শ্বেতি কেন হয়? ছবি: শাটারস্টক
শ্বেতি মারণরোগ নয়। তবে এক বার শরীরে বাসা বাঁধলে, তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগের ফলে শরীরের যতটা না ক্ষতি হয়, তার থেকেও বেশি মানসিক ক্ষতি হয়।
আমাদের ত্বকের রং তৈরিতে সাহায্য করে মেলানোসাইট কোষে থাকা মেলানিন নামে একটি ধরনের রঞ্জক পদার্থ। অনেক সময়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বা অ্যান্টিবডি ত্বকের রং তৈরি করা এই কোষগুলিকে শত্রু মনে করে ধ্বংস করতে থাকে। এবং ত্বক তার স্বাভাবিক রং হারাতে থাকে। এরই ফল শ্বেতি। এতে শুধু ত্বকই নয়, অনেক সময়ে চুল এবং রোমও সাদা হয়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে চোখের মণির উপরেও। শ্বেতি নিয়ে সাধারণের মধ্যে অনেক ভুল ধারণা আছে, জেনে নিন সেগুলি কী কী।
শ্বেতি ছোঁয়াচে: এই ধারণা একেবারেই ভুল। কাউকে ছুঁলে কিংবা তাঁর ব্যবহৃত কোনও জিনিস ব্যবহার করলে শ্বেতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। জিনগত কারণে ও পরিবেশগত কারণে এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধে।
পরিচ্ছন্নতার অভাবে শ্বেতি হয়: শ্বেতির সঙ্গে পরিচ্ছন্ন থাকা বা না থাকার কোনও সম্পর্ক নেই। এটি একটি ‘অটোইমিউন ডিজ়অর্ডার’। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকেন বলেই শ্বেতি হবে না, এমন ধারণা রাখা ভুল।
গায়ের রং গাঢ় হলে শ্বেতি হয়: যাঁদের চামড়ার রং বেশি গাঢ়, তাঁদেরই শ্বেতি হয়? এমন ধারণাও ভুল। গায়ের রং খুব ফর্সা হলেও কিন্তু শ্বেতি হতে পারে। গায়ের রঙের সঙ্গে এই রোগের কোনও সম্পর্ক নেই।
সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির প্রভাবে শ্বেতি হয়: এই ধারণাও ভুল। অতিবেগনি রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে, তবে শ্বেতির জন্য দায়ী নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শ্বেতি হয় অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহারের কারণে। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত প্রসাধনীগুলিতে ইদানীং অধিক মাত্রায় রাসায়নিকের ব্যবহার হচ্ছে। রোজের জীবনে এ সব রাসায়নিক সকলের ত্বক সহ্য করতে পারে না। সেখান থেকেই শুরু হয় সমস্যা।
শ্বেতির কোনও চিকিৎসা নেই: অনেকের ধারণা, এই রোগের চিকিৎসা হয় না। তবে ওষুধ ও অস্ত্রোপচার দু’ভাবেই এ রোগের চিকিৎসা হতে পারে। ত্বকের স্বাভাবিক রং ফিরিয়ে আনতে চিকিৎসকেরা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ও ক্রিম দেন। কিছু ক্ষেত্রে ফোটোকেমো থেরাপিও করানো হয় বা আক্রান্ত অংশে ওষুধ লাগিয়ে রোদে দাঁড়িয়ে অতিবেগনি রশ্মিও গায়ে লাগানোর কথা বলে থাকেন চিকিৎসকেরা। ওষুধ খাওয়ার পরেও যদি রোগটি ঠোঁট ও আঙুলের ডগায় ছড়িয়ে যায়, তখন চিকিৎসকেরা স্কিন গ্রাফ্টিং করার সিদ্ধান্ত নেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy