প্যানক্রিয়াটাইটিসের ঝুঁকি কাদের বেশি? ছবি: সংগৃহীত।
পেটে ব্যথা যে কোনও কারণেই হতে পারে। তবে ঘন ঘন এই সমস্যা দেখা দিলে অবহেলা না করাই ভাল। পেটে ব্যথার সঙ্গে বমি এই দুই লক্ষণ আরও মারাত্মক। অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিসের অন্যতম উপসর্গ হল এই দুই লক্ষণ। প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের মূল কাজ হল পাচক রস বা এনজ়াইম তৈরি করা। এই পাচক রস আমাদের খাবার হজম করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন বা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনও তৈরি করে। সাধারণত পাচক রস বা এনজ়াইমস তৈরি হওয়ার পরে তা অগ্ন্যাাশয়ে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। অন্ত্রে পৌঁছনোর পরেই সেগুলি সক্রিয় হয়ে খাবার হজমে সাহায্য করে। কিন্তু কোনও কারণে যদি অগ্ন্যাাশয়ে থাকা অবস্থাতেই এনজ়াইমগুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন তা প্যানক্রিয়াস গ্ল্যান্ডকেই হজম করতে শুরু করে। ফলে অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ শুরু হয়, এই প্রদাহকেই প্যানক্রিয়াটাইটিস বলে। প্যানক্রিয়াসে প্রদাহ দু’ধরনের হতে পারে। একটি হল হঠাৎ প্রদাহ বা অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস। দ্বিতীয়টি হল ধীর গতির প্রদাহ বা ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস।
কী কী কারণ এই রোগ হয়?
নানা কারণেই অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। মূলত পিত্তনালিতে পাথর জমলে কিংবা অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে এই রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। এ ছাড়াও শরীরে লিপিড বা ক্যালশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অগ্ন্যাশয়ে কোনও কারণে চোট-আঘাত লাগলেও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধের কারণে, ভাইরাল সংক্রমণ থেকে এবং কিছু কিছু অস্ত্রোপচারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও এই রোগ হতে পারে। পরিবারে কারও এই রোগ থাকলেও জিনগত কারণেও অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস হতে পারে।
অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিসের তিনটি ভাগ রয়েছে। মাইল্ড, মডারেট এবং সিভিয়র। ৯০ শতাংশ রোগীই মাইল্ড বা মডারেটের আওতায় পড়েন। তবে ১০ শতাংশ রোগীর সিভিয়র প্যানক্রিয়াটাইটিস হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রেই প্রাণনাশের আশঙ্কা বেশি।
শরীরে কোন কোন লক্ষণ দেখে সতর্ক হবেন?
অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিসের ক্ষেত্রে পেটের যন্ত্রণা ক্রমশ গোটা পেট-সহ শিরদাঁড়ায় ছড়িয়ে পড়ে। বুকেও এই ব্যথা হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে আবার তীব্র যন্ত্রণার সঙ্গে বমিও হয়। ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিসের ক্ষেত্রে ঘন ঘন পেটে ব্যথা হয়। খাবার হজম হয় না, ওজন কমতে থাকে। ডায়াবিটিস হতে পারে। অন্ত্রে এনজ়াইম পৌঁছয় না বলে, প্রোটিন বা ফ্যাটজাতীয় খাবার খেলেই পেটের সমস্যা শুরু হয়। বার বার মলের বেগ আসে।
কী কী সাবধানতা নেওয়া জরুরি?
ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিসে আক্রান্ত হলে চর্বিজাতীয় খাবার, যেমন ডিম, দুধ, রেড মিট এড়িয়ে চলতে হবে। তেল জাতীয় খাবার বা ভাজাভুজিও চলবে না। ধূমপান এবং মদ্যপানও অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। নিঃসন্দেহে প্যানক্রিয়াটাইটিস জটিল একটি রোগ। তবে ঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে এবং কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এই রোগ সেরে যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy