অল্পেই ক্লান্তি, আচমকাই বাড়ছে ওজন। অকালে ঝরছে চুল, শুকনো খসখসে ত্বক। সেই সঙ্গেই বুক ধড়ফড়, অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাচ্ছে হৃৎস্পন্দন। ছোটখাটো শারীরিক সমস্যাগুলি আমরা প্রায়ই এড়িয়ে যাই। অথচ প্রতিটা লক্ষণের পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যা। সময় থাকতে থাইরয়েডের চিকিৎসা না করালে বাড়াবাড়ি হতে পারে। তাই লক্ষণ চিনে আগে থেকেই জীবনযাপনে বদল আনতে হবে।

থাইরয়েড কেন হয়?

থাইরয়েড একটি গ্রন্থি, যা আমাদের গলায় শ্বাসনালীর সামনের দিকে থাকে। এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোন শরীরের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন বিপাকক্রিয়া, শিশুদের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা, বুদ্ধির বিকাশ, বয়ঃসন্ধির লক্ষণ, মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুচক্র, গর্ভধারণ—এগুলি নির্ভর করে থাইরয়েড গ্রন্থির থেকে নিঃসৃত হরমোনের উপরে। থাইরয়েড হরমোন দু’প্রকার টি-থ্রি ও টি-ফোর। আমাদের শরীরের রক্তে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় এই হরমোন থাকে। কোনও কারণে এই হরমোনগুলি বেড়ে গেলে বা কমে গেলে তখন বলা হয় থাইরয়েড হয়েছে।

রক্তে থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোনের পরিমাণ যদি বেড়ে যায়, তখন তাকে বলে ‘হাইপারথাইরয়েডিজম’ এবং হরমোনের পরিমাণ কমে গেলে বলা হয় ‘হাইপোথাইরয়েডিজম’।

থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে থাকবে কী ভাবে?

১) থাইরয়েডের কারণে যদি ওজন বাড়তে থাকে, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে।

২) খাওয়াদাওয়ায় বিশেষ নজর দিতে হবে। সুষম খাবার খেতে হবে। সবুজ সব্জি, শাকপাতা, দানাশস্য যেমন ঢেঁকি ছাঁটা চাল, ডালিয়া, ওট্‌স খেতে পারেন।

৩) টাটকা মাংস, কাজু, গমের আটা, মাছ, পোলট্রির ডিমে থাকে আয়রন। এগুলি খাওয়া ভাল।

৪) ভিটামিন সি আছে এমন ফল খান, যেমন লেবু, টম্যাটো।

৫) নিয়মিত শরীরচর্চা করা খুব জরুরি।

কী কী খাবেন না?

১) থাইরয়েড বেড়ে গেলে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার যেমন পনির, চিজ ডায়েট থেকে বাদ দিন।

২) বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি, ছোলা জাতীয় খাবার থাইরয়েড বাড়িয়ে দেয়।

৩) সর্ষে, মুলো, রাঙা আলু, চিনে বাদাম এড়িয়ে চলাই ভাল।

প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। থাইরয়েড ধরা পড়ার পর ডায়েটে বদল আনতে হলে অবশ্যই চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করুন।