উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে প্রতিনিয়তই নানা রকম ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু কেবল ওষুধ খেলেই কি সমস্যার নিরসন হয়? তার জন্য খাওয়াদাওয়াতেও বদল আনা জরুরি। পুষ্টিবিদেরা বলেন, সোডিয়াম, স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং চিনি খাওয়ার পরিমাণ একেবারে সীমিত করে, রোজের ডায়েটে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে রাখলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তার জন্য নিজের বুদ্ধি অনুযায়ী কিংবা অন্তর্জালের উপর ভরসা করে ডায়েট করলে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে।
‘নিউট্রিশন অ্যান্ড হেল্থ’ জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বীজ খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, রোজের ডায়েটে তিন রকম বীজ রাখলে, শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে পারে।
‘দ্য জার্নাল অফ নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, তিসি বা ‘ফ্ল্যাক্স সিড’ ভাল মানের ফ্যাট, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, প্রোটিন ও ফাইবারে ভরপুর। তিসির বীজে আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড আর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। তিসির বীজে ফাইবার থাকে। ডায়াবেটিকরাও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই বীজ খেতে পারেন। ‘ফ্ল্যাক্স সিড’ খেতে গেলে বীজ শুকনো খোলায় ভেজে নেওয়া জরুরি। অনেকে ‘রোস্ট’ করার পরে গুঁড়িয়ে নেন তিসি। তিসির বীজ সরাসরি খেলে হজম হতে সময় নেয়, তাই গুঁড়ো করে খাওয়াই শ্রেয়।
আরও পড়ুন:
কুমড়োর বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম আর জ়িঙ্ক। এতে উচ্চ মানের ফাইবার আছে, যা হজমশক্তি উন্নত করে। কুমড়োর বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, সালফার, জ়িঙ্ক, ভিটামিন এ, বি আর কে, যা হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।রক্তে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। তবে কুমড়োর বীজ রোজ খেলে তা পরিমিতই খেতে হবে।
রক্তচাপের সমস্যা কমাতে পারে সূর্যমুখীর বীজও। এতে রয়েছে স্যাচুরেটেড, পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন ই, নিয়াসিন, ফোলেট, আয়রন, ম্যাগনেশয়াম, জ়িঙ্ক, কপার, ম্যাঙ্গানিজ়, সেলেনিয়ামের মতো খনিজ, যা শরীরে পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে পারে। সূর্যমুখীর বীজে থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। ‘পলি আনস্যাচুরেটেড’ ও ‘মনো আনস্যাচুরেটেড’ ফ্যাটের অন্যতম উৎস এই বীজ। এই ধরনের ফ্যাট শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর কোলেস্টরেলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে সূর্যমুখীর বীজ খেলে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে, হার্টও ভাল থাকে।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। সকলের শরীর এক রকম নয়। তাই বীজ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উচিত। বিশেষত কিডনি, লিভারের সমস্যা থাকলে বীজ না খাওয়াই ভাল।