডায় যাঁদের অ্যালার্জি থাকলে নরম পানীয়, আইসক্রিম এই সময়ে এডিয়ে চলা জরুরি। তাতে অ্যালার্জির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy