বয়সকালে অসুখবিসুখ লেগেই চলে। অসুস্থ শরীরে খাবারের প্রতি রুচি চলে যায়। কিন্তু সুস্থ থাকতে সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে বয়স ৬০ পেরোলেই শরীরে বাড়তি শক্তির প্রয়োজন হয়। এই সময়ে ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ খাবারের প্রয়োজন।
পুষ্টিবিদ সুবর্ণা রায়চৌধুরী বললেন, ‘‘সহজে হজম করতে পারবেন, এমন খাবার বাছুন। যেহেতু একটা বয়সের পর থেকে হজম ক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে, তাই সারাদিনের খাবার ছোট ছোট ভাগ করতে হবে। দীর্ঘ দিন রোগভোগের ফলে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। শরীরের খুব প্রয়োজনীয় মিনারেলের (সোডিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি) অভাব দেখা দেয়। তাই ব্যালান্সড ডায়েটের দিকেও নজর রাখতে হবে।’’
ব্লাড প্রেসার ও সুগারের কারণে অনেকেই পাতে চিনি ও নুন একেবারেই বাদ দেন। পুষ্টিবদদের মতে, রোজের খাদ্যতালিকায় ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম ফল রাখতে হবে। ফল চিবোতে ভাল না লাগলে বা শারীরিক অসুবিধের কারণে সম্ভব না হলে ফলের রস খান। সুগার না থাকলে চিনি যোগ করা যেতে পারে।
কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ঠিকমতো শরীরে না পৌঁছলে এনার্জিও পাবেন না। তাই দীর্ঘ দিন অসুস্থ হলে শক্ত খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি হয়। এই সময় তরল খাবার বয়স্কদের জন্য উপযোগী। যেমন, রোজকার পাতে নরম সুজি, সিদ্ধ সবজি দিয়ে ডালিয়া রাখুন। দই না খেলে চাইলে লস্যি বানিয়ে দিন। ভাত ডাল মাছ সবজি খেতে না পারলে ফেনাভাত চলতে পারে। ভাত, ডাল, সবজি দিয়ে একসঙ্গে খিচুড়ি রেঁধে মিক্সিতে পেস্ট করে খাওয়ানো যেতে পারে। সঙ্গে চিকেনও পেস্ট করে দিন। সুগার না থাকলে অল্প পরিমাণে চিনি দিয়ে চা চলতে পারে।
৭০-এর কাছাকাছি বয়স হলেও নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস জাতীয় রোগের প্রকোপ দেখা যায়। এতে খাওয়ার প্রতি অনীহা তৈরি হয়, ওজনের ভারসাম্যও নষ্ট হয়। সুবর্ণা জানালেন, সপ্তাহে তিনদিন গোটা ডিম খান। তবে সকলকে ডিম দেওয়া যায় না। তাঁরা সপ্তাহে চারদিন ডিমের সাদা অংশ খাবেন। হজম করতে পারলে ক্রিম ছাড়া দুধের ছানা খেতে পারেন। সঙ্গে চিনি যোগ করুন।
রোজকার পাতে কী রাখবেন?
সুস্থ হওয়ার পর-পরই কোনও খাবার চিবিয়ে খেতে ইচ্ছে করে না। তাই জলখাবারে পাতলা সুজি, ডালিয়া, মুয়েসলি, কর্নফ্লেক্স খেতে পারেন। ডালিয়ার মধ্যে আনাজ মেশানো যায়। বয়স্কদের মধ্যে অনেকেরই দুধ সহ্য হয় না। তাই দই দিয়ে কর্নফ্লেক্স, ওটস খেতে পারেন।
বেলার দিকে ফলের রস বা ডাবের জল বা একবাটি সুপ খান।
দুপুরের খাবারে ভাতের প্রতি রুচি চলে গেলে গলানো সিদ্ধ ভাত বা ডালিয়া খেতে পারেন। বেশির ভাগ বয়স্ককেই দেখা যায়, মাছ বা মাংস খেতে চাইছেন না। তার পরিপূরক দই, পনির বা ছানার তরকারি রাখুন পাতে। প্রয়োজনে দই ভাতও চলতে পারে। ডালের মধ্যে মুগ বা মুসুর ডাল সহজে হজম হয়। তবে কখনওই সয়াবিন, রাজমা, ছোলার ডালের ছাতু খাবেন না। এগুলো সহজে হজম হয় না। চিকেন খেতে না চাইলে চিকেন সুপ রাখুন।
বিকেলে অনেকেই কিছু খেতে চান না। তাই এই সময় কোনও ভারী খাবার না খেয়ে লস্যি, চিকেন সুপ রাখতে পারেন। সঙ্গে একটা-দু’টো বিস্কিট।।
রাতে দুধ রুটি দিতে পারেন। দুধে অ্যালার্জি থাকলে ডাল-রুটি খেতে দিন। ফুলকপি, বাঁধাকপি ছাড়া যে কোনও আনাজ যেমন পেঁপে, লাউ, ঝিঙে, কুমড়ো, পটল দেওয়া যেতে পারে। কিছুই খেতে না ভাল লাগলে পর্যাপ্ত প্রোটিন পেতে রাতে দই দিতে পারেন, তবে দেখে নিতে হবে তা ঠান্ডা যেন না হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy