কী কী অভ্যাস জীবনের অনেক জটিল সমস্যা মেটাবে ছবি: ফ্রিপিক।
জীবনকে নিজের ইচ্ছামতো পরিবর্তন করার শক্তি আসবে ছোট ছোট পদক্ষেপ থেকেই। এমনটাই মনে করেন মনোবিদেরা। আসলে জীবন এক ঢালে চলে না। নদীর মতোই তাতে অনেক বাঁক আসে। কখনও সুখ, কখনও দুঃখ। কখনও আনন্দ, আবার কখনও হতাশা।
আচমকা এমন ঝড়ও বয়ে যায়, যা দিশাহারা করে দিতে পারে। কিন্তু সব ঝড়ঝাপটা সামলেও মানুষ তার অভ্যাস, সিদ্ধান্ত, ইচ্ছাশক্তি, পরিশ্রম দিয়ে সমস্ত বেয়াড়া সময়কে সামলে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে।
জীবন কতটা সুন্দর হবে, তা নির্ভর করে মানুষের অভ্যাস ও তার সঠিক পদক্ষেপের উপরেই। রোজকার জীবনের ছোট ছোট কিছু অভ্যাস জীবনকে আরও সুন্দর করে তুলতে পারে। এখন দেখে নেওয়া যাক, কী কী অভ্যাস রপ্ত করতে পারলে এক মাসের মধ্যেই নিজেকে আমূল বদলে ফেলতে পারবেন। নিজের জীবনকে সুন্দর করে গড়েপিঠেও নিতে পারবেন।
১. মেলামেশা বাড়াতে হবে
কেউ পাত্তা দিচ্ছে না বা ডাকে সাড়া দিচ্ছে না, এ সব ভেবে দমে গেলে চলবে না। চেষ্টা করতে হবে মেলামেশা বাড়ানোর। পারলে অচেনা মানুষজনের সঙ্গেও আলাপ পরিচয় করুন। দেখবেন, ধীরে ধীরে মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে কাজ করার ক্ষমতা বাড়ছে। লজ্জা, সঙ্কোচ, দ্বিধা, দ্বন্দ্ব কাটছে। কাজেকর্মেও অনেক বেশি উৎসাহী হয়ে উঠছেন।
২. রোজনামচা লিখে রাখুন
লেখা অনেকেরই আসে না। সবাই লেখক নন। কিন্তু নিজের মনের কথা সহজ ভাষায় লেখাই যায়। ডায়েরি লেখার অভ্যাস থাকলে খুব ভাল। না থাকলে, অভ্যাস করুন রোজনামচা লেখার। কাজে যদি প্রশংসা পান তা’ও লিখুন, হতাশা এলেও লিখে রাখুন। নিজের দরকারি কোনও কথা, পেশা সংক্রান্ত বিষয় বা পরিবারের কথা, যাই হোক না কেন, কয়েক লাইন লেখার অভ্যাস মনঃসংযোগ বাড়াবে।
৩. লক্ষ্য স্থির করুন আজ থেকেই
লক্ষ্য স্থির না করলে জীবনে উন্নতি হবে না। একটা লক্ষ্য ধরে এগোতেই হবে। সেই মতো প্রতি দিনের কাজ গোছাতে হবে। কোনও কাজই কাল করব বলে ফেলে রাখা চলবে না। কাজ শেষ করার অভ্যাস করতেই হবে। কোন কাজের গুরুত্ব বেশি, সেটি নিজেকেই ঠিক করতে হবে। সময় নষ্ট করার বদলে গুরুত্ব বিচার করে কাজকেও ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। তা হলেই লক্ষ্যের পথ মসৃণ হবে। সময়ের গুরুত্ব বোঝার মানসিকতা তৈরি হবে।
৫. দায়িত্ব নিতে হবে
নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে দায়িত্ব নিতে হবে। মনোবিদেরা বলেন, দায়িত্ব নিয়ে কোনও কাজ করার অভ্যাস তৈরি হলে আত্মবিশ্বাসও বাড়ে। নিজের থেকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিকতা তৈরি হয়। খারাপ ও ভুলের পার্থক্য বোঝা অনেক সহজ হয়ে যায়।
৬. হঠকারিতা ভাল নয়
ভাল খবর হোক বা খারাপ, শোনার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তেজিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়। হঠকারিতা ভুল পথে ঠেলে দেয়, অনেক সময়েই। ধীরে সুস্থে মাথা ঠান্ডা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া ভাল। নিজেকে আগে প্রশ্ন করতে হবে, কেন এমন হল বা কী হতে চলেছে? কিছু ক্ষণের ভাবনাচিন্তা থেকেই হয়তো বড় জটিলতার সহজ সমাধান বার হয়ে আসতে পারে।
৭. অনুকরণ নয়
পেশা আর ব্যক্তিগত জীবনকে আলাদা রাখতেই হবে। প্রতি দিন আমাদের চারপাশে যাঁরা থাকেন, তাঁদের প্রভাব মনে ছাপ রাখেই। তবে কাউকে অনুকরণ করলে কখনওই নিজের প্রত্যাশা পূরণ হয় না। ফলে এক সময় হতাশা, অবসাদ ঘিরে ধরে। মানসিক চাপও বাড়ে। তাই নিজের আলাদা পরিচয় তৈরির চেষ্টা করা ভাল।
৮. ‘না’ বলার অভ্যাস রপ্ত করতে হবে
জীবনে এমন অনেক পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে ‘না’ বলাটাই হয়তো বাঞ্ছনীয়। সবেতেই ‘হ্যাঁ’ বলে মাথা নাড়লে খুব মুশকিল। সম্পর্ক হোক বা প্রতি দিনের কাজ, গুরুত্ব বুঝে তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কে কী ভাববে, কার কাছে অপ্রিয় হবেন, এ সব মনে না করে, প্রয়োজন মনে করলে সরাসরি ‘না’ বলুন। এই অভ্যাস তৈরি করতেই হবে।
৯. নিজের চাহিদার খেয়াল রাখছেন তো?
ব্যস্ততা যতই থাক, নিজের ছোট ছোট চাহিদার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সঠিক সময় খাওয়া, সঠিক সময়ে ঘুম। শরীরচর্চার অভ্যাস থাকলে তার জন্য সময় বার করা জরুরি। নিজের শখ বা ভাল লাগার কাজ করাটাও জরুরি। রোজের ব্যস্ততায় নিজের ভাল লাগার কাজগুলি না করলে একঘেয়েমি আসবে অল্প দিনেই। দুশ্চিন্তাও ভোগাবে।
১০. নিজেকে প্রশ্ন করুন
সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রতি দিন নিজেকে এই প্রশ্ন করুন, “আজ কী ভাবে নিজের জীবনে বদল আনব?” এই অভ্যাস তৈরি হলে আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। প্রতি দিন যদি নতুন নতুন কাজে নিজেকেই চমকে দেওয়া যায়, তা হলেই বুঝবেন, লক্ষ্যের পথে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন আপনি।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। জীবনে পরিবর্তন আনতে হলে, কে কী পদক্ষেপ করবেন বা করতে পারেন, তা তাঁর মানসিকতা বা পরিবেশ বা পরিস্থিতির উপর অনেকটাই নির্ভর করে। তাঁকে যদি চরম হতাশা গ্রাস করে বা তাঁর মনে ঘোর অবসাদ নেমে আসে, তা হলে দ্রুত মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy