তেমন কিছুই পরিশ্রম হচ্ছে না। কিন্তু কাজ থেকে ফিরে এত ক্লান্ত লাগছে যে, পরের দিন কী পরবেন, সেই জামাটুকু আলমারি থেকে বার করতে ইচ্ছে করছে না। ক্লান্তির চোটে বাড়ি ফিরে রান্না করতেও ইচ্ছে করছে না। বেশির ভাগ দিন অনলাইনে অর্ডার করে কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে। বন্ধুরা অবশ্য বলেছেন, এ সবই নাকি আবহাওয়ার দোষ! গরমে ঘুম কম হচ্ছে। খেতে ইচ্ছে করছে না। পরিপাকতন্ত্রটিও মাঝেমধ্যে বিগড়ে যাচ্ছে। এই সবের কারণেই হয়তো বেশি ক্লান্ত লাগছে। তবে, চিকিৎসকেরা বলছেন অন্য কথা। মেয়েদের এই অতিরিক্ত ক্লান্তির পিছনে কিন্তু ‘পিসিওএস’-এর ভূমিকা থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:
‘পিসিওএস’ কী?
অনিয়মিত ঋতুস্রাব, বাড়তি ওজন, মুখে রোমের আধিক্য—পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম (পিসিওএস) আছে, এমন মহিলাদের কাছে এই উপসর্গগুলি ভীষণ চেনা। এই অসুখে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যায়। এমনকি, ডিম্বস্ফোটনের ক্ষেত্রেও এই অসুখের প্রভাব পড়ে। ক্রমেই বন্ধ্যত্ব ডেকে আনতে পারে এই সমস্যা।
‘পিসিওএস’-এর সঙ্গে ক্লান্তির সম্পর্ক কোথায়?
এই ‘পিসিওএস’ বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম হলে হরমোনে মারাত্মক হেরফের হয়। ফলে শারীরবৃত্তীয় নানা রকম কাজকর্মে তার প্রভাব পড়ে। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে যে হরমোন ক্ষরিত হয়, তা বিপাকক্রিয়া ভাল রাখতে সাহায্য করে। কাজ করার ক্ষমতা বা এনার্জির জন্যেও এই হরমোনের প্রয়োজন। সেই পরিমাণ কমে গেলে ক্লান্ত বোধ করা স্বাভাবিক। আবার, হরমোনের হেরফেরে ঘুমও কম হয়। রাতে অন্তত পক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে ক্লান্ত লাগতেই পারে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ টেস্টোস্টেরন এবং কর্টিজ়ল হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে তোলে। তার ফলেও দুর্বল লাগতে পারে।

‘পিসিওএস’ বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম হলে হরমোনে মারাত্মক হেরফের হয়। ছবি: সংগৃহীত।
সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখবেন কী করে?
কোনও অবস্থাতেই মানসিক চাপ বাড়তে দেওয়া যাবে না। উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে গান শুনতে পারেন। সকালে হালকা ব্যায়াম বা যোগাভ্যাস করতে পারেন। বাড়িতে পোষ্য থাকলে তার সঙ্গে খেলতেও পারেন। সন্ধ্যার পর অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপান করা যাবে না। পরিস্থিতি জটিল হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।