Advertisement
E-Paper

নিমেষে চেটেপুটে সাফ থালা! দ্রুত খাওয়ার ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করলেন বিজ্ঞানীরা, বেঁধে দিলেন সময়ও

বিজ্ঞানীরা খাওয়ার একটা সময় বেঁধে দিয়েছেন। তাঁর বলছেন, ‘‘প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ বা নৈশভোজের মতো খাবার নিদেনপক্ষে ২০ মিনিট ধরে খাওয়া উচিত। ৩০ মিনিট হলেও আপত্তি নেই। বরং সেটা ভাল।’’

ধীরে বা দ্রুত খাওয়া— দুই-ই দীর্ঘ দিনের অভ্যাসের ব্যাপার।

ধীরে বা দ্রুত খাওয়া— দুই-ই দীর্ঘ দিনের অভ্যাসের ব্যাপার। ছবি : সংগৃহীত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:২২
Share
Save

খাবারের থালা নিয়ে ঘণ্টাখানেক কাটিয়ে দেন কেউ কেউ। আবার কারও পাতে খাবার পড়তে পায় না। পরিবেশন করার মিনিট কয়েকের মধ্যেই থালা চেটেপুটে সাফ। যাঁদের ব্যস্ত জীবন, তাঁদের কাছে অবশ্য ওই দ্বিতীয় ধরনের খাওয়াদাওয়ার অভ্যাসই সুবিধাজনক। কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্যও কি তা ভাল? বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্রুত খেলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। যার মধ্যে অন্যতম, প্রয়োজনের বেশি খেয়ে ফেলা ও তার ফলে ওজন বৃদ্ধি এবং হজমের গন্ডগোল।

কতটা সময় নিয়ে খাওয়া উচিত?

বিজ্ঞানীরা তার একটা সময় বেঁধে দিয়েছেন। তাঁর বলছেন, ‘‘প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ বা নৈশভোজের মতো খাবার নিদেনপক্ষে ২০ মিনিট ধরে খাওয়া উচিত। ৩০ মিনিট হলেও আপত্তি নেই। বরং সেটা ভাল। একটি খাবার শেষ করতে যদি ২০ মিনিটের কম সময় লাগে, তবে বুঝতে হবে, আপনি দ্রুত খাচ্ছেন!’’

কেন ২০ মিনিট?

আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের বিহেভিয়ারাল হেল্থ বিভাগের গবেষক লেসলি হেইনবার্গ বলছেন, ‘‘২০ মিনিট সময় নেওয়া উচিত, তার কারণ পাকস্থলীর সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগ স্থাপন করতে সময় লাগে ২০ মিনিট। নানা রকম হরমোনের মাধ্যমে পাকস্থলী মস্তিষ্ককে জানান দিলে মস্তিষ্ক বুঝতে পারে যে, পেট ভর্তি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে যাঁরা দ্রুত খান এবং তাঁদের অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলার ঝুঁকি থাকে।’’

আর কী সমস্যা হতে পারে?

যাঁরা দ্রুত খান, তাঁরা প্রথমত, খাবার যথাযথ ভাবে চিবিয়ে খান না। দ্বিতীয়ত, হেইনবার্গ বলছেন, ‘‘খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের মুখের ভিতর হাওয়াও ঢোকে।’’ উভয় কারণেই হজমের সমস্যা, পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে। হেইনবার্গ জানাচ্ছেন, কিছু কিছু গবেষণায় এমনও বলা হয়েছে যে, ‘‘যাঁরা দ্রুত খান, তাঁদের মোটা হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তুলনায় যাঁরা ধীরে খান, তাঁদের ওই ঝুঁকি কম।’’

কী ভাবে খাওয়ার গতি কমাবেন?

ধীরে বা দ্রুত খাওয়া— দুই-ই দীর্ঘ দিনের অভ্যাসের ব্যাপার। যা চট করে বদলে ফেলা যায় না। তবে চেষ্টা করলে এবং মন দিলে অভ্যাস বদলাতেও পারে।

১। খাওয়ার সময় টিভি বা মোবাইলে সিনেমা দেখা বন্ধ করুন। তাতে দ্রুত খাওয়া এবং বেশি খাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

২। খাওয়ার সময় খাবারের গন্ধ এবং স্বাদ অনুভব করে ভাল ভাবে চিবিয়ে খান। তার সুপ্রভাব পড়বে হজমেও। কারণ গন্ধ এবং স্বাদ আমাদের প্রয়োজনীয় লালা নিঃসরণে সাহায্য করে। এ ছাড়া খাওয়ার সময় খাওয়াতেই পুরোপুরি মন দিলে আপনি বুঝবেন, ঠিত কতখানি খাওয়ার পরে থামা দরকার।

৩। ব্রিটেনের সাইকোলজিক্যাল সোসাইটির ক্লিনি্ক্যাল সাইকোলজিস্ট হেলেন ম্যাকার্থি বলছেন, ‘‘সবচেয়ে সহজ একটি উপায় হল ছোট ছোট গ্রাসে খাওয়া। দরকার হলে তার জন্য ছোট চামচ ব্যবহার করুন। বা রুটি ছোট ছোট টুকরোয় ছিঁড়ে খান’’।

৪। খাওয়ার গতি কমানোর আরও একটি পরামর্শ দিয়েছেন ম্যাকার্থি। তিনি বলছেন, ‘‘যদি ডান হাতে চামচ ধরার অভ্যাস থাকে, তবে বাঁ হাতে চামচ দিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন। তাতেও খাওয়ার গতি কমবে।’’ যদিও ম্যাকার্থির এই পরামর্শ ভারতীয়দের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য না-ও মনে হতে পারে। কারণ ভারতীয় সংস্কৃতিতে সাধারণত ডান হাতকেই খাওয়ার হাত বলে মনে করা হয়।

৫। ফাস্টফুড দ্রুত খাওয়া হয়ে যায়, কারণ ফাস্টফুড নরম হয়। বদলে সব্জি, ফল, ভাল ভাবে রান্না করা খাবার খেতে সময় লাগে। ম্যাকআর্থি জানাচ্ছেন, তাঁর এক রোগী, যিনি চিপ্‌স খেতে অত্যন্ত ভালবাসতেন, তাঁকে ধীরে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, প্রত্যেকটি চিপ আলাদা আলাদা ভাবে মুখে নিয়ে ধীরে সুস্থে চিবিয়ে খেতে। সেই রোগী চিপ্‌স খাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছেন। ম্যাকআর্থি বলছেন, ‘‘আমাকে সেই ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘ ক্ষণ ধরে চিপ্‌স চিবোতে চিবোতে তাঁর মনে হয়েছিল, মুখে কোনও রাসায়নিক নিয়ে চিবোচ্ছেন।’’

Slow Eating Fast Eating Disadvantages

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}