পুরুষদের মধ্যে পাকস্থলীর ক্যানসারের হার মহিলাদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। প্রতীকী ছবি।
অল্প খেলেই পেট ভরে যাওয়া, পেটে ব্যথা, হজমের অসুবিধা, গ্যাস, অম্বল লেগেই আছে। সঙ্গে বমিভাব ও খিদে কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ অনেককেই কষ্ট দেয়। এর সঙ্গে যদি ওজন কমে যাওয়া, দুর্বল লাগার মতো লক্ষণ থাকে, তবে কিছুটা চিন্তা বাড়ে। কারণ এ সব অনেক সময়ে পাকস্থলীর ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে। বিশেষ করে কালো মলত্যাগ করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি বলে পরামর্শ দিলেন ‘চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট’-এর অধিকর্তা সার্জিকাল অঙ্কোলজির চিকিৎসক জয়ন্ত চক্রবর্তী। দেখা গিয়েছে পুরুষদের মধ্যে পাকস্থলীর ক্যানসারের হার মহিলাদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এ দেশে বছরে প্রায় ৩৪,০০০ জন পেটের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। ভারতীয় পুরুষদের বিভিন্ন ক্যানসারের মধ্যে পঞ্চম স্থানে আছে এই ক্যানসার। যাঁদের হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি নামে ব্যাক্টেরিয়ার কারণে পেটে আলসার আছে এবং সঠিক চিকিৎসা হয় না, তাঁদের মধ্যে পেটের ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি বলে জানালেন জয়ন্ত। যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে এইচ পাইলোরি সংক্রমণে ভুগছেন এবং আলসার অ্যাট্রোফিক গ্যাস্ট্রাইট্রিস পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে পেটের ক্যানসারের আশঙ্কা অনেক বেশি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অসুখের ঝুঁকি বাড়ে। জয়ন্ত বললেন যে, প্রাথমিক অবস্থায় ক্যানসার নির্ণয়ের কথা বলা হলেও শুরুতে পেটের ক্যানসারের কোনও সুনির্দিষ্ট উপসর্গ না থাকায় চট করে অসুখটি ধরা যায় না। বেশির ভাগ মানুষই সাধারণ হজমের সমস্যা ও অ্যাসিডিটি ভেবে খুব একটা গা করেন না। ইদানীং আমাদের দেশের মানুষদের মধ্যে বাড়তি লবণ খাওয়া ও তন্দুরে সেঁকা খাবার খাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় পাকস্থলীর ক্যানসারের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।
কোন কোন কারণে পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে?
কী কী উপসর্গ দেখলে সাবধান হতে হবে?
উপরিউক্ত লক্ষণগুলি অনেক সময়েই পাকস্থলীর ক্যানসারের কারণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাডভান্সড স্টেজে পেটের ক্যানসার ধরা পড়ে। শুরুতে চিকিৎসা করালে ভাল ফল পাওয়া যায়।
বেশির ভাগ সময়ে পেটের ক্যানসার অ্যাডভান্সড স্টেজে ধরা পড়ে বলে চিকিৎসায় পুরোপুরি সারানো মুশকিল। পাকস্থলীর ক্যানসার ছড়িয়ে পড়লে গ্যাসট্রেকটমি সার্জারির সাহায্যে ক্যানসারযুক্ত অংশ বাদ দিয়ে পরবর্তী চিকিৎসা করা হয়। অনেক সময়ে সার্জারির পরিবর্তে বা সার্জারির পরে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। বিশেষ ওষুধের সাহায্যে ক্যানসারযুক্ত কোষগুলিকে বিনষ্ট করে রোগীর কষ্ট কমানো হয়। প্রয়োজন হলে রেডিয়েশনের সাহায্য নিতে হয়। এ ছাড়া, টার্গেটেড ড্রাগ থেরাপি ও ইমিউনোথেরাপির সাহায্যেও পাকস্থলীর ক্যানসারের বৃদ্ধি আটকে দিয়ে রোগীকে স্বস্তি দেওয়া যায়।
রোজকার ডায়েটে পর্যাপ্ত শাক, সব্জি, ফল রাখা উচিত। এ ছাড়া, ধূমপান মদ্যপান ছেড়ে দিয়ে নিয়মিত ব্যায়াম করে ওজন ঠিক রাখলে ক্যানসারের পাশাপাশি সামগ্রিক ভাবে ভাল থাকা যাবে। পেটে আলসার বা গ্যাস্ট্রাইট্রিস থাকলে সঠিক চিকিৎসায় তা সারাতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy